সিরাজগঞ্জে আওয়ামী লীগ-বিএনপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উভয় দলের মধ্যে ধাওয়া, পাল্টা-ধাওয়া, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে সদর উপজেলার কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের পাইকপাড়া বাজারে ওই ঘটনা ঘটে। ওই সময় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। ১৩টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয় বলে জানা গেছে।
এদিকে, সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শহর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর শাহরিয়ার শিপু ও জেলা যুবদল সভাপতি মির্জা আব্দুল জাব্বার বাবু এবং কামারখন্দ সরকারী হাজী কোরব আলী কলেজ শাখার ছাত্রদল আহ্বায়ক শামিম রেজাসহ ৩৯ জন নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। অপরদিকে, বিএনপির নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে শহরের বাজার ষ্টেশন মুক্তির সোপানে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে জেলা আওয়ামী লীগ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সদর উপজেলার কালিয়াহরিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শান্তি সমাবেশের প্রস্ততির জন্য পাইকপাড়া মোড়ে সমবেত হয়। এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় পদযাত্রা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে যাওয়ার সময় উভয় দলের নেতাকর্মীরা মুখোমুখি হলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় সড়কের ওপর থাকা ১৩টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
কালিয়াহরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সবুর সেখ বলেন, দেশব্যাপী বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বিএনপি পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটায়। এতে ১০ থেকে ১৫ জন হয়েছেন।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির জানান, দুই দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
সিরাজগঞ্জ-২ (সদর ও কামারখন্দ) আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত মুন্না জানান, দলীয় নেতাকর্মীরা সড়কের ওপর ছিলো। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা এসে অতর্কিত হামলা করে। এ সময় তারা ১২টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে।
অপরদিকে, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচিকে বিঘ্ন ঘটাতে পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগ বরাবরের মতো এবারও আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। এমনকি, আমরা যেন রাজনৈতিক মাঠ ছেড়ে পালিয়ে থাকি সেজন্য মামলা, হামলা ও পুলিশ দিয়ে নির্যাতনের পাঁয়তারা চলছে। হোন্ডায় অগ্নিসংযোগও তাদেরই কারসাজি।’
সিরাজগঞ্জ সদর থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) সুমন চন্দ্র দাস বলেন, ‘বিএনপির নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসী এবং মোটারসাইকেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় স্থানীয়ভাবে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল শনিবার বিকেলে বলেন, ‘সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগ এবং জনসাধারণের জানমালের ক্ষতিসাধনের ঘটনায় শহর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর শাহরিয়ার শিপু ও জেলা যুবদল সভাপতি মির্জা আব্দুল জাব্বার বাবু এবং কামারখন্দ সরকারি হাজী কোরব আলী কলেজ শাখার ছাত্রদল আহ্বায়ক শামিম রেজাসহ ৩৯ জন নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।’