নতুন পদ্ধতিতে রেলের টিকিট কাটা কিছুটা ভোগান্তি, তারপরও খুশি যাত্রীরা

বৃহস্পতিবার, মার্চ ২, ২০২৩
সকালে কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে টিকিট কাউন্টারের সামনে বিপুলসংখ্যক মানুষের ভিড় দেখা যায়। বেশির ভাগ মানুষ জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে নিয়ে আসেন। অনেকে পরিচয়পত্রের ফটোকপি এনেছিলেন। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ কীভাবে নিবন্ধন করতে হবে তা বুঝতে পারছিলেন না। এর মধ্যে এক কোনায় একজন মুঠোফোনে এসএমএসের মাধ্যমে নিবন্ধনের নিয়ম বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন। তাঁকে ঘিরে ধরেন শ খানেক মানুষ।
লিটন মিয়া নামের এক ব্যক্তি জানান, তিনি দুইবারের চেষ্টায় এসএমএস পাঠিয়েছেন; কিন্তু ফিরতি এসএমএসে নিবন্ধন সম্পন্ন হওয়ার তথ্য আসেনি। লিটন বলেন, ফিরতি এসএমএস পেলে তিনি সিরাজগঞ্জের টিকিট কাটবেন।

অনেকে সরাসরি টিকিট কাউন্টারে থাকা কর্মীর কাছে নিজের পরিচয়পত্র দিয়ে টিকিট চাইছিলেন। কিন্তু রেলের কর্মীরা জানিয়ে দেন, আগে নিবন্ধন করতে হবে। তারপর ফোন নম্বর বা জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর কম্পিউটারে প্রবেশ করালে টিকিট কাটা যাবে।

আক্তার ও কবির নামের দুজন  আগেই নিবন্ধন করিয়েছেন।  কবির জানান, তিনি মুঠোফোনে এসএমসের মাধ্যমে নিবন্ধন করেছেন। আর আক্তার বলেন, তাঁর ভাই নিজের মুঠোফোনের নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করিয়েছেন। ওই ফোন নম্বর বলার পর তাঁকে কাউন্টার থেকে টিকিট দেওয়া হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও যাওয়ার জন্য সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কমলাপুর স্টেশনে এসেছিলেন তারিন আক্তার ও তাঁর বোন। তারা দুজনই জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে আসেন; কিন্তু নিবন্ধনে সহায়তার জন্য যে ডেস্ক রয়েছে, সেখানে ভিড়ের কারণে অপেক্ষা করছিলেন। তারিন বলেন, তাঁর বাসা বাসাবোয়। বৌদ্ধমন্দিরের পাশে এক দোকানে নিবন্ধনে সহায়তা করছে। এর বিনিময়ে ৬০ টাকা নিচ্ছে। তারিন বলেন, দোকানদার বলেছেন, একবারই টাকা লাগবে। এ জন্য ৬০ টাকার কমে হবে না। এ জন্য কমলাপুর স্টেশন কাছে বলে এখানে চলে এসেছেন।

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরের ইলিয়াস মিয়ার কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র ও মুঠোফোন কোনোটিই নেই। তাঁকে টিকিটের জন্য কাউন্টার কর্মীর কাছে অনুনয়-বিনয় করতে দেখা যায়। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁর কাছে টিকিট বিক্রি করা হয়নি। ইলিয়াস মিয়া জানান, তিনি ঢাকা থেকে কাপড় কিনে কুলিয়ারচরে নিয়ে বিক্রি করেন। মুঠোফোন ব্যবহার করেন না। তাঁর জন্য ট্রেনের টিকিট কাটা কঠিন হয়ে গেল। বাড়ি গিয়ে পরিবারের অন্য সদস্যের মুঠোফোন দিয়ে নিবন্ধন করার চেষ্টা করবেন।

ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহীসহ বড় স্টেশনগুলোতে একই চিত্র দেখা গেছে। এসব স্টেশনে হেল্প ডেস্কে ভিড় করেন যাত্রীরা। তবে ছোট বা বিভিন্ন জেলা শহরের স্টেশনে এ ডেস্ক ছিল না।