‘ভারতের সাথে আমরা রক্তের রাখি বন্ধনে আবদ্ধ। তাই ভারতের সাথে বৈরি সম্পর্ক রেখে উন্নয়ন সম্ভব নয়। ভারতের সাথে আমাদের একাত্তরের রাখি বন্ধন অটুুট আছে। রক্তের রাখি বন্ধন আমরা ভুলি না, কখনো ভুলতে পারি না।’
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বাংলাদেশ সফররত ভারতীয় সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে এ সব কথা বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
গত ৬ জানুয়ারি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে কলকাতা থেকে ২৫ জন এবং আসাম ও গৌহাটি থেকে ৯ জন সাংবাদিক বাংলাদেশ সফরে আসেন।
কাদের বলেন, ‘ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক খুবই স্মৃতিভরা। আমাদের মহান মুক্তিযুেদ্ধর সময়ে ভারত ছিল বিশ্বস্ত, আশ্রয়দাতা। ভারতের সাথে বৈরি সম্পর্ক রেখে আমাদের উন্নয়ন সম্ভব নয় জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের ভুল-ত্রুটি আছে। তারপরও একটা কথা মনে রাখবেন, বিশ্বাস করি, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার চেয়ে কোনো বিশ্বস্ত বন্ধু আরেকজন আপনাদের নেই। এটা ভারতকে মনে রাখতে হবে। ভারতের সরকারের সাথে আমাদের বন্ধুত্ব। নরেন্দ্র মোদির সরকারের সাথেও আমাদের বন্ধুত্ব আছে। বন্ধুত্বের বিকাশও হচ্ছে।’
আগামী নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্য কতটা কঠিন হবে? ভারতের সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায়। থার্ড টার্ম অতিক্রম করে চতুর্থ টার্মের জন্য আমরা নির্বাচনে যাবো। গতবারের চেয়ে আরেকটু টাফ হবে। একটা ব্যাপার হলো কস্ট অব লিভিং সামাল দিতে ব্যর্থ হলে ডিফিকাল্ট হয়ে যাবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশ্নে দ্বিধা নেই। সবকিছু মিলিয়ে ভারত তো আমাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে না। কিন্তু আমাদের পাশে আছে। আমরা বন্ধু হিসেবে পাশে দেখতে চাই।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ছিটমহল বিনিময়, এখানে এতো শান্তি পূর্ণ ছিল। এটা একটা বিরাট অর্জন, এর কৃতিত্ব আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অবশ্যই দিতে হবে। তারপরও আমাদের কিছু কিছু ব্যাপার আছে, যেমন পানি। এ বিষয়গুলো আছে। সেটা আলোচনার মধ্যে আছে, আমরা বিশ্বাস করি, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে আমরা আমাদের পাওনাটা পাব। যে বিষয়গুলো আছে সেগুলোর সমাধান করতে হলে বন্ধুত্ব রাখতে হবে, আলোচনা করতে হবে। আলোচনা টেবিলে করতে হবে। সেটা আমরা বিশ্বাস করি।’
এ সময়ে সফররত ভারতীয় সাংবাদিকরা বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের প্রশংসা করে বলেন, ‘বাংলাদেশকে যে তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ বলা হয়েছিল, এখন বাংলাদেশ আর তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ নয়। বাংলাদেশের সকল সেক্টরের উন্নয়ন হচ্ছে, যা চোখে পড়ার মত।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. আলী আরাফাত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।