জাতির সংবাদ ডটকম।।
অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ এবং হতাশা বিরাজ করছে।
সরকারি কর্মচারীদের নতুন পে স্কেল দেওয়ার কোন পরিকল্পনা সরকারের এই মুহূর্তে নেই বলে অর্থমন্ত্রী আ খ ম মোস্তফা কামাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে যে কথা বলেছেন এ বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আকতার হোসেন।
গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে আকতার হোসেন বলেন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের জন্য বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট প্রদান সরকারের একটি চলমান প্রক্রিয়া এর সঙ্গে নতুন পে স্কেল প্রদানের কোনো সম্পর্ক নেই। পতি পাঁচ বছর পরপর বিদ্যামান বাজার মূল্যের সঙ্গে সংগতি রেখে নতুন পে স্কেল প্রদান করা হয়। কিন্তু দুঃখজনক সর্বশেষ অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেল ঘোষণার প্রাক্কালে আমরা পুনরায় বৈষম্যের শিকার হলাম। বেতন দ্বিগুণ করার ঘোষণা দিয়ে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করা হলো একদিকে, অন্যদিকে এ ঘোষণার আড়ালে দীর্ঘদিনের প্রচলিত টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড প্রথা বাতিল করে ঠকানো হলো কর্মচারীদের। শুধু তাই নয় অতীতের নিয়মিত ৩টি টাইম স্কেল পেয়ে ১৬ তম বছরে আমাদের বেতন বৃদ্ধির তুলনায় বর্তমান নিয়মে ১৬ তম বছরে আমাদেরকে উল্টো আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন করা হলো। ১৫ সালের পরবর্তী সাত বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও বর্তমান বাজার মূল্যের ঊর্ধ্বগতি কারণে নিম্ন আয়ের কর্মচারীরা অতি কষ্টে জীবনযাপন করছে । বর্তমান বৈষম্য দূরীকরণ এবং কর্মচারী সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারের নিকট বহু আবেদন-নিবেদনের পর দীর্ঘ পাঁচ বছর পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বিষয়টি উপলব্ধি করে বৈষম্য নিরসনের জন্য এবং নতুন পে স্কেল একটি প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন। দুর্ভাগ্য যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ হতে প্রেরিত প্রস্তাবটি আজও আলোর মুখ দেখতে পায়নি। ইতোপূর্বে দীর্ঘদিন যাবৎ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের মধ্যে হতাশা এবং ক্ষোভ বিরাজ করে আসছে। এই অবস্থায় অর্থমন্ত্রীর এমন বক্তব্য সারাদেশের প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ এবং হতাশা আরো বেড়ে গেছে ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্মচারীদের সুখ দুঃখের কথা চিন্তা করে ১৯৭২ সনে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি করেন এবং ১৯৭৩ সনে শত শত বেতন স্কেল কে বিলুপ্ত করে বঙ্গবন্ধু সরকার প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের জন্য ১০টি গ্রেডের একটি সুষম বেতন কাঠামো উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য ১৯৭৫ সানে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তারপর থেকেই কর্মচারীদের ভাগ্যে নেমে আসে অন্ধকারের ছায়া, সেই অন্ধকার থেকে আজ পর্যন্ত কর্মচারীরা আলোর মুখ দেখতে পায়নি। আমরা আশাবাদী ছিলাম হয়তোবা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের অন্ধকার থেকে আলোর মুখ দেখাবে কিন্তু আমাদের দেখা স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেল । তবু আমি আশাবাদী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বিষয়টি নিয়ে অতি তাড়াতাড়ি একটি সিদ্ধান্ত নিবেন । প্রজাতন্ত্রের সাধারণ কর্মচারীদের অবজ্ঞা আর বঞ্চনা অবসানের লক্ষ্যে সকলকে এক হয়ে বৈষম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।