আইএলও সনদ ১৯০ অনুস্বাক্ষর এবং কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন প্রণয়ন শীর্ষক জাতীয় গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত 

মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ৩, ২০২৪

 

শাহজালাল (রাসেল)

আজ ২ ডিসেম্বর ২০২৪, সোমবার রাজধানীর একটি সনামধন্য হোটেলে জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ এর আয়োজনে এ গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

 

আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ উদযাপন উপলক্ষে জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ অয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা সকল প্রকার স্কারানি ও সহিংসতা প্রতিরোধে কর্মক্ষেত্রে আইন প্রণয়ন, প্রয়োগ, আইএলও সনদ ১৯০ অনুস্বাক্ষরসহ সচেতনতা বৃদ্ধির কথা বলেন।

 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ, রূপ প্রতিনিধি ও সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট এর সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিলের সাধারন সম্পাদক শহীদুল্লাহ বাদল, বিজিএমইএ-এর সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল্লচ্ছ হিল রকিব, ফাতেমা চৌধুরী, সিনিয়র ম্যানেজার, চিবো।

 

আয়োজিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন, সলিডারিটি সেটারের কান্ট্রি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর এ কে এম নাসিম।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আওয়াজ ফাউন্ডেশনেয় নির্বাহী পরিচালক নাজমা আক্তার এবং ধাংশাপত্র উপস্থাপন করেন বিলস এয় পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন।

 

শ্রম সচিব বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কমিটি গঠন করা হলেও অভিযোগ প্রাপ্তি অপ্রতুল হওয়ায় সেখানে যৌন হয়রানির অবস্থা কি এ বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারনা পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বক্তব্যে মাননীয় সচিব দেশের অর্থনীতিসহ বিভিন্ন পর্যায়ে নারীর অংশগ্রহনের দিকটি ডল্লেখ করে একটি যোন হয়রানিমুক্ত নিরাপদ কর্মপরিবেশ কতটা প্রয়োজনীয় তা তিনি তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে তুলে ধরেন। সরকার আইনি প্রক্রিয়ায় যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আরও ইতিবাচক উদ্যোগ গ্রহণ করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দ্রুততম সময়ে আইএলও সনদ ১৯০ অনুস্বাক্ষরে তিনি আশাবাদী।

 

বক্তারা বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হাইকোর্টের নির্দেশনার বিষয়টি যথাযথভাবে অনুসরন করা হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে মনিটরিং থাকা জরুরী। তারা বলেন, কর্মক্ষেত্রে জেন্ডার সহিংসতা প্রতিরোধ করতে না পারলে নারী শ্রমিকদের করে পড়া কমানো যাবে না। কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ সদস্য নিয়োগের বিষয়টিও সঠিকভাবে অনুসরন করা হচ্ছে না উল্লেখ করে তারা বলেন, সমাজে নারীর যে অবমূল্যায়ন হচ্ছে তা প্রতিহত করতে না পারলে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ দূরহ হয়ে পড়বে। তারা মন্তব্য করেন, সরকারী চাকরীতে মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস হলেও তৈরী পোশাক শিল্পে ১২০ দিন, যা বৈষম্যের প্রতিফলন। তারা আরও উল্লেখ করেন, শুধু শরীরিকভাবে যৌনহয়রানি নয়, বরং মানসিক ও মনস্তাত্বিক যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কর্মক্ষেত্রে ব্র্যান্ড, বায়ার, শ্রমিক-মালিক সহ সকল পক্ষকে সচেতন হতে হবেঝ শুধু আইন প্রণয়ন করলেই হবে না, ধ্বং তা সঠিকভাবে বাস্তবায়নে এগিয়ে আসা জরুরী। তৈরী পোশাক শিল্পে কর্মক্ষেত্র নিরাপত্তা যথেষ্ট হলেও নারীর প্রতি যৌন হয়রানির বিষয়ে মন মানসিকতা পরিবর্তন করা জরুরী। এ ক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে সক্ষমতা জোরদার করতে হবে।

 

বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন, সবুজের অভিযান এর নির্বাহী পরিচালক মাহমুদা আক্তার, নারীপক্ষের রওশন আরা আকশন এইড বংলাদেশ এর মরিয়ম নেসা, ফ্লাড এর মারুফুল আলম, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশ এর শেখ শাহনাজ, গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির তাসলিমা আক্তার, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের খাদিজা আক্তার, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সহকারী পরিচালক ইশরাত জাহান বকতা, চিবো এ্যান্ড এর ফাতেমা চৌধুরী, ফ্যাশন ব্র্যান্ড এর সাবিহা আক্তার, আইএলও’র আফসানা আক্তার, সলিডারিটি সেন্টার এর অনিন্দিতা ঘোষ, বহ্নশিখা’র তারাফি হোসেন, মন্ডিয়াল এফএনডি’র কনসালটেন্ট শাহীনুর রহমান সহ সরকারি – বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংগঠনের প্রতনিধিবৃন্দ, ব্র্যান্ড, মালিক সংগঠনের প্রতিনিধি, ট্রেড ইউানয়ন নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন নারী শ্রমিক।