
জাতির সংবাদ ডটকম :
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, আগামী নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন কারো পক্ষে বা বিপক্ষে কাজ করবে না। দেশের ১৮ কোটি মানুষের পক্ষেই কাজ করবে।
শনিবার সকালে রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, গত নির্বাচনে যেসব প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা দায়িত্বে অবহেলা করেছেন ও সমস্যা সৃষ্টি করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা কমে গেছে, আর ভোটারদের কেন্দ্রীয় ভোটকেন্দ্রে আনা এখন বড় চ্যালেঞ্জ। তবে কমিশন, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও প্রশাসন সবাই মিলে একটি ভালো নির্বাচন এবং মানুষের আস্থা ফেরানোর কাজ করছে। তাই আগামী সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করাটাই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের প্রধান লক্ষ্য। সকল কার্যক্রম বিধিবিধান বা আইন-অনুশাসন অনুযায়ি চলবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন তফসিল এখনই ঘোষণা হবে না। ঘোষণার দু’মাস আগে তারিখ জানানো হবে। তবে স্বল্প সময়ে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো। তবে তা আরও উন্নত হওয়া দরকার, যাতে মানুষ নির্ভয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারে। মানুষ ভোটকেন্দ্রে যাওয়া ভুলে গেছে। নির্বাচনের দিন অনেকে বাসায় থাকে। অনেকে মনে করে, ভোট দিতে গিয়ে কি হবে? কেউ না কেউ তো আমার ভোট দিয়ে দিবে।
এরকম মানসিকতা দূর করাই নির্বাচন কমিশনের চ্যালেঞ্জ। এজন্য জনগণের সচেতন করা প্রয়োজন। সেই সচেতনতা তৈরিতে আমরা সাংবাদিকদের সহযোগিতা ও পরামর্শ চাই।
এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, অস্ত্রের চেয়েও এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা)-এর ব্যবহার। আমরা সাংবাদিকদের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছি না।
কারণ পেশাদার সাংবাদিকরা স্বচ্ছ ইলেকশনের জন্য আমাদের হয়ে কাজ করবেন বলেই প্রত্যাশা করি। কিন্তু যারা ফেসবুকে সাংবাদিকতা করে, যাদের কোন প্রশিক্ষণ, দক্ষতা বা নৈতিকতা নেই, তাদের নিয়ে যত সমস্যা। কারণ তারা প্রধান উপদেষ্টা ও আমাকে নিয়ে নানা ধরনের ভিডিও বানিয়ে কিছু একটা লিখে ছেড়ে দেয়। সাধারণ মানুষ এসব বোঝে না, যাচাই-বাছাই করে না। তারা এসব আর্টিফিশিয়াল ভিডিও দেখে ভুল বোঝে।
যাচাই-বাছাই ছাড়া এসব ভিডিও শেয়ার না করতে সবার প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, এই বিষয়েও সাংবাদিকদের সহযোগিতা দরকার। এসব বন্ধে যেসব ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, আমাদের পক্ষ থেকে নেওয়া হচ্ছে।
অতীতে নির্বাচনে নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে জড়িত প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও প্রশাসনের কর্মীদের আগামী নির্বাচনে রাখা হবে না বলেও জানান।
সিইসি বলেন, ভোট দেওয়া শুধু নাগরিক দায়িত্বই নয়, ঈমানি দায়িত্বও। সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে বলেও আশ্বস্ত করেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার তিন দিনের জন্য রংপুর সফরে করছেন। সফরে তিনি মাঠ প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।