নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ঢাকায় আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এটাই হতে যাচ্ছে দুই দেশের মধ্যে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক; যা আগে থেকেই ঢাকার হওয়ার কথা ছিল।
বুধবার (৪ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন পররাষ্ট্র সচিবদের বৈঠকের তারিখ জানিয়েছেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতের সঙ্গে ফরেন অফিস কনসালটেশন হবে ১০ ডিসেম্বর। হয়তো একদিন আগে হতে পারে অথবা ১০ ডিসেম্বর হবে। এটা খুব স্পষ্ট, আমরা চাই ভালো সম্পর্ক। তবে সেটা দুই পক্ষ থেকে চাইতে হবে, সেই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।
৫ আগস্ট বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে ঢাকা-দিল্লির সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে ঢাকায় যখন দুই দেশ পররাষ্ট্র সচিবদের বৈঠক নিয়ে প্রস্তুতি চলছে তখন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর আগে কলকাতার বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ হয়েছে, বিক্ষোভ থেকে বাংলাদেশের পতাকা পোড়ানোর পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কুশপুতুল পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে।
গত ২ ডিসেম্বর আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় দিল্লি দুঃখ প্রকাশ করেছে। হাইকমিশনে হামলার পরদিন ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
কূটনৈতিক অঙ্গন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিক্রম মিশ্রির ঢাকা সফরে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলো পর্যালোচনা, রাজনৈতিক বোঝাপড়া, ভারতীয় গণমাধ্যমের বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচার, ভারতে বসে শেখ হাসিনার বক্তব্য, ভিসার জট খোলা, সীমান্ত হত্যা, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, ভারত থেকে নিত্যপণ্য আমদানি এবং বাংলাদেশ থেকে দেশটিতে রপ্তানির নানা বাধা সরানোসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশ জোর দিতে পারে।
বাংলাদেশিদের জন্য ভারতীয় ভিসার স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। শুধু জরুরি চিকিৎসা ভিসা এবং তৃতীয় দেশ সফরের জন্য ভিসা সেবা চালু রয়েছে। অবশ্য ভারতের পক্ষ থেকে জনবলের ঘাটতির কথা বলা হচ্ছে। জনবল বৃদ্ধির পর পুরোদমে ভিসা সেবা চালুর আশ্বাস দিয়েছে ভারত। আশা করা হচ্ছে, পররাষ্ট্র সচিবের বৈঠকের পর ভিসা জট খোলোর ব্যাপারে কিছুটা হলেও নমনীয় হতে পারে দিল্লি।
গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ফাঁকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর। নিউইয়র্কের ওই আলোচনায় পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক আয়োজনের বিষয়ে কথা হয়।
প্রসঙ্গত, গত বছরের (২০২৩) নভেম্বরে দিল্লিতে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ে বৈঠক হয়।