আবরারের মতো বহু মেধাবী ছাত্রকে হত্যা করে শিক্ষাঙ্গনকে কলুষিত করেছে ছাত্রলীগ- এবি পার্টি 

সোমবার, এপ্রিল ১, ২০২৪

জাতির সংবাদ ডটকম।।

খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজীর মাধ্যমে সরকারী ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ শিক্ষাঙ্গনকে প্রতিনিয়ত নিজেদের ক্ষমতার লীলাভূমি বানিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, শহীদ আবরারের মতো বহু মেধাবী ছাত্রকে হত্যা করে শিক্ষাঙ্গনকে কলুষিত করেছে তারা- আজ এবি পার্টির গণইফতারে এ অভিযোগ করেন বক্তারা। এবি পার্টির সমাবেশে নেতারা আরও বলেন; স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জনে যে ছাত্রলীগ নেতৃত্বের ভূমিকায় ছিল সেই ছাত্রলীগের রাজনীতিকে এখন জনগণ স্মতস্ফূর্তভাবে ঘৃণা করা শুরু করেছে। যে সন্ত্রাস নির্ভর রাজনীতির কারণে আবরার ফাহাদের মতো মেধাবীদের নৃশংসভাবে খুন হতে হয় সেই পেশী শক্তির রাজনীতি জনগণ চায় না বলেও তারা মন্তব্য করেন।

পবিত্র রমজানের ২১ তম দিনে গণইফতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিজয় নগরস্থ বিজয়-৭১ চত্বরে অনুষ্ঠিত আজকের সমাবেশ থেকে বক্তারা বলেন, ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী পোস্ট দেয়ার কারণে বাংলাদেশের সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের ক্যম্পাস বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী নেতারা রাতভর পিটিয়ে নৃশংস ভাবে হত্যা করে। যার ফলে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ রাখে প্রশাসন। আজ হাইকোর্টে আবেদন করে আবার ছাত্র রাজনীতি করার আদেশ নিয়েছে ছাত্রলীগ। বিচার বিভাগ নিয়ে জনগণ কথা বলতে পারেনা, কিন্তু রাজনৈতিক বিষয় যারা বিচারালয়ে নিয়ে এসে পুরো পরিবেশকে কলুষিত করছে তাদের বিরুদ্ধে জনগণকে রাজনৈতিক ভাবেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। ছাত্র রাজনীতির নামে আবরারের মতো আর কোন মেধাবীর নৃশংস হত্যাকাণ্ড জনগণ বরদাশত করবেনা বলে হুশিয়ারী জানান এবি পার্টির নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন এবি পার্টির যুগ্ম আহবায়ক প্রফেসর ডাঃ মেজর (অবঃ) আব্দুল ওহাব মিনার। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুল হালিম খোকনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টি’র (কাজী জাফর) মহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য আহসান হাবীব লিংকন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির যুগ্ম আহবায়ক, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, মহানগর উত্তরের আহবায়ক আলতাফ হোসাইন, বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শাহজাহান ব্যাপারী ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব আহমেদ বারকাজ নাসির।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আহসান হাবীব লিংকন বলেন, রমজান মাসব্যাপী দেশের দুঃখী মানুষের জন্য গণ ইফতারের আয়োজন করেছে, আমি অভিভূত। যখন পত্রিকার পাতায় খুললেই দুঃসংবাদ চোখে পড়ে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণ, সিলেট এমসি কলেজে ধর্ষণ, মানুষের বাড়ি দখল, জনগনের সম্পদ লুট, এগুলো করছে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী ও তাদের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের গুন্ডাপান্ডা। দেশের এই রকম দুঃসময়ে আমার বাংলাদেশ পার্টি নতুন রাজনীতি শুরু করেছে, আমি অভিভূত। তাদের কাজের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

 

অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, দেশের সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠান বুয়েটে নিয়ে আবার নতুন চক্রান্ত শুরু হয়েছে। ছাত্রলীগের জঙ্গিরা একবার আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের জঙ্গি গোষ্ঠীর অত্যাচারে সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা অতিষ্ঠ ঠিক সেই সময়ে সেই গুন্ডাপান্ডারা আবার বুয়েটের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তুলেছে। যে রাজনীতি আমাদের দেশপ্রেমিক আবরার ফাহাদকে হত্যা করে, আমাদের বোনদের স্বামীর সামনে ধর্ষণ করে সেই রাজনীতি আমরা চাইনা।

রাজনীতির নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণরুমে সাধারণ ছাত্রদের নির্যাতন আর গুন্ডামী চলতে পারেনা। ছাত্র রাজনীতির নামে আবরারের মতো আর কোন মেধাবীর নৃশংস হত্যা দেশের জনগণ মেনে নেবেনা। রমজান মাস অধিকার আদায়ের মাস, এবি পার্টি আপনাদের সাথে নিয়ে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনবো ইনশাআল্লাহ।

 

সভাপতির বক্তব্যে মেজর মিনার বলেন, আমরা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জন্য রাজনীতি করছি। এই আপনারা যারা এখানে ইফতার করেন তাদের জন্য রাজনীতি করছি। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের পরিশ্রম তখনই স্বার্থক হবে যখন আপনারাও জেগে উঠবেন নিজের অধিকার বুঝে নিতে। আপনারা সবাই আমাদের হাতে হাত রেখে আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিন, ইনশাআল্লাহ আমরা একটা সুন্দর, কল্যানকর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবো।

গণ ইফতারে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি যুবপার্টির আহবায়ক এবিএম খালিদ হাসান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার ফারুক, উত্তরের সদস্যসচিব সেলিম খান, দক্ষিণের যুগ্ম সদস্যসচিব সফিউল বাসার, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মিলু, রিপন মাহমুদ, শরণ চৌধুরী, রুনা হোসাইন, আমেনা বেগম, ছাত্রপক্ষের আহবায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স, চাত্রনেতা হাসিবুর রহমান খান, পল্টন থানার আহবায়ক আব্দুল কাদের মুন্সি, সদস্য সচিব রনি মোল্লা, যাত্রাবাড়ী থানা সমন্বয়ক সএমএইচ আরিফ সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।