আমাদের আবার ধোঁকা দিয়ে বোকা বানাবে আ.লীগ : চরমোনাই পীর

শনিবার, জুলাই ১৫, ২০২৩

 

 

 

জাতির সংবাদ ডটকম : নির্বাচনের বিষয়ে দ্বিতীয়বার বোকা হয়ে আওয়ামী লীগের এই ধোঁকায় পা রাখতে চান না।

শনিবার বিকেলে রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে ইসলামী আন্দোলন আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম চরমোনাই।

এসময় বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন – ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সদস্য আবদুল আওয়াল মজুমদার, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক বেলায়েত হোসেন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি কিবরিয়া আলম, যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, যুগ্ম মহাসচিব আমিরুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা কাজী আতাউর রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, প্রেসিডিয়াম সদস্য আল্লামা নুরুল হুদা ফয়েজি প্রমুখ।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (পিআর) পদ্ধতির প্রবর্তন, বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়।

এতে মুফতি মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ইসলামের দৃষ্টিতে যার কথা একবার মিথ্যা প্রমাণিত হয় তার কথা কখনও গ্রহণযোগ্য হয় না। আওয়ামী লীগ দাবি করছে চব্বিশের নির্বাচন তারা সুষ্ঠু এবং সুন্দরভাবে করবে। তার মানে আবার আমাদের ধোঁকা দেবেন এবং বোকা বানাবেন। তাই আমরা দ্বিতীয়বার বোকা হয়ে আপনাদের এই ধোঁকায় পা রাখতে চাই না। এজন্য পরিষ্কারভাবে আমরা ঘোষণা করছি, এই দেশ আমাদের, এই জনগণ আমাদের। তাই এ দেশকে রক্ষার জন্য এবং জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যদি রক্ত দিতে প্রয়োজন হয় তা আমরা দেব। বর্তমান সরকারের কাছে ইসলাম এবং এই দেশ নিরাপদ নয়।

দেশের মানুষের ভোটাধিকারকে কলঙ্কিত করেছে আওয়ামী লীগ এমন মন্তব্য করে চরমোনাই পীর সাহেব বলেন, স্বাধীনতার যে মূল ইস্যু ছিল ভোটাধিকার বাস্তবায়ন। সেটাই তো আপনাদের হাতে জবাই হয়ে কলঙ্কিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বায়তুল মোকাররমের সামনে সমাবেশে বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই জাতীয় নির্বাচন হবে। আমরা এ কথার ধিক্কার জানাই। কারণ আজ বাংলাদেশের সব দল এবং সচেতন নাগরিক থেকে শুরু করে সকলেই একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। আর আপনি বলছেন, শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে, তাহলে তো নির্বাচনের প্রয়োজন নাই। আপনারা (আওয়ামী লীগ) ঘোষণা দিলেই তো পারেন, আমার অমুক আত্মীয়, তমুক নেতা ক্ষমতায় যাবে।

৫৩ বছরের স্বাধীনতায় আওয়ামী লীগ যে ইতিহাস করেছে তা খুবই লজ্জা জনক এমন মন্তব্য করে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, বাংলাদেশ যে স্বাধীন হয়েছিল তার মধ্যে একটা উল্লেখযোগ্য দাবি ছিল ন্যায্য ভোট। অর্থাৎ সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমে যে প্রার্থী বিজয়ী হবে সে ক্ষমতায় বসবে। কিন্তু বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থেকে যে অধ্যায় তারা রচনা করেছে তার ইতিহাসে কলঙ্কিত হয়ে থাকবে। ৫৩ বছরের স্বাধীনতায় বর্তমানে দেশের মানুষকে যে ভোটাধিকারের জন্য রাস্তায় নামতে হবে তা তারা কখনোই চিন্তা করেনি। বর্তমান সরকার যে ক্ষমতায় রয়েছে তারা বৈধ সরকার নয়। তারা জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসে নাই। তারা দিনের ভোট রাতে করে, ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় এসেছে।

এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের অনৈতিক কার্যক্রম ইসলামী আন্দোলন করেনি দাবি করে রেজাউল করীম বলেন, ভাঙচুর, লুটপাট থেকে শুরু করে কোনো ধরনের অনৈতিক কাজ দেশবাসী আমাদের থেকে পায়নি। রাজনীতির অর্থ কি, রাজনীতি করবে মানুষের কল্যাণের জন্য। হিংসা-বিদ্বেষ এবং অরাজকতা যাদের থেকে প্রকাশ পায় সেটা মূলত রাজনীতি না, সেটা হচ্ছে মূলত ব্যাধি।

বিক্ষোভ সমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেন, ইসলামি আন্দোলন ভেসে আসেনি। আমরা এই দেশেরই নাগরিক। আমাদের এই দেশে কেউ দুর্নীতি করবে, গণতন্ত্র কেড়ে নিবে তাদেরকে আমরা ছেড়ে দেব না। এই দেশ আওয়ামী লীগের একার নয়। ১৪ এবং ১৮ এর মত ভোট আমরা আর হতে দেব না। আমরা জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাব। কিন্তু কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাব না।

সমাবেশে ইসলামি আন্দোলনের মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, বর্তমানে ঘুষ ছাড়া চলে এমন প্রতিষ্ঠান দেশে পাওয়া অসম্ভব। সরকার পাঠ্যপুস্তকে নাস্তিকতা ঢুকিয়েছে। এভাবে দেশ চলতে দেওয়া যায় না। এই সরকারকে পতন করতে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। সেখানে আমাদের সবাইকে এক হয়ে রাজপথে নামতে হবে। এই জালিম সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্য বদ্ধ হতে হবে।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দলের সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ।

তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন বলেছিল আমরা পরীক্ষা দিতে চাই। আমরা তাদের পরীক্ষা নিয়েছি গাজীপুর এবং বরিশালের নির্বাচনের মাধ্যমে। তারা সেই পরীক্ষায় ফেল করেছেন। তাই আমরা এই ফেল করা নির্বাচন কমিশনকে আর দেখতে চাই না। অনতিবিলম্বে এই নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি করছি।