আমাদের করের আওতা বাড়াতে হবে : অর্থ উপদেষ্টা

রবিবার, এপ্রিল ৬, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, রেভিনিউতে আমাদের লিকেজ আছে। সেটা কমাতে হবে। জিডিপির রেশিও কমাতে হবে। ট্যাক্সনেট (করের আওতা) বাড়াতে হবে।

রোববার (৬ এপ্রিল) সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে আইএমএফ-এর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা।

উপদেষ্টা বলেন, আইএমএফ-এর মূল কনসার্ন হলো রেভিনিউ জেনারেট ও বাজেটের আকার কত হবে, ডেফিসিট কত হবে, আপাতত এসব নিয়ে আলাপ হয়েছে। এসব নিয়ে আরও আলাপ হবে। বাংলাদেশের লোন রেভুলেশন নিয়ে কথা হয়েছে। খারাপ লোনগুলো কীভাবে কী হবে, সেটা নিয়ে একটি আইন করেছি, সেসব বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে।

তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলা যেন কোনোভাবে বিঘ্ন না হয়, সেসব বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। কোন কোন খাতে রেভিনিউ বাড়ানো হবে, সেসব নিয়েও কথা হয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে তারা (আইএমএফ) আবারও বসবে, তখন বিস্তারিত জানতে পারবেন।

এক্সচেঞ্জ রেট নিয়ে কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এক্সচেঞ্জ রেট ও রিজার্ভ নিয়ে কথা হয়েছে।

আইএমএফ-এর চতুর্থ কিস্তির ঋণ পাওয়ার বিষয়ে যে আশার কথা শুনিয়েছিলেন, সেটার বিষয় কী মনে হয়? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী। তারা বলেছে, আমরা দেখব। ১৯ এপ্রিল আমরা আবার যাবো, এরপর মে-জুনের দিকে রিভিউ মিটিং হবে। এই রিভিউয়ের পরেই আমাদের ঋণের বিষয়টা নিয়ে সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে। রিভিউয়ের ওপরেই তারা সুপারিশ করবে।

চতুর্থ এবং পঞ্চম কিস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে আইএমএফ-এর ফোকাস কোনদিকে থাকবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ট্যাক্স রেভিনিউ বাড়ানো, ফরেন এক্সচেঞ্জ রেট স্থিতিশীল রাখা, বাজেটের এক্সপেনডিচার ডেফিসিট কমানো, এগুলো হলো মূল বিষয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের ৮ মাস হলো। এই সময়ে দেশের অর্থনীতি নিয়ে তারা কী বলেছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা বলেছে দেশের অর্থনীতি বর্তমানে স্থিতিশীল আছে তবে সঠিক দিকেই আছে এবং সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। তারা এ বিষয়গুলো দেখবে এবং তারা বলেছে এ মুহূর্তে বাংলাদেশের সরকার স্থিতিশীল রয়েছে।

আইএমএফ আমাদের কোন কোন বিষয় সেক্রিফাইস করতে বলছে বা আইএমএফ কোন বিষয়ে সেক্রিফাইস করবে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের যা যা করার প্রয়োজন সেটা করছি। অলরেডি আমরা আমাদের গুড ইনটেনশন দেখিয়েছি। এখন তাদের দিক থেকে (আইএমএফ) তাদের ভালো ভাবমূর্তিটা দেখাক। আমরা এসব বিষয় নিয়ে আলাপ করব। তারাও আমাদের কিছু বলবে করতে। তখন আমরা বলবো – আমরা এটা এটা করছি। সর্বোপরি আমরা চেষ্টা করেছি।

তিনি বলেন, আমাদের একশন নিতে হবে। আইএমএফ বলছে বলেই এসব একশন নিতে হবে এমনটা নয়। আমাদের দেশের অর্থনীতির জন্যই এটা নিতে হবে। যেমন আমাদের ব্যাংকখাত সংস্কার, খারাপ লোনগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে, রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে। এতএব আইএমএফ টাকা দিক আর না দিক, আমাদের এসব কাজগুলো এমনিতেই করতে হবে।

রাজস্ব খাতে আইএমএফ কী চায় এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, রেভিনিউতে আমাদের লিকেজ আছে। সেটা কমাতে হবে। জিডিপির রেশিও কমাতে হবে। ট্যাক্সনেট বাড়াতে হবে। অনেকেই আছে জিরো ট্যাক্সে রিটার্ন দেয়, তাদের আয় আছে কিন্তু তারা রিটার্ন দেয় না। এটা কমাতে হবে।

ভ্যাটের সিঙ্গেল রেটের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, সিঙ্গেল রেটের বিষয় আমরা চেষ্টা করব। তবে আমরা একবারে সিঙ্গেল রেটে আসতে পারব না।