উচ্চাশা অনুযায়ী বিনিয়োগ সম্মেলনের সাফল‍্য অর্জিত না হলে তা হবে দু:খজনক- এবি পার্টি

রবিবার, এপ্রিল ১৩, ২০২৫

জাতির সংবাদ ডটকম।।

উচ্চাশা অনুযায়ী বিনিয়োগ সম্মেলনের সাফল‍্য অর্জিত না হলে তা দু:খজনক হবে বলে মনেকরে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)। মধ‍্যম আয়ের দেশ হবার পরিকল্পনা থেকে সরে না আসলে হাক ডাক করে আয়োজন করা বিনিয়োগ সম্মেলনের সুবিধা বাংলাদেশ পাবেনা বলেও আশংকা প্রকাশ করেছে দলটির নেতৃবৃন্দ। আজ বেলা ১২ টায় বিজয় নগরস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব শংকার কথা জানান এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। তিনি বলেন, এবি পার্টি মনে করে- গত রেজিমের দেয়া বিভিন্ন মিথ‍্যা ও কাল্পনিক তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে ২০২৬ এর নভেম্বরে অনুন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে এসে মধ্যম আয়ের দেশ হবার রুপকল্প দেশের অর্থনীতির মেরুদন্ড ভেঙে দেবে। দক্ষিণ এশিয়াতে বাংলাদেশ যে যে কারনে বানিজ্য ও বিনিয়োগের জন‍্য উপযোগী ও প্রতিযোগীতামুলক অবস্থানে আছে তা আর থাকবে না। তাই দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীরা স্থানীয় বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে বলে আমরা আশঙ্কা প্রকাশ করছি। তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনীতি ও বানিজ্যের স্বচ্ছতার স্বার্থে প্রাসঙ্গিক সকল পরিসংখ‍্যান যাচাই বাছাই করে পুনঃপ্রকাশ জরুরী। দেশের মোট জনসংখ‍্যা (প্রবাসী ও কর্মক্ষম তরুন সহ), জিডিপির পরিমান, মাথাপিছু গড় আয় ও আয়ু, বাৎসরিক প্রবৃদ্ধি, দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাসকারী জনগোষ্ঠী, শিক্ষা ও দক্ষতার হার, ক্রয় ক্ষমতা সম্পন্ন দেশীয় বাজারের পরিধি, রিজার্ভ ও ঋণের পরিমান, বৈশ্বিক ক্রেডিট রেটিং ইত্যাদির বিশ্বাসযোগ‍্য তথ‍্য দেশীয় ও বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন‍্য প্রকাশ করা আবশ‍্যক যাতে তারা ভেবেচিন্তে সঠিক ও কার্যকর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ১৯৭১ সালে অনুন্নত, উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশের তালিকা করবার পর থেকে বাংলাদেশ অনুন্নত দেশের তালিকাতে স্থান পায় ১৯৭৫ সালে। এর মোক্ষম সুযোগ কাজে লাগিয়ে দেশের অর্থনীতির ভিত গড়ে দেন সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যা এখনো আমাদের অর্থনীতির মেরুদন্ড। কিন্তু দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের কবলে পড়ে তথাকথিত মধ‍্যম আয়ের দেশ হবার চেষ্টা করলে দেশের রপ্তানীতে ধ্বস নামবে; অনুন্নত দেশ হবার কারনে গত কয়েক যুগ ধরে করবিহীন যে সকল সুবিধা সারা দুনিয়াতে আমরা পাচ্ছি তা হারিয়ে ফেলব। উচ্চ সুদে ঋণ ও কাঁচামাল আমদানি করে স্থানীয় বা বৈদেশীক বানিজ্য‍ সচল রাখা সম্ভব হবেনা মন্তব‍্য করে তিনি বলেন এসকল প্রশ্ন দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের মাথায় রয়েছে, তাই এগুলোর সমাধান না করে বিনিয়োগ সম্মেলন থেকে আশানুরুপ কোন সফলতা আসবে বলে মনে করে না এবি পার্টি। ফলে উচ্চাশা অনুযায়ী বিনিয়োগ সম্মেলনের সাফল‍্য অর্জিত না হলে তা হবে দু:খজনক।

তিনি রপ্তানি বাজারের কৌশলগত দিক তুলে ধরে বলেন; এবি পার্টি মনে করে, যে কোন বিনিয়োগকারীকে স্থানীয় ও রপ্তানী বাজার সামনে রেখে বিনিয়োগের সম্ভাব‍্যতা যাচাই করতে হয়। সেক্ষেত্রে স্থানীয় বাজারের সক্ষমতা, দুনিয়া জুড়ে রপ্তানীর সম্ভাবনা, অবকাঠামোগত সুবিধা, প্রতিযোগীতামুলক কর-ভ‍্যাট আছে কিনা, জ্বালানী নিরাপত্তা, স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষন, ব‍্যাংক ঋণ-ডলারের মজুদ ইত্যাদি সকল চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করবার বাস্তবভিত্তিক পথনকশা জরুরী। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদিচ্ছা এবং আন্তরিকতাকে সাধুবাদ জানিয়ে জনাব মঞ্জু বলেন, বিনিয়োগ সম্মেলনকে ঘিরে দেশে-বিদেশে যে আগ্রহ তৈরী হয়েছে, তাকে ইতিবাচকভাবে কাজে লাগাতে হবে। এলডিসি গ্রাজুয়েশনের উদ্যোগকে স্থগিত করতে হবে দেশের অর্থনীতির স্বার্থেই।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব‍্যারিস্টার যোবায়ের আহমদ ভূঁইয়া, অ‍্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, আনোয়ার সাদাত টুটুল, কেন্দ্রীয় নেতা সেলিম খান, হাজরা মেহজাবিন, আজাদুল ইসলাম আজাদ, আমেনা বেগম, জিল্লুল্লাহিল বাকী আফলাতুন, আব্দুল কাদের মুন্সি, হাবিব মিয়াজী, নজরুল ইসলাম কামরুল প্রমূখ।