ইসলাম ধর্মে প্রতি বছর আরবী রমজান মাসে রোজা রাখার বিধান চালু আছে। এই একটি মাস যারা রোজা রাখেন, তারা সারাদিনে এক ফোঁটা পানি পর্যন্ত খেতে পারেন না। কিন্তু এমন অনেকেই আছেন, যারা পুরো একটা দিন তো দূরে থাক, এক বেলাও না খেয়ে থাকতে পারেন না।
সনাতন ধর্মের মানুষরাও দুর্গাপূজায় মহা অষ্টমীর দিনে উপোস থাকেন। বিভিন্ন গবেষণায় ইতোমধ্যে প্রমাণ হয়ে গেছে যে, ধর্মীয় দিক বাদেও এভাবে উপোস থাকার চমকে দেওয়ার মতো স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। তাই শুধু রমজান মাস বা মহা অষ্টমীতে নয়, মাঝেমধ্যেই উপোস থাকার পরামর্শ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।
এখন মনে প্রশ্ন আসছে নিশ্চয়ই, উপোস করলে কী কী শারীরিক লাভ রয়েছে? সেই উত্তর জানতে এই প্রতিবেদনে আপনাকে চোখ রাখতেই হবে। আশা করছি, প্রতিবেদনটি পড়ার পর আপনারও সচেতনতা বাড়বে। আপনিও সময়-সুযোগ পেলে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে উপোস থাকবেন। তাতেই ফিরবে আপনার স্বাস্থ্যের হাল।
ব্লাড সুগার থাকবে বশে
ডায়াবেটিস একটি ঘাতক অসুখ। এই রোগকে নিয়ন্ত্রণে না রাখলে স্বাস্থ্যের বারোটা বাজতে সময় লাগবে না। তাই যেনতেন প্রকারে এই রোগকে বশে রাখতেই হবে। এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং।
চলতি বছরের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, সপ্তাহে মাত্র তিন বার ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করলেই কিন্তু বাড়বে ইনসুলিন সেনসিটিভিটি। তাই ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে অবশ্যই নিজের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ফাস্টিং করুন। এতেই উপকার মিলবে হাতেনাতে।
প্রদাহের বাড়াবাড়ি কমবে
হার্ট ডিজিজ থেকে শুরু করে রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের মতো ক্রনিক রোগের ফাঁদ এড়াতে চাইলে দেহে ঘটে চলা প্রদাহকে প্রশমিত করতেই হবে। এই কাজে আপনার হাতিয়ার হতে পারে উপোস। তাই সময় সুযোগ থাকলে প্রতি মাসে কয়েকবার ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করুন। এতেই কমবে ইনফ্লামেশনের প্রকোপ। প্রশস্ত হবে আপনার সুস্থ থাকার পথ।
হার্টের বন্ধু ফাস্টিং
আজকাল হার্টের রোগের ফাঁদে পড়ে অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। তাই সময় থাকতে হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য রক্ষার কাজে লেগে পড়তে হবে। এই কাজে আপনার ব্রহ্মাস্ত্র হতে পারে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং।
একাধিক গবেষণায় এই বিষয়টা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে, মাঝে মধ্যে উপোস করলে কমবে প্রেশার ও কোলেস্টেরল লেভেল। এই দুই রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেই কিন্তু অনায়াসে হার্ট থাকবে সুস্থ।
ব্রেন হবে সুপারফাস্ট
ব্রেনের সাহায্যেই গোটা শরীর চালিত হয়। তাই সুস্থ থাকতে মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতেই হবে। এই কাজটি করার স্বার্থে আপনি নিয়মিত উপোস করতেই পারেন। এক্ষেত্রে ২০১৮ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত উপোস করলেই ব্রেনের নার্ভ সেলের কার্যক্ষমতা বাড়ে। এমনকি বৃদ্ধি পায় ব্রেনের কর্মক্ষমতা। তাই বুদ্ধির গোড়ায় শান দিতে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করতেই পারেন।
কমবে ওজন
দ্রুত ওজন কমানোর ইচ্ছে থাকলে যত দ্রুত সম্ভব বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করুন। তাতেই ওজন কমবে হুড়মুড়িয়ে। এমনকি সুস্থ থাকবে শরীর। তাই উপোস করার সময় এর একাধিক গুণাগুণও মাথায় রাখুন। তাহলেই দেখবেন সব মানসিক কষ্ট সহজেই লাঘব হবে।