আবুল কাশেম জামালপুর জেলা প্রতিনিধিঃ সরিষাবাড়ী
উপজেলার পশ্চিমপাশ দিয়ে বয়ে চলা এ সুবর্ণখালি খাল বা নদী। এটি পোগলদিঘা ইউনিয়নের চরপোগলদিঘা হয়ে আওনা ইউনিয়নের কুলপাল চরের মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে ঐতিহ্যবাহী পুরোনো সুবর্ণখালি নদী।
এই ঘাটে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মাঝি ব্যস্ত সময় পার করেন। নৌকা ঘাটে আসার সঙ্গে সঙ্গে লোকজন তাড়াহুড়ো করে শুরু করেন। কেউ নৌকায় উঠছেন আবার কেউ নামছেন। ওঠা নামার এ দৃশ্য কুলপাল চরসহ সুর্বণখালী খালের পশ্চিমপ্রান্তের নিত্য দিনের সঙ্গী।
জানা গেছে, সুবর্ণখালি মূলত ঝিনাই নদী থেকে উৎপত্তি। ব্রহ্মপুত্রের শাখা ঝিনাই নদী ভাটিতে সরিষাবাড়ীতে গিয়ে সুবর্ণখালি নামধারণ করে উপজেলার আওনা ইউনিয়নের জগন্নাথগঞ্জঘাটের কুমারপাড়ায় হয়ে পিংনায় যমুনার শাখায় মিলিত হয়েছে। এর পশ্চিমপাশে আওনা ইউনিয়নের কুমারপাড়া, কাজলগাঁও, স্থলপশ্চিম চরা, আওনা, ঘুইঞ্চা, কুলপাল, দয়ালপুর, পোগলদিঘা ইউনিয়নের চরপোগলদিঘা, দামোদরপুর, শ্যামপুর, গোবিন্দপলট, বিন্নাফৈর, মালিপাড়া, টাকুরিয়া জনবসতিকে দুই ভাগে বিভক্ত করে রেখেছে।এছাড়াও কাজিপুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর, মনসুরনগর, চরগিরিশসহ ৮টি ইউনিয়নের হাজার হাজার লোক কুলপাল খেয়াঘাট দিয়েই প্রতিদিন চলাচল করে। নদীর দু’পাড়ে লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। তারা প্রতিনিয়ত এ নদী পার হয়ে যাতায়াত করেন।
কুলপাল চরের একাধিক ব্যক্তি জানান, নদীর পশ্চিম পাড়ে সরিষাবাড়ি উপজেলাসহ সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার ৪০ থেকে ৪৫টি গ্রামের কয়েক লাখ মানুষের বসবাস। সড়কপথে কাজিপুর উপজেলার দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার এবং নৌ-পথে প্রায় ২৫ কিলোমিটার। শুকনো মৌসুমে নদীতে চর পড়ে যায়। তখন যাতায়াত করা আরো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। একটি সেতুর অভাবে ওই এলাকা একটি বিচ্ছিন্ন জনপদে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় একাধিক কৃষক জানান, যাতায়াতের কারণে তারা সময় মতো হাট-বাজারে ফসল বিক্রি করতে পারেন না। ফলে ফসলে লোকসান গুনতে হয়।
দৌলতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তে আসা শিক্ষার্থীরা জানান, অনেক সময় খেয়া পারাপারে দেরি হওয়ায় তারা গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস করতে পারেন না। বর্ষার সময় নদী পারাপারে তাদের প্রায়ই বৃষ্টিতে ভিজতে হয়। অনেক সময় ভেজা পোশাকেই ক্লাস করতে হয়। এপার থেকে প্রতিদিনি দুই শতাধিক শিক্ষার্থী হাইস্কুল, কলেজে যাতায়াত করেন এ খেয়াঘাট দিয়েই।
সরিষাবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী জাহিদুর রহমান বলেন, জায়গাটি কয়েক দফা পরিদর্শন করে উপরমহলে কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। পাশ হয়ে আসলেই টেন্ডার আহ্বান করে কাজ শুরু করা হবে।
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সায়েদুজ্জামান সাদেক বলেন, জায়গাটি এলজিইডির আওতাভুক্ত। ব্রিজের সব প্রকার পরীক্ষা নিরীক্ষা করে কাগজপত্র প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। উপর থেকে অর্ডার আসার সঙ্গে সঙ্গেই দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করা হবে।