এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ

সোমবার, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৪

 

স্টাফ রিপোর্টার।।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোগে ২০১৩ সালে গঠিত চতুর্থ প্রজন্মের এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নানা বিতর্কেরজন্ম দিয়েছে। খোদ ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমালের বিরুদ্ধেই বিভিন্ন উপায়ে অর্থ আত্মসাৎ, স্বোচ্ছাচয়িতা ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এবার এ তালিকায় যুক্ত করেকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন ব্যাংকের ৭ উদ্যোক্তা। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) এসব কর্মকর্তার নানা ‘অপকর্ম’ তুলে ধরে ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যান্ড সিইও গোলাম আউলিয়াকে চিঠি দিয়েছেন তারা। এরমধ্যে রয়েছেন ৫ জন উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার এবং ২ জন উদ্যোক্তা পরিচালক। তারা হলেন- উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার তোহেল আহমেদ, সোনাওর আলী, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, এস এম গোলাম রব্বানী চৌধুরী, সাখাওয়াত আলী। উদ্যোক্তা পরিচালক মো. এনায়েত হোসেন ও সরোয়ার জামান চৌধুরী। চিঠিতে ৭ দিনের মধ্যে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে সকল স্পন্সর শেয়ারহোল্ডারদের জানানোর ভান্য বলা হয়েছে। চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে অর্থমন্ত্রী, মুখ্যসচিব, মন্ত্রী পরিষদ সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, হেড অব বিএফআইইউ ও পরিচালক, বিআরপিডি পরিচালককে। চিঠিতে বলা হয়েছে, একটি চক্র প্রতিষ্ঠাকালীন পর্ষদকে সুকৌশলে নানা অনিয়মের অভিযোগে বিতর্কিত করেছে। ফলশ্রুতিতে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে ব্যাংকের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠিত হয়। পর্যদে প্রতিষ্ঠাকালীন অভিজ্ঞ পরিচালকদের অনুপস্থিতিতে বর্তমান চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল, ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মিয়া ও এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান আদনান ইমামের অধীনে ব্যাংকটি বিগত কয়েক বছরে অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের প্রতীকে পরিণত হয়েছে। সংঘবদ্ধ চক্রের নিয়ন্ত্রণে ব্যাংক পরিচালনায় সেচ্ছাচারিতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং প্রতিনিয়তই বিভিন্ন নেতিবাচক ঘটনায় দেশ-বিদেশের সংবাদ মাধ্যমের শিরোনাম হচ্ছে, যা প্রবাসীদের ব্যাংক হিসেবে অগ্রহণযোগ্য ও প্রবাসীদের সম্মানহানির শামিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি এন্ড কাস্টমার সার্ভিসেস ডিভিশন কর্তৃক ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর হতে পরিচালিত বিশেষ পরিদর্শন রিপোর্ট অনুসারে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ৭ উদ্যোক্তার চিঠি পূর্ববর্তী ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ন্যায় আপনার বিরুদ্ধেও যথাযথ বিধি মোতাবেক ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৪, ৪৫ ও ৪৬ ধারা আরোপসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণর অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

চেয়ারম্যান শহীদুল আহসান কর্তৃক তার আত্মীয় এবিএম আব্দুল মান্নানের ছদ্মাবরণে ক্রয়কৃত সকল শেয়ার লক-ইন অবস্থায় ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমালের ব্যবসায়িক পার্টনার ও রিলায়েবল বিল্ডার্সের কর্ণধার শফিকুল আলম মিথুনের অনুকূলে ১.৬৫,৭২,৯৯২টি, এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান আদনান ইমামের স্ত্রী সাদিয়া মোমিন ইমামের অনুকূলে ১,৩৮,৪৫,৯০৪টি ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল আহসানের মেয়ে রেহনুমা আহসানের অনুকূলে ১,৪৫,৮০,৬১৫টি শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রয়সূত্রে হস্তান্তর করা হয়েছে। কোন প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ঘোষিত বাজেয়াপ্তযোগ্য শেয়ার ক্রয়- বিক্রিয়ের প্রস্তাব পর্ষদ সভায় উত্থাপিত করা হয়েছে সেটাও জানতে চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শফিকুল আলমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রিলায়েবল বিল্ডার্সের অনুকূলে এনআরবিসি ব্যাংকের হাতিরপুল শাখা থেকে ব্যাংকের ক্রেডিট পলিসির কোন ধারার ভিত্তিতে বরিশালের আলেকান্দা মৌজায় অবস্থিত মাত্র ৩.০৬ কোটি টাকা (বিক্রয় মূল্য ২.৪৫ কোটি ঢাকা) মূল্যের ৯.৩০ শতাংশ জমিকে সহায়ক জামানত রেখে প্রায় ৪৫০.০০ কোটি টাকার ঋণ ব্যাংক কর্তৃক অনুমোদন করা হয়েছে এবং এই ঋণ বিতরণে পর্ষদ কর্তৃক প্রভাবিত হয়েছেন কিনা যে বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে উদ্দেশ্যে করে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে আপনার ওপর যে পবিত্র দায়িত্ব অর্পন করা করা হয়েছে, তার ভিত্তিতে ব্যাংক কোম্পানি আইন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সংশ্লিষ্ট সিকিউবিটিজ ল’ মোতাবেক ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা, দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ, ঋণ ও অগ্রীম অনুমোদন-বিতরণে সচ্ছতা আনয়ন ও নিয়ম পরিপালনে নিরপেক্ষ ও নিয়মতান্ত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে দায়ি পর্যদ সদস্য ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সবিনয় অনুরোধ করছি।