গানে গানে ৪০ বছর’ জি সিরিজ

সোমবার, মার্চ ৬, ২০২৩

আসলাম ইকবাল: 

দেশের সঙ্গীতাঙ্গনে অন্যতম ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান জি-সিরিজ। অডিও গানের স্বর্ণালি যুগ থেকে এই আধুনিক অন্তর্জালের সময়ে প্রতিষ্ঠানটি ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে শক্ত হাতে। শুক্রবার (৩ মার্চ) সঙ্গীতময় এই পথচলা ৪০ বছর পূর্ণ করেছে। এ উপলক্ষ্যে বিশেষ উদযাপনের আয়োজন করে জি-সিরিজ পরিবার। রোববার (৫ মার্চ) বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিষ্ঠানটির চার দশক পূর্তি অনুষ্ঠান। যেখানে অংশ নেন দেশের সঙ্গীতাঙ্গনের তারকা-কিংবদন্তিরা। ৪১ বছরে পদার্পণ উপলক্ষ্যে সঙ্গীতাঙ্গনে বিশেষ অবদান রাখার জন্য আজীবন সম্মাননা (মরণোত্তর) দেয়া হয় অসংখ্য কালজয়ী গানের স্রষ্টা একুশে পদকপ্রাপ্ত উপমহাদেশের প্রখ্যাত গীতিকার, চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, কাহিনীকার গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে এবং একুশে পদকপ্রাপ্ত লোকসঙ্গীতশিল্পী ফরিদা পারভীনকে। তাদের সন্তানরা এ সম্মাননা গ্রহণ করেন। এর আগে জি-সিরিজ থেকে আজীবন সম্মাননা পেয়েছিলেন প্রখ্যাত সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক, গায়ক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা লাকী আখন্দ। জি-সিরিজের কর্ণধার নাজমুল হক ভূঁইয়া খালেদ বলেন, রেডিও, টিভি, সিনেমা সব মিলিয়েই মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠেছে। এই চল্লিশ বছর চলার পথে অনেক বাধা ও প্রতিকূলতা পেরোতে হয়েছে। মিউজিক পেশা হিসেবে অনেক আপ ডাউন। যেটা করোনার সময়ে ভালোভাবে দেখা গেছে। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে গার্ডিয়ান নেই। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে গেছে, আমরা এমন ইন্ডাস্ট্রি তৈরি করতে পারিনি যে, শিল্পীরা স্বাবলম্বী হতে পারে। তিনি বলেন, কেউ তারকা হয়ে গেলে অন্যজনকে হেল্প করে না। এটা দুঃখজনক। পারলে এই ইন্ডাস্ট্রির মানুষকে সহযোগিতা করুন। এটুকু অবদান প্রত্যেকের রাখা উচিত। যতদিন বেঁচে থাকব, আপনাদের সঙ্গে থাকব।

 

এসময় উপস্থিত ছিলেন সঙ্গীতশিল্পী প্রিন্স মাহমুদ, শেখ সাহেদ, তপু খান, তৌসিফ আহমেদ, এফ এ সুমন, কিশোর পলাশ, এম আই মিঠু, আহমেদ রাজীব, রাইসুল, পিজিত, ফাহিম ফয়সাল, রাজন সাহা, আরমান আলিফ, বেলাল খান, দেবলীনা সুর, নির্মাতা রেজা ঘটক, সোহেল রানা বয়াতি, অভিনেতা ইমতিয়াজ বর্ষণ প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুটা হয় জি-সিরিজের শুরুর স্মৃতিচারণ দিয়ে। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জিয়ন ও তাসনিম। শেষ হয় গানে গানে। উল্লেখ্য, ১৯৮৩ সালে জি-সিরিজ প্রতিষ্ঠা করেন শিল্প অনুরাগী নাজমুল হক ভূঁইয়া খালেদ। তার মেধা, মনন এবং বলিষ্ঠ নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটি এখন দেশের প্রথম সারির একটি প্রযোজনা সংস্থা হিসেবে সুনামের সঙ্গে এগিয়ে চলছে।

জি-সিরিজের নামকরণ করা হয়েছে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত কবিতাগ্রন্থ গীতাঞ্জলির ইংরেজি প্রথম বর্ণ ‘জি’-কে গুরুত্ব দিয়ে। এছাড়া, গায়া, গ্লোবাল ও গ্রাউন্ড এ শব্দগুলোর প্রথম বর্ণ ‘জি’।

প্রতিষ্ঠানটি বাংলা গানের ক্যাসেট/অ্যালবাম, সিডি, ভিসিডি, মিউজিক ভিডিও প্রকাশনাসহ নাটক, টেলিফিল্ম, সিনেমা এবং ভিডিও ডকুমেন্টারির প্রযোজনা-পরিবেশনা করে আসছে।

 

২০০৬ সালে জি-সিরিজ অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘অগ্নিবীণা’ প্রতিষ্ঠা করে। যার নামকরণ করা হয় বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত কবিতাগ্রন্থ অগ্নিবীণা থেকে। পরবর্তীতে ‘জি-টেকনলজিস’, ‘রেডিও জি-বিডি ডটনেট’ জি-সিরিজের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে। এছাড়া ‘নিউজজি টোয়েন্টিফোর ডটকম’ নামের একটি অনলাইন নিউজপোর্টালও রয়েছে তাদের। যেটি ছয় বছর আগে ৩ মার্চই যাত্রা করে। ফলে জি-সিরিজ ও নিউজজির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী একইদিন। সর্বশেষ আরও দুটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান চালু করেছে জি-সিরিজ। এগুলো হলো ই-কমার্স সাইট বিক্রয়বাবা ডটকম ও জি-প্রাইম। ছবি: মোস্তাফিজ মিন্টু।