গুমের সাথে জড়িতদের বিচারের দাবিতে ঠাকুরগাঁওয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ

শনিবার, মে ৩১, ২০২৫

 

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : গুমের সাথে জড়িতদের অবিলম্বে বিচারের দাবিতে ৫ দফা দাবিতে ঠাকুরগাঁওয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল শনিবার শহরের চৌরাস্তায় ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়।

মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের আয়োজনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন অধিকারের ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ও দ্যা নিউজ এজ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি নুর আফতাবুল আলম রুপম, সাংবাদিক ফজলে ইমাম বুলবুল, রফিকুল ইসলাম রাফিক সরকার, বিশিষ্ট সমাজকর্মী মাসুদ আহমেদ সুবর্ন প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা বলেন, মতায় থাকাকালীন সময়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন কর্তৃত্ববাদী সরকার রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে গুমকে ব্যবহার করেছে। পতিত হাসিনার শাসনামলে সারা দেশে বেআইনীভাবে আটক রাখার বন্দিশালা তৈরি করা হয়। এই সব অবৈধ গোপন বন্দিশালায় বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, ভিন্নমতাবলম্বী এবং তথাকথিত “জঙ্গিদের”আটক করে রাখা হতো। বন্দিশালাগুলোতে হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিরোধীতাকারী রাজনৈতিক প্রতিপ এবং ভারতের স্বার্থের বিপে মূলত যাঁরা সোচ্চার ও প্রতিবাদী হতেন তাঁদেরই গুম করে নির্যাতন করা হতো। অনেক গুমের শিকার ব্যক্তি এখনও ফিরে আসেনি, যারা ফেরত এসেছেন তাঁদের অনেককে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে, এবং অনেককে নির্জন সেলে আটকে রাখা হয়েছে। গুমের শিকার ব্যক্তিদের উপর প্রচন্ড শারিরীক এবং মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে এবং গুমের পর অনেকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন। অধিকার গুমের শিকার ব্যক্তিদের ফিরে পাওয়ার দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচীসহ আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে আসছে এবং এই কারণে অধিকার এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানবাধিকার কর্মীরা কর্তৃত্ববাদী হাসিনা সরকার কর্তৃক নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

বক্তারা অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে অধিকার এর প্রকাশ করা ৫ দফা দাবী তুলে ধরে গুমের সাথে জড়িতদের বিচারের দাবি জানান। ৫ দফা দাবিগুলো হলো, গুমের শিকার যে সব ব্যাক্তি ফেরত আসেননি তাঁদের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা জনগনকে জানানো, যে সমস্ত গুমের শিকার ব্যক্তি এখনও ফিরে আসে নাই, তাঁদের স্ত্রী-সন্তানেরা যাতে গুম হওয়া ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব পরিচালনা এবং স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি বেচা এবং ভোগ করতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে, গুমের পর কিছু ব্যাক্তিকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং পরে তাঁদের পাওয়া গেছে। তাই ভারতে আরো গুমের শিকার ব্যাক্তি আছেন কি-না সে বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের প থেকে ভারত সরকারের সাথে কূটনৈতিক পর্যায়ের যোগাযোগ স্থাপন করে তা জানা, যে সমস্ত ব্যক্তি গুমের পর ফেরত এসেছেন, তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এমনকি কাউকে কাউকে মিথ্যা সা্েযর ভিত্তিতে বা নির্যাতন করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করে নিন্ম আদালতকে ব্যবহার করে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছে। এই সমস্ত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং কারাগার থেকে মুক্তি দিতে হবে, গুমের সঙ্গে জড়িত সকল ব্যক্তিকে আইনের আওতায় এনে তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচার করতে হবে।