
শহীদ আহমদ খান।।
চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা ও অগ্নিদগ্ধ হয়ে ১৬জন শ্রমিকদের মৃৃত্যুর প্রতিবাদ জানিয়ে এবং অবিলম্বে জাতীয় নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন করে আইনী সুরক্ষা দিয়ে জাতীয় নিম্নতম মূল মজুরি ৩০ হাজার টাকা ঘোষণা, আইএলও কনভেনশন ৮৭ ও ৯৮ অনুযায়ী অবাধ ট্রেড অধিকার ও কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তাসহ ১০ দফা দাবিতে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সিলেটেও পালিত। ১৭ অক্টোবর বিকেল ৪টায় সুরমা পয়েন্টে জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ মিছিল শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কোর্ট পয়েন্টে গিয়ে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সরকারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. ছাদেক মিয়ার পরিচালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রমিকনেতা রজত বিশ্বাস, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা কমিটির দপ্তর সম্পাদক রমজান আলী পটু, জাতীয় ছাত্রদল সিলেট জেলা আহবায়ক শুভ আজাদ শান্ত, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইমান আলী, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সুনু মিয়া (সাগর), সিলেট সদর উপজেলা স’মিল শ্রমিক সংঘের সভাপতি হজর আলীসহ প্রমুখ। নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে না পারলেও মার্কিন সা¤্রাজ্যবাদের দালাল বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার চট্টগ্রাম বন্দর নিরাপদে বিদেশীদের নিকট ইজারা প্রদানের অংশ হিসেবে বন্দর এলাকায় সকল ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে। শুধু তাই নয় এই সরকার প্রভু সা¤্রাজ্যবাদকে খুশি করতে তারই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মানবিক করিডোর প্রদান, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপন, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমোরিং কনটেইনার টার্মিনাল মার্কিন স্বার্থরক্ষাকারী ডিপি ওর্য়াল্ডকে ইজারা প্রদান, স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট চালু, মার্কিন সেনা উপস্থিতি, ধারাবাহিক মার্কিন সেনাবাহিনীর মহড়া ও প্রশিক্ষণ তৎপরতা, মার্কিনের পক্ষে যুদ্ধে সম্পক্ত করা, আইপিস প্লাসে যুক্ত করা ইত্যাদি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র, আইনস্বীকৃত কর্মঘন্টা ও ছুটি, মাতৃত্বকালীন সুবিধা ও ক্ষতিপূরণসহ শ্রমআইনের স্বীকৃত অধিকার অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকরা ভোগ করতে পারছে না। রপ্তানিমুখী প্রাতিষ্ঠানিক খাতগুলোতে শ্রমআইন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দেশি-বিদেশী নজরদারী থাকা সত্তে¡ও শ্রমআইনকে পাশ কাটিয়ে শ্রমিকদের উপর তীব্র শ্রম শোষণ ও নির্যাতন চালানো হচ্ছে। দেশে জাতীয় মজুরি বোর্ড ও মজুরি নির্ধারণের দিকনির্দেশনা না থাকায় সর্বজনীন মজুরিও কার্যকরী নেই। একজন শ্রমিক ও তার পরিবারের (৬ সদস্য হিসেব ধরে) প্রতিদিনের, প্রতি সপ্তাহের, প্রতি মাসের প্রকৃত মজুরি নিম্নতম মজুরি ধরে মূল মজুরির অর্ধেক বাড়িভাড়া এবং যাতায়াত ও চিকিৎসা বাবদ প্রয়োজনীয় খরচ যুক্ত করে মোট মজুরি নির্ধারণ করার বিষয়টি কার্যকরী করা হয় না। বর্তমান নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি, গাড়িভাড়া, বাড়িভাড়া, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ জীবন জীবিকার সকল ব্যয় হিসেব করলে ৬ সদস্যের একটি শ্রমিক পরিবারে ন্যূনতম ৩০ হাজার টাকা মূল মজুরি হওয়া প্রয়োজন।
সমাবেশ থেকে জাতীয় ন্যূনতম মূল মজুরি ৩০ হাজার টাকা ঘোষণা, অনতিবিলম্বে সকল বন্ধ কল-কারখানা চালু, রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নতুন শিল্প-প্রতিষ্ঠান স্থাপন, সিলেট টেক্সটাইল মিল চালু, সভা-সমাবেশ-ধর্মঘট করার অধিকার সহ সর্বস্তরে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানান।