
জাতির সংবাদ ডটকম।।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, জলবায়ু অর্থায়ন প্রশমন ও অভিযোজন খাতে সমানভাবে বণ্টন করতে হবে, যাতে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী প্রয়োজনীয় সহায়তা পায়। তিনি বলেন, জলবায়ু ঝুঁকি কার্যকরভাবে মোকাবিলায় প্রকল্পগুলোর অগ্রাধিকার স্পষ্ট করা জরুরি এবং প্রতিটি পদক্ষেপ হতে হবে ন্যায্য।
আজ বিকেলে রাজধানীর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সমন্বিত জলবায়ু অর্থায়ন বিষয়ে বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ (বিসিডিপি) বোর্ডের প্রথম সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
জাতীয় জলবায়ু কার্যক্রমে বিসিডিপির গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, বিসিডিপি নীতি, পরিকল্পনা, অর্থায়ন ও বাস্তবায়ন কার্যক্রমে সমন্বয়ের একটি জাতীয় প্ল্যাটফর্ম। তিনি সরকারি সংস্থা ও বেসরকারি খাতের পাশাপাশি সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশনসের (সিএসও) সম্পৃক্ততার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। উপদেষ্টা বলেন, সিএসওরা সরাসরি জনগণের কাছে পৌঁছাতে পারে এবং স্থানীয় পর্যায়ে কার্যকর উদ্যোগ বাস্তবায়নে বড় ভূমিকা রাখতে সক্ষম। তিনি আরও বলেন, মন্ত্রণালয়গুলোর প্রকল্প উন্নয়ন সক্ষমতা বাড়াতে হবে, যাতে আন্তর্জাতিক তহবিল সহজে পাওয়া যায়।
পরিবেশ উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, জলবায়ু পরিবর্তন কেবল পরিবেশগত সমস্যা নয়—এটি উন্নয়ন, অর্থনৈতিক ও অস্তিত্বের চ্যালেঞ্জ। প্রশমন খাতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বনায়ন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে জরুরি অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত করেন তিনি। অভিযোজন কার্যক্রমে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, প্রাকৃতিক খাল পুনরুদ্ধার এবং উপকূলীয় জেলাগুলিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা জোরদার করতে হবে।
মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। এছাড়া পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদসহ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা বিভাগ, কৃষি মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিববৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউয়ুন জিয়ং এবং ঢাকাস্থ সুইডেন দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন নায়োকা মার্টিনেজ ব্যাকস্ট্রম সভায় উপস্থিত ছিলেন। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, এডিবি ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও সভায় যোগ দেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে বিসিডিপির মূল বিষয়গুলো উপস্থাপন করেন।
সভায় বিসিডিপির অগ্রগতি, বোর্ড ও ওয়ার্কিং গ্রুপের টার্মস অব রেফারেন্স সংশোধন, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক অর্থায়ন, সচিবালয় প্রতিষ্ঠা এবং অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক ও কার্যকরী বিষয় নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়।