ডাকসু নির্বাচন পরিচালনায় বাধা নেই, চালানো যাবে প্রচারণাও

সোমবার, সেপ্টেম্বর ১, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।

হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার বিকেলে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এ আদেশ দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ আসে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। ফলে এই মুহূর্ত থেকে ডাকসু নির্বাচন আয়োজনে কোনো বাধা নেই।

এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট মনোনীত জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বামজোট মনোনীত প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বিএম ফাহমিদা আলম একটি রিট দায়ের করেন।

রিটে অভিযোগ করা হয়, এস এম ফরহাদ ৫ আগস্ট, ২০২৪ এর আগে ছাত্রলীগের কমিটিতে ছিলেন, তাই তার প্রার্থিতা বৈধ নয়।

এই রিটের শুনানি শেষে সোমবার বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে হাইকোর্টের বিচারপতি হাবিবুল গণি ও বিচারপতি এস কে তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ডাকসু নির্বাচনের প্রক্রিয়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকার কার্যক্রম আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করেন। আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া শুনানি করেন।

এই আদেশের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির তাৎক্ষণিকভাবে আপিল করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতের জন্য আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে একটি হাতে লেখা আবেদন (সিএমপি) জমা দেন।

এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। ফলে ৯ সেপ্টেম্বরের নির্ধারিত ভোটগ্রহণের প্রক্রিয়া আবারও শুরু হতে পারবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষের আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে তারা আপিল বিভাগে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ আবেদন দাখিল করবেন এবং আশা করা হচ্ছে সেদিনই এর শুনানি হবে।

শিশির মনির জানান, ডাকসুর অনেক প্রস্তুতি শেষ হয়ে গেছে। ২৬ তারিখে ফাইনাল প্রার্থিতা ঘোষণা করা হয়েছে। তারপর ২৭, ২৮, ২৯,৩০ এবং ৩১ আগস্ট পাঁচদিন চলে গেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন প্রক্রিয়া যদি স্থগিত থাকে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মনে করছে, তাহলে ছাত্রদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, এটাকে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু মনে করে আমরা এরইমধ্যে আবেদন করার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের ইনস্ট্রাকশন দিয়েছেন। আশা করি, আজ অথবা আগামীকাল আইনি পদক্ষেপ দেখতে পারবেন।

উল্লেখ, ডাকসুর ভোটগ্রহণের জন্য আগামী ৯ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য রয়েছে। শিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে সাদিক কায়েম ভিপি ও জিএস পদে এস এম ফরহাদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ডাকসু নির্বাচনে চূড়ান্ত প্রার্থীর সংখ্যা ৪৭১। গত ২৬ আগস্ট প্রকাশিত চূড়ান্ত চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী, সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৯ জন এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। সবচেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে সদস্য পদে। এবার মোট ২১৭ জন প্রার্থী সদস্য পদে লড়বেন। সবমিলিয়ে ২৮টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যাচ্ছেন ৪৭১ জন প্রার্থী।