“ডা. লকিয়ত উল্লাহর আক্রোশের শিকার প্রবাসী শিপনের পরিবার

সোমবার, জুন ১৯, ২০২৩

জাতির সংবাদ ডটকম।। লন্ডনে জাহান কবির শিপন নামে এক বাংলাদেশি প্রবাসীর বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলের অভিযোগ উঠেছে বায়োফার্মার ডিএমডি ডা. লকিয়ত উল্লাহর বিরুদ্ধে।

 

আজ সোমবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলরুমে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগ করেন শিপনের মা মনোয়ারা বেগম।

 

তিনি বলেন, ‘বায়োফার্মা লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. লকিয়ত উল্লাহর আক্রোশের শিকার হয়ে আজ দুটি পরিবার পথে বসার উপক্রম। ডা. লকিয়ত উল্লাহ ও তার স্ত্রী ইতোমধ্যেই লন্ডনে আমার ছেলের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করেছে।’

 

অভিযোগে তিনি আরও বলেন, ‘ডা. লকিয়ত উল্লাহর অবৈধ টাকা ও ক্ষমতার জোরে তিন সন্তানসহ আমার ছেলে ও তার স্ত্রী দেশে এলে তাদের দফায় দফায় নাজেহাল করে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছে। প্রশাসনের কাছে সে অভিযোগ করায় ডা. লকিয়ত উল্লাহ এখন আমার পরিবারের লোকজনের নামে বেনামে অসংখ্য মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। পথেঘাটে তাদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে লকিয়ত উল্লাহর গুন্ডাবাহিনী।

 

মনোয়ারা আরও বলেন, ‘আমার ছেলে শিপন ২০০৮ সালে লন্ডনে উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য যায়। লেখাপড়া শেষে সে সেখানেই ব্যবসা বাণিজ্য করে স্থায়ী হয়। কঠোর পরিশ্রম করে শিপন লন্ডনে ব্যবসা বাণিজ্যে ভালো অবস্থান গড়ে তোলে। পরে দেশে বিয়ে করে বউকেও লন্ডন নিয়ে যায়। গত ১৫ বছরে আমার ছেলে লন্ডন থেকে বাংলাদেশে কয়েক কোটি টাকা রেমিটেন্স পাঠিয়েছে। যা আমাদের পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের চলার পথ অনেক সহজ করেছে। সব মিলিয়ে ছেলে মেয়ে নাতি-নাতনি নিয়ে আমার ১১ সন্তানের সংসার আনন্দ খুশিতে ভরপুর ছিল।’

 

তিনি বলেন, ‘২০২০ সালে করোনা মহামারির মধ্যে হঠাৎ করে আমার স্বামীর পূর্ব পরিচিত একজন ছাত্র ডা. লকিয়ত উল্লাহ আমাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ায়। যার বাড়ি আমার স্বামীর এলাকাতেই। এর কিছুদিন পর ডা. লকিয়ত উল্লাহ তার ব্যবসায়িক কাজের জন্য স্ত্রী সন্তানসহ লন্ডন যায়। সেখানে গিয়ে সে টানা ৮/১০ দিন আমার ছেলে শিপনের বাসায় ওঠে। এরপর সে দেশে এসে আমাদের পরিবারের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখে ও আসা যাওয়া করে।’

 

শিপনের মা আরও বলেন, ‘২ বছর পর ২০২২ সালে এপ্রিলে পুনরায় লন্ডন যায় ডা. লকিয়ত উল্লাহ ও তার স্ত্রী সন্তান। মূলত লতিয়ত উল্লাহর স্ত্রীর ব্রেস্ট ক্যান্সার ধরা পড়ায় তারা চিকিৎসার জন্য সেবার লন্ডন গিয়েছিল বলে আমরা জানতাম। এবারও লকিয়ত উল্লাহ ও তার পরিবার আমার ছেলের বাসায় গিয়ে ওঠে। যেহেতু চিকিৎসা করতে গিয়েছে, তাই আমার ছেলেও তার বাবার ছাত্র হিসেবে লকিয়ত উল্লাহর স্ত্রীর চিকিৎসার যাবতীয় দিক তদারকি করতে থাকে। চিকিৎসার সব খরচ ও তাদের খাওয়া দাওয়ার যাবতীয় খরচ বহন করে।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘চিকিৎসা শেষ হলেও ডা. লকিয়ত উল্লাহ ও তার স্ত্রী সন্তান আমার ছেলে বাসা থেকে নামছিল না। উল্টো লকিয়ত উল্লাহ তার সন্তানদের আমার ছেলের বাসার ঠিকানা ব্যবহার করে লন্ডনের স্থানীয় স্কুলে ভর্তি করায়। এমনকি লকিয়ত উল্লাহ আমার ছেলের অনুমতি ছাড়া তাকে গ্যারান্টার হিসেবে দেখিয়ে তার স্ত্রীর জন্য লন্ডন সরকারের কাছে এসাইলাম ক্লেইম বা রাজনৈতিক আশ্রয় দাবি করে। রাজনৈতিক আশ্রয়ে ডা. লকিয়ত উল্লাহ লন্ডন সরকারের কাছে নিজেকে জামায়াত নেতা হিসেবে দাবি করে বাংলাদেশে তার স্ত্রী সন্তানের জীবনের ঝুকি রয়েছে বলে উল্লেখ করে।’

 

প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্য চেয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মত নির্যাতিত একজন মায়ের আহাজারি নিশ্চয়ই প্রধানমন্ত্রী বুঝবেন। আমি লকিয়ত উল্লাহর অত্যাচার থেকে মুক্তি চাই। স্বামীহারা অবস্থায় দুই সন্তান নিয়ে একটু সুখে বসবাস করতে চাই। লন্ডনে অবস্থানরত আমার সন্তান যেন নিরাপদে দেশে ঘুরে যেতে পারেন, সেই ব্যবস্থা চাই।’