ঢাকাস্থ জাতিসংঘ অফিসে এবি পার্টি নেতৃবৃন্দ

শনিবার, আগস্ট ১০, ২০২৪

 

জাতির সংবাদ ডটকম।।

জাতিসংঘের অধীনে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সাম্প্রতিক গণহত্যায় দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান এবি পার্টির।

 

আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) নেতৃবৃন্দ আজ শনিবার সকালে জাতিসংঘ বাংলাদেশ মিশনের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইসের সাথে তাঁর ঢাকাস্থ অফিসে সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেন। সম্প্রতি গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ ও চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে ন্যায়বিচার, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি দুর করার বিষয়সহ আলোচনায় নানা প্রসঙ্গ স্থান পায়। আলোচনাকালে এবি পার্টি নেতৃবৃন্দ সম্প্রতি জুলাই এবং আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার স্বতস্ফূর্ত অভ্যুত্থানের সময় শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশে যে গণহত্যা ও চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে তার সুষ্ঠু তদন্ত প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানায়।

দলের সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। দলের যুগ্ম আহ্বায়ক বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ ও ব্যারিস্টার জুবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া এবং এবি পার্টি উইমেন-এর ইনচার্জ ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি প্রতিনিধিদলে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। জাতিসংঘের সিনিয়র মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খান সমন্বয়কারী গোয়েন লুইসের সাথে আলোচনাকালে উপস্থিত ছিলেন।

এবি পার্টি নবগঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্বাগত জানানোর বিষয়ে ইউএন আরসিকে অবহিত করে এবং সরকারের দায়িত্বের পরিধি ও চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে কথা বলে।

এবি পার্টি বিশ্বাস করে যে, জুলাই এবং আগস্টে তৎকালীন সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের প্রত্যক্ষ নির্দেশে বাংলাদেশে সবচেয়ে জঘন্যতম গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। এর অবশ্যই পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করা উচিত এবং সমস্ত অপরাধীদের জবাবদিহি ও বিচারের আওতায় আনা ন্যায়বিচারের স্বার্থে একান্ত আবশ্যক। তারা বলেন, আমরা চাই জাতিসংঘ এই তদন্তে সর্বাত্মক সহায়তা ও নেতৃত্ব দিক। পাশাপাশি বাংলাদেশের অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদার এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলিও এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে ক্রমান্বয়ে ২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত দেশে যত গুম, খুন, আইন বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংগঠিত হয়েছে তারও বিচার প্রক্রিয়া নিরপেক্ষ উপায়ে হওয়ার পথ তৈরী হোক।

 

এবি পার্টি প্রতিনিধি দল বছরের পর বছর ধরে দেশ যে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে চলছে তা নিয়ে কথা বলেন। তারা বলেন, আমাদের আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা আনতে অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত কিছু সিদ্ধান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুনরুদ্ধার করা খুবই জরুরি। বিভিন্ন কারাগার এবং ব্যারাকে বিদ্রোহের মতো পরিস্থিতি স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সমাধান করা দরকার। সাইবার-ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট এর মত বিতর্কিত এবং দমনমূলক আইনগুলোকে মানবাধিকারের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ করার জন্য বাতিল বা সংশোধন করা উচিত।

এবি পার্টি প্রয়োজনীয় জনসেবা নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারের প্রতিও গুরুত্ব দিতে হবে বলে আলোচনায় মত ব্যক্ত করেন। কোনো বিচারিক ষড়যন্ত্রমূলক অভ্যুত্থান এড়াতে বিচার বিভাগকে দুর্নীতিবাজ ও স্বৈরশাসকের-অনুগত প্রভাবমুক্ত করা জরুরি বলে তারা অভিমত জানান। দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক আমলাতন্ত্রও আগের শাসনামলে তাদের পক্ষপাতমূলক ভূমিকার জন্য নৈতিকভাবে দূর্বল হয়ে পড়েছে বলে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এবি পার্টি নেতৃবৃন্দ সকল রাজনৈতিক দলকে ধৈর্য ও সহনশীলতার সাথে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যক্রমকে পর্যবেক্ষণ ও সহযোগিতার বিষয়ে কাজ করতে তাদের দলীয় সমন্বয় এবং অঙ্গীকারের কথা ব্যক্ত করেন।