স্টাফ রিপোর্টার : বছরের পর বছর নানান অপকর্ম আর লুটপাটের পথে কাটা হয়ে দাঁড়ানোয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হারুনুর মোল্লাহ’র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তথ্য প্রদান করে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করতে সক্ষম হলেও গোটা পরিকল্পনাটি ভেস্তে গেছে। ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)কে জড়ানোর মাধ্যমে তাকে হেয় প্রতিপন্ন ও ক্ষতিগ্রস্ত করার হাতিয়ার হিসেবে নানান অনিয়মের বিষয়টি ইতোমধ্যে বিচারাধীন থাকায় এবং ভিত্তিহীন বিভ্রান্তিকর তথ্যের মাধ্যমে এমনকি খোদ প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় তিতাস গ্যাস এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড কোম্পানীর পক্ষ থেকে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত “বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়র মাননীয় মন্ত্রীর (মাননীয় প্রধানমন্ত্রী) নাম ব্যবহার করে উৎকোচ গ্রহণ করত: শিল্প প্রতিষ্ঠানে তিতাস গ্যাস -এর সংযোগ প্রদানসহ নানাবিধ অনিয়ম” খবরের বিপরীতে তিতাস গ্যাস টি এন্ড ডি কো. লিঃ -এর বক্তব্য নিম্মরুপ ঃ
যে কোন শিল্প প্রতিষ্ঠানে গ্যাস সংযোগ প্রদানের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সংযোগ প্রদান করা হয়। এক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করার সংবাদটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার।
উল্লেখ্য যে, অক্টোবর/২০২১ হতে আগষ্ট/২০২৩ পর্যন্ত অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার ও বকেয়ার কারণে আবাসিক ৬,৬৯,৪৮৬টি বার্ণার, ৫১৫টি শিল্প, ৫২৯টি বাণিজ্য, ১৭৯টি ক্যাপটিভ ও ৫৪টি সিএনজি গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে এবং ৭৪৪.৪১ কি.মি. অবৈধ পাইপ লাইন অপসারণ করা হয়েছে। অক্টোবর/২০২১ হতে জুন/২০২৩ পর্যন্ত অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মোট ৪০৪.০৬ কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে। অবৈধ গ্যাস সংযোগের বিরুদ্ধে তিতাস গ্যাস কর্তৃক পরিচালিত এই অভিযানে যাদের স্বার্থহানি হয়েছে, সে সব স্বার্থান্বেষী মহল বা ব্যক্তি উদ্দেশ্যমূলকভাবে তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে এ ধরনের অপপ্রচার চালাতে পারে। এছাড়া, সংবাদে উল্লিখিত বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করা হচ্ছে।” বিজ্ঞপ্তিটি কুচক্রী সিন্ডিকেড চক্রের ফায়দা হাসিলের পরিবর্তে চপেটাঘাত হিসেবে দেখা দিয়েছে।
তিতাস সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র নাম না প্রকাশের শর্তে জানিয়েছে হারুনুর রশিদ মোল্লাহ ২০২১ সালে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান। দ্বিতীয় দফায় আরো এক বছরের জন্য নিয়োগ পাওয়া হারুনুর রশিদ মোল্লাহ বছরের পর বছর অনিয়ম লুটপাটের একটি সংঘবদ্ধ চক্রের জন্য কাল হয়ে দাড়ান। তিনি দক্ষতার সাথে তিতাসের দীর্ঘদিনের কতিপয় অনিয়ম কঠোর ভাবে দমন করেন। এতেই দুর্নীতিবাজ চক্রটির চক্ষু শূলে পরিণত হন হারুনুর রশিদ মোল্লাহ। তার কৃতিত্বের জন্য তৃতীয়বারের মতো দায়িত্ব পাওয়ায় চিহ্নিত চক্রটির মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। তারা মরিয়া হয়ে এমডির বিরুদ্ধে নানান ষড়যন্ত্রসহ উদ্দেশ্যপ্রনোদিত সংবাদ প্রকাশের উদ্যোগ নেয়। চক্রটির দেয়া তথ্যে প্রকাশিত সংবাদে পরোক্ষভাবে যেমনি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে জড়ানো হয়েছে তেমনি চলমান তদন্তাধীন একটি বিষয়কে নানানভাবে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তোলা হয়েছে। সংবাদটি প্রকাশ এবং তৎপরবর্তী তিতাসের সন্ত্রকীকরণ নোটিশের পর সিন্ডিকেটের নেপথ্য নায়কসহ গোটা চক্রটি যেন নির্বাক বোবা হয়ে গেছে। এদিকে প্রকাশিত সংবাদের জের ধরে সামগ্রিক বিষয়টি জানতে সংশ্লিষ্ট অভিযোগকারী আব্দুল লতিফসহ একাধিক ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। একজন সংবাদের বিষয়ে জানতে চাইলে এড়িয়ে যান।
এসব ব্যপারে জানতে চাইলে এমডি হারুনুর রশিদ মোল্লা জানান, অবৈধ গ্যাস সংযোগের বিরুদ্ধে তিতাস গ্যাস কর্তৃক পরিচালিত এই অভিযানে যাদের স্বার্থহানি হয়েছে, সে সব স্বার্থান্বেষী মহল বা ব্যক্তি উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে। এসব ব্যাপারে আমার উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। এ সময় আক্ষেপ করে হারুনুর রশিদ মোল্লা সাংবাদিকদের বলেন, অপপ্রচার চালিয়ে গণমাধ্যমে আমাকে জড়িয়ে তিতাস গ্যাস নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে সরকারের সাফল্য ম্লান করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে সামাজিক ভাবে হেয় করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আমার কর্মময় জীবনে আমি নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। এ বিষয়ে তিনি তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি কর্মকর্তা কর্মচারীসহ সকলকে সতর্ক থাকার আহব্বান জানান।