মোঃ ইসমাইল হোসেন ।।
বাজারে মুগরির দাম যেভাবে বেড়েই চলছে। যা দিনমজুরদের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে। সাধারণ ক্রেতারা যতোটুকু মুরগির স্বাদ নিতে পারছেন কিন্তু দিনমজুরের জন্য সেটা হাতের নাগালে। গত সপ্তাহে ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগি ৩০ টাকা বেড়ে ২৩০ টাকা কেজি আর সোনালি মুরগিতে ৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। পাড়া মহল্লায় মুরগির দাম বাজার থেকে কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা বেশি।
দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রেতারা ইচ্ছেকৃতভাবে অধিক মুনাফা লাভের আশায় মুরগীর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। কেউ পাইকারি ব্যবসায়ীদের দায়ি করছেন। কেউ বলছেন এজন্য ব্যবসায়ী সিন্ডিকরাই দায়ি। চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমনটাই জানা গেল। দাম বেশি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ক্রেতারাও। তাদের অভিযোগ, স্থানভেদে ব্রয়লার মুরগী কেজিপ্রতি ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় অধিকাংশ মুরগীর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি কেজি ২১০-৩৫০ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন জাতের মুরগী বিক্রি করা হচ্ছে। যা সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার বাহিরে। আর দিনমজুরের ক্ষেত্রে আরো বেশি কষ্টকর।
ব্রয়লার মুরগি বিক্রেতা দুলাল আহমেদ মিডিয়া ভয়েসকে বলেন দুইবার দুই এলাকায় বন্যা হইলো। শেষে উত্তরবঙ্গের বন্যায় বেশি সমস্যা হইছে। এতে ছোট খামারি যারা ছিল, তারা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইছে। এজন্যই দাম বাড়ছে। তাই তো মুরগির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে গেছে।
দিনমজুরি করে খেটে খাওয়া এক শ্রমিক বলেন, ‘আমার বাচ্চাটা মুরগী খাওয়ার জন্য কান্নাকাটি করতেছে, বাজারে এসে দেখি মুরগীর দাম চওড়া। এতো দাম দিয়ে মুরগি কেনা আমার মতো দিনমজুরের পক্ষে অসম্ভব। যখন দাম কম ছিল, কষ্ট করে হলেও মাঝেমধ্যে বাচ্চার জন্য কেনা সম্ভব হতো। কিন্তু এখন আর পারছি না।
মুরগি কিনতে আসা দিনমজুর হাশেম বলেন, ২২০-২৫০ টাকায় ব্রয়লার মুরগী না কিনে ১ কেজি মুরগীর হাত-পা কিনেছি; তাও ১৫০ টাকা কেজিতে। আমাদের মতো খেটে খাওয়া মানুষের রাতে শান্তিতে ঘুম হয় না। শুধু মুরগিরই নয়। বাজারে শাকসবজি, মাছ, মাংসের দামও আকাশচুম্বী বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আজ খাচ্ছি। পরের দিন কী খাবো, সেটা ভাবতে ভাবতে চিন্তায় রাত পোহাতেই সকাল হয়ে যায়।
মুরগি কিনতে আসা আরেক শ্রমিক বলেন, আমরা গরীব, আমাদের স্বস্তি নেই। বেশি দাম দিয়ে অন্যরা মুরগি কিনে খেতে পারছেন। কিন্তু আমাদের মতো অসহায় মানুষের আহাজারি কারো কান অব্দি পোঁছাবে না। যেভাবে জিনিসপত্রের দাম বেশি। খাবো কি! আমাদের দেখার, খোঁজ-খবর নেওয়ার কেউ নেই। দিনে এনে দিনে খাই, অভাবে দিন যায়।
শুধু চট্রগ্রামেই নয়। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাজারগুলোতে সিন্ডিকেটের কারণে দ্রব্যমূল্যের দাম আকাশচুম্বী হয়ে গেছে বলে ক্রেতাদের অভিযোগ। আবার অনেকেই বন্যা কিংবা সরকার পটপরিবর্তনকেও দায়ি করছেন। সরকারের পটপরিবর্তনের সুযোগে অনেক অসাধু ব্যবসায়িরা সরকারকে বিব্রত করতেই নিত্যপণ্যের বাজারকে অস্থির করে রেখেছেন বলে অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগী ক্রেতারা।