ইসলামী ব্যাংক ও এস আলম গ্রুপকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং সারাদেশে পোস্টার লাগিয়ে গুজব ছড়িয়েছে জামায়াত শিবিরের একটি চক্র। এমনটাই জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবি জানায়, চক্রটি দেশ ও বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা নেই, রিজার্ভ নেই, তাই ব্যাংক থেকে আমানত তুলে ফেলার মতো বিভিন্ন গুজব রটাচ্ছে।
সোমবার (৯ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় মিন্টো রোডে অবস্থিত ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ।
হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেপ্তার আসামিরা দেশে ও বিদেশে বসে গুজব ছড়িয়েছে। পাশাপাশি তাদের সহযোগীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাংকিং খাত নিয়ে গুজব ছড়িয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি তারা প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠাতে অনুৎসাহিত করছে। চক্রের সঙ্গে জড়িত অনেকের নাম পেয়েছি। এই চক্রের সঙ্গে ইসলামী ব্যাংকের সাবেক পরিচালকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা জড়িত রয়েছেন। আমরা সবার নাম পেয়েছি, দ্রুতই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
তবে এই চক্রের সদস্যরা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, জামায়াত-শিবিরের কর্মী-সমার্থকরা ছাড়া অন্য কোনো দলের সম্পৃক্ততা এখনো পাওয়া যায়নি।
গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হওয়ার বিষয়টি একটি গুজব। আতঙ্কিত হয়ে ব্যাংক থেকে আমানত উত্তোলন থেকে বিরত থাকতে হবে।
হারুন অর রশীদ বলেন, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড দেশের একটি স্বনামধন্য ব্যাংক। ব্যাংকটি এক সময় যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডে দণ্ডিত মীর কাশিম আলীসহ স্বাধীনতা বিরোধীদের দখলে ছিল। ব্যাংকটি পরবর্তীতে স্বাধীনতা বিরোধীদের দখল থেকে মুক্ত হলে স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত-শিবির চক্র ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা নিয়ে অপপ্রচার চালাতে থাকে। দেশবিরোধী চক্রটি সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাংকিং খাত নিয়ে আস্থার সংকট তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছিল।
তিনি বলেন, এই চক্রের মূল উদ্দেশ্য দেশের আর্থিক খাতকে অস্থিতিশীল করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলা। তারা এস আলম গ্রুপসহ স্বনামধন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানদের নামে ব্যাংকিং সংক্রান্ত মিথ্যা অপপ্রচার ও প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে। ব্যাংকিং খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হচ্ছে বলে অপপ্রচার চালালেও পরবর্তীতে এর পরিপ্রেক্ষিতে কোনো ধরনের সাক্ষ্য প্রমাণ তারা দিতে পারেনি। তারা প্রবাসীদের রেমিট্যান্স না পাঠানোর বিষয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাবে, ব্যাংকে টাকা নেইসহ নানা গুজব রটানোর কাজে জড়িত। এসব গুজবের বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন থাকার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিভিন্ন সময় পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
সম্প্রতি ব্যাংকিং খাত নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে রাজধানীর গুলশান থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগের সোশ্যাল মিডিয়া ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।