
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এসে গণপিটুনি ও মবের শিকার রিকশাচালক আজিজুর রহমানকে জুলাই আন্দোলনের হত্যাচেষ্টা মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইশরাত জেনিফার জেরিনের আদালত জুলাই আন্দোলনের একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
রিকশাচালক আজিজুর রহমানকে আদালতে হাজির করে কারাগারে রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধানমন্ডি থানার উপপরিদর্শক মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমান।
আবেদনে বলা হয়, মামলার ঘটনার সময় প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী এবং বাদীকে জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামি মো. আজিজুর রহমানের (২৭) মামলার ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। আজিজুর রহমান ধানমন্ডি-৩২ এ সাধারণ জণগণের হাতে আটক হওয়ায় সময় ধস্তাধস্তিতে সামান্য আঘাত পান। মামলা তদন্তের স্বার্থে আসামিকে জেলহাজতে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন।
আসামির পক্ষে আইনজীবী জামিন চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৪ আগস্ট রাজধানীর ধানমন্ডি থানাধীন নিউমার্কেট থেকে সায়েন্সল্যাব এলাকার মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন ভুক্তভোগী মো. আরিফুল ইসলাম। ঘটনার দিন দুপুর আড়াইটায় আসামিরা গুলি, পেট্রোল বোমা ও হাতবোমা নিক্ষেপ করে। গুলি ভুক্তভোগীর পিঠে ঢুকে গেলে তাৎক্ষণিক পড়ে যান। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২ মাস চিকিৎসা শেষ সুস্থ হন। এ ঘটনায় এ বছরের ২ এপ্রিল রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন আরিফুল।
গতকাল শুক্রবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে এক রিকশাচালক ফুল দিতে আসেন।
ধানমন্ডিতে মারধরের পর তাকে পুলিশের কাছে তুলে দেওয়ার আগে কাঁদতে কাঁদতে ওই রিকশাচালক বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি ভাই। আমি একটা ফুলের তোড়া কিনছিলাম শাহবাগ থেকে ৪০০ টাকা দিয়ে ভাই। আমার বহুত কষ্টের টাকা। আমি সারাদিনে এই টাকাটা ইনকাম করছি। আমি শুধু বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসি তার কারণে। আমি কোনো রাজনীতি বা দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত না ভাই।’
এ সময় উপস্থিত কয়েকজন তার রিকশাটিও ভাঙচুরের চেষ্টা করেন। রিকশা রেখে পালানোর চেষ্টা করলে কয়েকজন তাকে মারধর করে। পরে পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়।