আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে লন্ডনের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নিজের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। যুক্তরাজ্যের একটি স্বাধীন তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে তদন্ত করবে বলে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
ব্রিটেনের মন্ত্রিসভার সদস্য টিউলিপ ইকোনমিক সেক্রেটারি টু দ্য ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার কাজ যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেওয়া। অথচ তার নিজের বিরুদ্ধেই এখন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, লন্ডনে টিউলিপকে একটি ফ্ল্যাট দিয়েছিলেন আবদুল মোতালিফ নামের এক আবাসন ব্যবসায়ী। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীর সঙ্গে তার বেশ ঘনিষ্ঠতা ছিল। টিউলিপ ২০০৪ সালে কোনো ধরনের অর্থ প্রদান না করেই লন্ডনের কিংস ক্রসের কাছে দুই বেডরুমের একটি অ্যাপার্টমেন্ট গ্রহণ করেছিলেন বলে জানা গেছে।
এদিকে নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের আহ্বান জানিয়ে ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার অব মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস লাউরি ম্যাগনাসের কাছে চিঠি লিখেছেন টিউলিপ। টিউলিপ কোনো বিধি লঙ্ঘন করেছেন কি না তা তদন্ত করা হবে।
লাউরি ম্যাগনাসের কাছে লেখা চিঠিতে টিউলিপ লিখেছেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তিনি গণমাধ্যমের খবরের বিষয়বস্তু হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে আনা অনেক অভিযোগই সঠিক নয়। তিনি লিখেছেন, আমি ভুল কিছু করিনি। তবে সন্দেহ এড়ানোর জন্য আমি চাই এই বিষয়গুলো নিয়ে স্বাধীনভাবে তদন্ত করা হোক।
এর আগে বাংলাদেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ৪০০ কোটি পাউন্ড আত্মসাৎ করেন এমন অভিযোগে ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ টিউলিপ সিদ্দিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা।
পাবনার রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র নির্মাণে প্রায় ৪০০ কোটি পাউন্ড অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে।
এতে নাম উঠে আসে শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে এবং ব্রিটিশ লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকসহ তার পরিবারের পাঁচজন সদস্যের। বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদের মধ্যে অন্যতম। তবে সে সময়ও টিউলিপ সিদ্দিক তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
২০১৩ সালে বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছিলেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। তিনিসহ বাকি যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তারা নিজেদের স্বার্থে ওই প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ধরেছিলেন।
একটি সূত্র জানিয়েছে, ব্যবসায়ী আবদুল মোতালিফের জীবনের কঠিন সময়ে তাকে আর্থিকভাবে সহায়তা করেছিলেন টিউলিপের বাবা-মা। সে কারণেই নিজের মালিকানায় থাকা একটি ফ্ল্যাট টিউলিপকে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ দিয়েছেন তিনি।