
নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
নোয়াখালী সদর উপজেলার সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে দীর্ঘ সময় থেকে অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়া যেন ছেপে বসে আছে। এই নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে দুর্নীতিদমন কমিশন বিষয়টি নজরে এনে ব্যবস্থা নিয়েছেন। কিন্তু পরবর্তী সময় আবারও দুর্নীতিগ্রস্থ ব্যক্তিরা আইনের মার প্যাচ নিয়ে বের হয়ে এসে বহাল তবিয়তে তাদের পুরনো কার্জক্রমগুলো নতুনভাবে চালিয়ে যাচ্ছে।
সূত্র মতে জানা যায় বহুবার দলীয় সাইনবোর্ড বদলীয়ে নতুন করে নতুন নতুন দলে যোগ দেওয়া সাবেক বঙ্গবন্ধু দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ও বর্তমান সময়ের আবারও নির্বাচিত আহবায়ক কমিটির আহবায়ক সাইফ উদ্দিন বাবুল এর বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর সম্মিলিত দুর্নীতি দমন কমিশন নোয়াখালী জেলা কার্যালয় বিষয়টি আমলে নিয়ে স্মারক নং-০৪.০১.৭৫০০.৬২৪.০১.০১০.১৮.১১৭ অভিযোগের অনুসন্ধান বিষয়ে সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সর্বরাহ প্রসঙ্গে সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিস/রেকর্ড কিপার/সদর রেকর্ডরুম থানা- সুধারাম, জেলা- নোয়াখালী ও সাব রেজিষ্ট্রার সাব রেজিষ্ট্রি অফিস থানা সুবর্ণচর, জেলাঃ নোয়াখালীকে স্মারক নং-০৪.০১.৭৫০০.৬২৪.০১.০১০.১৮.১১৭/১/(২) দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ ও দুর্নীতি দমন কমিশন বিধি মালা ২০০৭ বিধান মতে ০৫/০১/২০১৮ ইং তারিখ নোয়াখালী জেলার সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল নং-১। ১৯০, তারিখঃ ০৫/০১/২০১৭ ইং, ২। ৩৩৬, তারিখঃ ১১/০১/২০১৭ ইং, ৩। ৭৪৪, তারিখঃ ২৩/০১/২০১৭ ইং, ৪। ৭৫১, তারিখঃ ২৩/০১/২০১৭ ইং, ৫। ১১৭৭, তারিখঃ ২২/০২/২০১৭ ইং, ৬। ১৬৩৭, তারিখঃ ২২/০২/২০১৭ ইং, ৭। ২৬৩৮, তারিখঃ ২২/০২/২০১৭ ইং ও নোয়াখালী সুবর্ণচর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল নং-১। ৩০৮২, তারিখঃ ৩০/০৬/২০১৫ ইং, ২। ৩০৮৩, তারিখঃ ৩০/০৬/২০১৫ ইং, ৩। ৩০৮৪, তারিখঃ ৩০/০৬/২০১৫ ইং সমূহের সার্টিফাইড কপি ও নোয়াখালী জেলার সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের ২০১৭ ইং সালের ও সুবর্ণচর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের ২০১৫ ইং সালের বিভিন্ন মৌজার শ্রেণি ভিত্তিক ক্রয় বিক্রয়ের মূল্য তালিকা সত্যায়িত ছায়া লিপি সরবরাহের জন্য তৎকালীন সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা মোঃ মশিউর রহমান সাব রেজিষ্ট্রি অফিসগুলোতে চিঠি প্রেরণ করেন। তার সূত্র ধরে তদন্তের এক পর্যায়ে সাইফ উদ্দিন বাবুল সনদ নং-২৯৭১ ও মাকছুদুর রহমান সনদ নং-৩৬০৭ এর ০০.০৯.৭৫০০.৬২৪.০১.১৯৩.১৭ নোয়াখালী ১২৭৮ তারিখঃ ১০/০৮/২০২৩ ইং সনদ বাতিল করে ৩১ জানুয়ারী প্রেরণ করেন। নোয়াখালি সাব রেজিস্টার অফিস সূত্রে জানা যায় মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশনে রাইট পিটিশন নাম্বার ১২০৪/২৩ এ আবেদন করলে মহামান্য হাইকোর্ট ২০শে আগস্ট ২৪ থেকে ছয় মাসের স্থগিত আদেশ দেন যাহা চলতি মাসের ২০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে, স্থগিত আদেশ পুনরায় আবার মহামান্য আদালত থেকে আনার জন্য এখন দৌড় ঝাপ শুরু করছেন এবং সাবেক পতিত সরকারের দলছুট হয়ে বি এন পি তে যোগ দিয়েছেন।
এই বিষয় এ নোয়াখালী জেলার সাব রেজিস্টার আহাদূর জামান এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমি এখানে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি এ সমস্ত বিষয়ে আমি অবগত নয়, তবে যা তথ্য-প্রমাণ চেয়েছেন আমি তা আপনাকে সরবরাহ করেছি , নোয়াখালী সম্মিলিত দুর্নীতি দমন কমিশনে নোয়াখালী জেলা শাখার উপ-পরিচালক এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন আমরা হেডকোয়ার্টারে বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছি হেডকোয়ার্টার হাইকোর্টে আমাদের একটি আইনজীবী প্যানেল এর শাখা আছে ঐ শাখা বিষয় গুলো তদারকি করতেছে।সাইফুদ্দিন বাবুলের স্থগিত আদেশ শেষ জানেন কিনা জিজ্ঞাসা করলে ,উপ পরিচালক বিষয়টি এড়িয়ে যান । তাছাড়া তার বিরুদ্ধে আরো দশ টা দলিলের শ্রেণি পরিবর্তন আন্ডার ভ্যালু বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগের কথা জানালে উপপরিচালক বলেন,আপনি কাগজ পত্র জমা দিলে বিষয় টি আমরা দেখবো।
নোয়াখালীর সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সাধারণ দলিল লেখকগন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন দীর্ঘ সময় থেকে দল পরিবর্তন করে ক্ষমতার মসনদ টিকিয়ে রেখে সরকারি রাজস্ব আত্মসাৎ করে নোয়াখালী ও ঢাকাতে কোটি কোটি টাকা সম্পদ নামে বেনামে খরিদ করেছেন এবং আওয়ামী সাইনবোর্ড ব্যবহার করে সরকারি জমি দখল করেছে।
অভিজ্ঞ মহল মনে করেন অচিরেই সাইফুদ্দিন বাবুলের সাব রেজিস্ট্রি অফিসের দুর্নীতি ছাড়াও তার নামে বেনামে সম্পদ ও গাড়ি বাড়ি হিসাব দুর্নীতি দমন কমিশন নোয়াখালী জেলা শাখা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার জোরদার দাবি জানাচ্ছেন।
এই ছাড়া দলিল নং-৩৬৪৪, তারিখঃ ০৪/০৪/২০১৬, দলিল নং-৪১১৫, তারিখঃ ১৮/০৪/২০১৬ ইং, দলিল নং-৪৬৩৩, তারিখঃ ০৪/০৫/২০১৬, দলিল নং-৪৮০২, তারিখঃ ০৯/০৫/২০১৬ইং, দলিল নং-৬২৬৭, তারিখঃ ১৯/০৬/২০১৭ ইং, দলিল নং-৮৮৭০, তারিখঃ ১০/০৯/২০১৭ ইং, দলিল নং-৯২৪৫, তারিখঃ ১৮/১০/২০১৭ ইং, দলিল নং-৯২৪৭, তারিখঃ ১৮/১০/২০১৭ইং, দলিল নং-৯৯৪৪, তারিখঃ ২১/১০/২০১৯ ইং, দলিল নং-৯৯৪৫, তারিখঃ ২১/১০/২০১৯ এই দশটি দলিলের তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি করছেন সচেতন মহল।