
ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কেন্দ্রে ‘এ’ ইউনিটের গুচ্ছভুক্ত ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিড়ম্বনামুক্ত রাখতে তৃতীয় দিনের মতো সহায়তামূলক কার্যক্রম চালিয়ে গেছে রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনগুলো। পারস্পরিক সৌহার্দপূর্ণ আচরণ লক্ষ্য করা যায় ইবি কেন্দ্রে।
শুক্রবার (৯ মে) সকাল থেকে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ক্যাম্পাসজুড়ে ছাত্র সংগঠনগুলোর তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে।সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক এলাকায় ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, জমিয়তে তলাবিয়া আরাবিয়া, খেলাফতে ছাত্র মজলিস ও ছাত্র ইউনিয়ন কর্তৃক পরিচালিত তথ্য সহায়তা কেন্দ্র ও অভিভাবক কর্নার একসাথে স্থাপন করা হয়।
এসব সেবামূলক বুথ থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে খাবার পানি, ওষুধ, কলম, স্যালাইন, শিক্ষা উপকরণ-সহ প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী। অভিভাবকদের জন্য রয়েছে বিশ্রামের শেড, পানির ব্যবস্থা এবং শিশুদের জন্য চকলেট ও রিডিং কর্নার।
ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এই মানবিক উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। রাজনৈতিক ভিন্নমতের সংগঠনগুলো যেভাবে একসঙ্গে কাজ করছে, তা স্বস্তিদায়ক ও উৎসাহব্যঞ্জক।
একজন অভিভাবক রফিকুল ইসলাম বলেন, “সন্তানকে নিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় এসেছি। ছাত্র সংগঠনগুলোর এমন সহযোগিতা আমাদের দুশ্চিন্তা অনেকটা কমিয়ে দিয়েছে। এ ধরনের আয়োজন খুবই ইতিবাচক। এটা আগে ছিল না”
বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট জানান, ‘আমরা “আবু সাঈদ সহায়তা কর্নার” চালু করেছি। ভর্তি পরীক্ষার্থীদের তথ্য দিয়ে সহায়তা করছি। পাশাপাশি আমাদের সংগঠনের ন্যায়বিচারমূলক দাবিসমূহ নিয়েও জনমত গঠন করছি। সংস্কারের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মতামত নেয়া হচ্ছে।’
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, ‘আমাদের হেল্পডেস্কে ফুল, কলম, ওষুধ, স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় সবকিছু রাখা হয়েছে। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সবসময় শিক্ষার্থীদের সহায়তায় কাজ করে। পরীক্ষার পরে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাতেও আমরা সহযোগিতা করব।’
শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘পরীক্ষার্থীদের জন্য পানিসেবা, ওষুধ, ফার্স্ট এইডসহ দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। অভিভাবকদের জন্য বসার ব্যবস্থা ও শিশুদের জন্য রিডিং কর্নার রাখা হয়েছে। একজন অভিভাবক চাইলে বসে বই পড়তে পারে।’
ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ছাত্র ইউনিয়ন সবসময় শিক্ষার্থীদের পাশে থাকে। তাই আমরা মেডিকেল সহায়তা, তথ্য কেন্দ্র ও অভিভাবক কর্নারের মাধ্যমে সহযোগিতা করছি।’
এদিকে খেলাফতে ছাত্র মজলিস ইবি শাখার সভাপতি সাদেক বলেন, ‘শুরু থেকে আমরা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। ভালো লাগার বিষয় হচ্ছে আগে এরকম সংগঠনগুলো একসাথে কাজ করতে পারতো না। বর্তমান সম্মিলিত ভাবে আমরা শিক্ষার্থীদের পাশে রয়েছি।’
এছাড়াও ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকেও অভিভাবক কর্নার, ফার্স্ট এইড ও পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সমন্বিত এই উদ্যোগ ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গড়ে তুলেছে এক সহানুভূতিশীল, সুশৃঙ্খল ও মানবিক পরিবেশ।