পাতানো নির্বাচন জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে — এবি পার্টি 

মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩

 

 

 

জাতির সংবাদ ডটকম।।

বৈষম্য ও অধিকার হরণের বিরুদ্ধে আরব বসন্তের বহু আগে বায়ান্ন, বাষট্টি ও উনসত্তর সালে এই ভূখন্ডে বার বার গণ-আন্দেলন এবং গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে। একাত্তরের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ ও নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের মূল প্রেরণা ছিল গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম। অতএব কোটি কোটি মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়ে গায়ের জোরে ৭ জানুয়ারির প্রহসনমূলক নির্বাচন করলে গণমানুষের অভ্যুত্থান ও বাংলা বসন্ত কেউ ঠেকাতে পারবেনা। এই বাংলা বসন্তের জন্য কোন পরাশক্তির সহযোগিতা বা পরিকল্পনা মূখ্য নয় বরং আওয়ামীলীগের দূঃশাসন, দূর্নীতি ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে জনতার স্মতস্ফূর্ত গণ-সংগ্রামই ঢাকার বুকে বাংলা বসন্তকে অনিবার্য করে তুলেছে বলে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছে এবি পার্টি। আজ বিকেল ৩ টায় অবৈধ সরকারের পদত্যাগ ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিজয় নগরস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে “ক্ষুব্ধ জনতার” মিছিল বের করে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)। মিছিল শেষে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য প্রদানকালে এ হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন এবি পার্টি নেতৃবৃন্দ।

 

ক্ষুব্ধ জনতার মিছিলটি এবি পার্টির কেন্দ্রীয় অফিস থেকে শুরু হয়ে কাকরাইল, বিজয়নগর, পল্টন সহ রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বিজয়-৭১ চত্বরে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন, এবি পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী, যুগ্ম আহবায়ক প্রফেসর ডাঃ মেজর অবঃ আব্দুল ওহাব মিনার, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মন্জু ও যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।

 

এএফএম সোলায়মান চৌধুরী বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলছি ৭ জানুয়ারির নির্বাচন একটি প্রহসন ও জনগণের টাকা অপচয়ের নির্বাচন, আমরা এই নির্বাচন মানিনা। ইতিমধ্যে সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল এই পাতানো নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। জনগণকে বলবো আপনারা এই নির্বাচন বর্জন করুন, কেউ আপনারা ভোট দিতে যাবেন না। তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, জনগণ যাতে নিজের পছন্দমত প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন আমরা সে অধিকার আদায়ের জন্য শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়াই করে যাবো।

 

অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশচুম্বী, মানুষ নিজের পছন্দ মত খাবার কিনতে পারছেনা। সেসময় লুটপাটের টাকা অপচয়ের মাধ্যমে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে তামাশার নির্বাচন করছে। তিনি প্রহসনের নির্বাচনে জনগণকে ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন সরকারের নতজানুতার কারণে সকল নদী খাল বিল শুকিয়ে গেছে। নৌকা চালানোর মত পানি কোথাও নেই। তিনি জনগণকে এই তামাশার নির্বাচন বর্জন করে গণতন্ত্রের পক্ষে নিজেদের অবস্থান সূদৃঢ় করার আহ্বান জানান।

 

মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, মন্ত্রী রাজ্জাক সাহেব মারফত আমরা জানলাম এক রাতে সবার মুক্তির শর্তেও বিএনপি নেতারা সরকারের সাথে আপোষ করেননি। জনগণের দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে তারা কারাগারের নির্যাতন মেনে নিয়েছেন। অথচ ১/১১’র সময় আওয়ামীলীগের বহু নেতারা রিমান্ডে গিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নানা ঘটনা ফাঁস করে দিয়েছেন। এখানেই বিএনপি-আওয়ামীলীগের পার্থক্য উল্লেখ করে তিনি বলেন আওয়ামীলীগ নেতারা হলো শক্তের ভক্ত নরমের জম। গণ-অভ্যুত্থান শুরু হলে এখনকার নেতা-মন্ত্রীদের কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবেনা। রাশিয়ান পররাষ্ট্র দপ্তরের আরব বসন্ত ঘটার আশংকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলা বসন্তের জন্য কোন পরাশক্তির সহযোগিতা বা পরিকল্পনা মূখ্য নয় বরং আওয়ামীলীগের দূঃশাসন, দূর্নীতি ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে জনতার স্মতস্ফূর্ত গণ-সংগ্রামই ঢাকার বুকে বাংলা বসন্তকে অনিবার্য করে তুলবে।

 

ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, আমেরিকা সহ আমাদের পশ্চিমা বন্ধু রাষ্ট্রগুলো বার বার অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা, পোশাক শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি প্রদান সহ বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে। এগুলো বাস্তবায়িত না হলে পোশাক রপ্তানি বন্ধ হবার উপক্রম হবে। অর্থনীতিতে ধ্বস নামবে। আমরা বার বার সতর্ক করার পরেও সরকার নতুন বাকশাল কায়েম করার লক্ষ্যে একটি একতরফা প্রহসনের নির্বাচন আয়োজন করেছে। এই অবৈধ নির্বাচন এবি পার্টি মানেনা।

 

সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন- এবি পার্টির কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, সিনিয়র সহকারী সদস্যসচিব আনোয়ার সাদাত টুটুল, যুবপার্টির আহবায়ক এবিএম খালিদ হাসান, আব্দুল বাসেত মারজান, মহানগর উত্তরের আহবায়ক আলতাফ হোসাইন, সহকারী সদস্যসচিব শাহ আব্দুর রহমান, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল হালিম খোকন, যুগ্ম সদস্যসচিব সফিউল বাসার, কেফায়েত হোসেন তানভীর, যুবপার্টি মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক তোফাজ্জল হোসেন রমিজ, যুবপার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব মাসুদ জমাদ্দার রানা, সুলতানা রাজিয়া, যুবপার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব শাহিনুর আক্তার শীলা, কেন্দ্রীয় সহকারী অর্থ সম্পাদক সুমাইয়া শারমিন ফারহানা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুল হালিম নান্নু, সেলিম খান, আব্দুর রব জামিল, রিপন মাহমুদ, আমানুল্লাহ খান রাসেল, মশিউর রহমান মিলু, ফেরদৌসী আক্তার অপি, আমেনা বেগম, ছাত্রপক্ষের আহবায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স, পল্টন থানা আহবায়ক আব্দুল কাদের মুন্সি, যাত্রাবাড়ী থানা সমন্বয়ক সিএম আরিফ সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।