
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েও সাড়ে ৯ হাজার ইয়াবা উদ্ধারসহ তিন মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করায় পুলিশের সাহসের প্রশংসা করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেছেন, গুলি করার পরেও তারা তিনজনকে আটক করেছে। মাদক ও গাড়ি জব্দ করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে বুধবার (১৮ জুন) দিবাগত রাতে পল্টনে মাদকবিরোধী অভিযানে গুলির ঘটনায় আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যের খোঁজ নেওয়া শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন উপদেষ্টা।
ঘটনার বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, গতকাল (বুধবার) আমাদের কাছে তথ্য ছিল, চট্টগ্রাম থেকে একটি গাড়ি আসছে, যেটার ভেতরে মাদক আছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে ডিবির লালবাগ বিভাগের একটি টিম ফকিরাপুল এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালায়।
তিনি বলেন, এসময় একটি গাড়িকে থামার সিগন্যাল দিলে গাড়িটি সামনে এগিয়ে যায়। প্রায় ৬০০ গজ সামনে যাওয়ার পর গাড়িটি থামানো হয়। গাড়ি থেকে একজন গুলি করলে আমাদের তিনজন পুলিশ সদস্য আহত হয়। এর মধ্যে অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজন কনস্টেবল ও এএসআই রয়েছে।
আহতদের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এএসআইর পেটে গুলি লেগেছে। তবে তার কোনো অর্গানে না লাগায় তিনি শঙ্কামুক্ত। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করা হবে। এরপর অপারেশন করে গুলিটা বের করা হবে। এ ছাড়া কনস্টেবলের পায়ে গুলি লেগেছে। তাকে আজই রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার ও গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। গাড়ি থেকে ৯ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।
মাদক কারবারিকে চ্যালেঞ্জ করার পরও পুলিশের ওপর হামলা করল, বিষয়টা কীভাবে দেখছেন– এমন প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, পুলিশ খুব সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করেছে। গুলি করার পরও তারা তিনজনকে আটক করেছে। মাদক ও গাড়ি জব্দ করেছে। জীবনবাজি রেখে মাদক নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে।
পুলিশের অস্ত্র ব্যবহার নিয়ে কথা উঠেছে। কিন্তু সন্ত্রাসীদের হাতে ভারি অস্ত্র– জবাবে উপদেষ্টা বলেন, এ ঘটনায় ভারি অস্ত্র ব্যবহার হয়নি, পিস্তল ব্যবহার হয়েছে।
পুলিশের জীবন রক্ষায় যে অস্ত্র নিয়ে কাজ করছে এটা যথেষ্ট কি না– জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশের যে ধরনের অস্ত্র দরকার সেটা দিয়েই তারা কাজ করবে।
অপরাধীরা বেশি সুযোগ নিচ্ছে কি না– জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সন্ত্রাসীরা বেশি সুযোগ নিতে পারছে না। কারণ পুলিশ সাহসিকতার সঙ্গে গুলির পরও তাদের আটক করেছে।
এসময় আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
আহত পুলিশ সদস্যদের খোঁজ নেওয়ার সময় উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী, ডিবির যুগ্ম কমিশনার নাসিরুল ইসলাম, রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।