জাতির সংবাদ ডটকম।।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে প্রতারণা করে গ্রাহকের টাকা হাতিয়ে নেয়া জনতা ব্যাংকের আলোচিত পিয়ন আওলাদ হোসেন রঞ্জু আকন্দকে (৪০) গোপালগঞ্জ হতে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য জানান শাহজাদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
পিয়ন রঞ্জু গোপালগঞ্জ সদর থানার পূর্ব মিয়াপাড়া গ্রামে অবস্থান করছিলেন।
আটক রঞ্জু শাহজাদপুর পৌরসভার পাড়কোলা মহল্লার মৃত নুরুল আকন্দের ছেলে ও উপজেলা শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি ঈদের ছুটির পর হতে পালিয়ে ছিলেন।
শাহজাদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রন্জু গ্রাহকদের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার কথা স্বীকার করেছে। এনজিওসহ বিভিন্নভাবে নেয়া ৩৫ লাখ ঋণের টাকার সুদ দিতে গিয়েই এমন কাজে জড়িয়েছেন তিনি।
জানা যায়, ২০০৩ সালে জনতা ব্যাংক শাহজাদপুর শাখাতে রঞ্জু পিওন কাম পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে প্রকল্পে যোগদান করেন। ২০০৭ সালে সে তার কাজের পাশাপাশি ডেচপাসের কাজ শুরু করে এবং ব্যাংকের প্রবেশ দ্বারে একটি ডেস্কে বসতে শুরু করে। কাজের পাশাপাশি যখন কেউ একাউন্ট খুলতে আসত তখন তার ফরম পুরণ করে দিত সে।
২০১৬ সালের দিকে তিনি ঋণগ্রস্ত হলে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে চড়া সুদে ১৫ লাখ টাকা ঋণ নেয়। এ ঋণের টাকা পরিশোধ করতে টিএমএসএস, ব্রাক, আশা, দিশা সহ বিভিন্ন এনজিও থেকে আরও প্রায় ২০ লাখ টাকা ঋণ নেয় সে। তাকে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৩০ হাজার টাকা কিস্তি দিতে হত।
এরপর ২০২২ সালের শুরুর দিকে গ্রাহকদের কাছ থেকে জালিয়াতি করে টাকা নেয়ার পরিকল্পনা করে পরিচিত গ্রাহকদের টার্গেট করে এবং তাদের একাউন্ট খুলে দেয়। পরে গ্রাহকরা টাকা তুলতে আসলে তারা যে টাকার পরিমাণ লিখত তার বাম পাশে গোপনে সে একটি ডিজিট বসিয়ে বেশি টাকা তুলত। আবার মাঝে মাঝে সে চেক নিজের কাছে রেখে তার কাছে থাকা টাকা দিয়ে দিত।
পরে সুবিধামত সময়ে চেক দিয়ে বেশি টাকা উত্তোলন করত এবং ব্যাংকের সিল ও স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া ভাউচার দিত। এভাবে ২৫ জন গ্রাহকের ৪৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে রঞ্জু কোরবানীর ঈদের ছুটির পর গা ঢাকা দেয়।
তখন গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার প্রাপ্ত অভিযোগ ও রঞ্জু অনুপস্থিত থাকায় থানায় ডায়রী করেন। অভিযোগ দায়ের করেন গ্রাহকও জনতা ব্যাংক শাহজাদপুর শাখার ব্যবস্থাপক জেহাদুল ইসলাম।
পরে গত সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে গোপালগঞ্জের পূর্ব মিয়াপাড়া থেকে তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।