প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে আদালতে চাঁদাবাজীর মামলা সাঁথিয়ায় ভূমিহীনের বন্দোবস্তকৃত জমি দখলের অভিযোগ

শনিবার, মার্চ ১১, ২০২৩

 

সাঁথিয় (পাবনা) প্রতিনিধি:

পাবনার সাঁথিয়ায় প্রভাবশালী ব্যক্তির ছত্রছায়ায় ভূমিহীনের বন্দোবস্কৃত জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সাঁথিয়া উপজেলার ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নে গোয়ালবাড়ী গ্রামে। অপরদিকে প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে আদালতে চাঁদাবাজীর মামলা হয়েছে।

থানায় দেয়া লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার গোয়াল বাড়িয়া গ্রামের সাদেক আলীর ছেলে ভূমিহীন খলিলুর রহমান ২০০০ইং সালে ১৭৪ নং দলিলমূলে সরকার প্রদত্ত ১ নং খাস খতিয়ান ভূক্ত সাত শতাংশ জমি সরকারের নিকট থেকে বন্দোবস্ত পেয়ে ভোগদখল করে আসছিল।

ভূমি বন্দোবস্তপ্রাপ্ত খলিল উদ্দিনের থানায় দায়েরকৃত অভিযোগে জানা যায়, একই গ্রামের রওশন আলমের ছেলে মোতাহার আলী ও মনসুরের ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে ৮/১০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তি খলিলকে ভয়ভীতি ও চাপসৃষ্টি করে গত ২০২২ইং সালে উপরোক্ত নামীয় ব্যাক্তিগণ ১নং খতিয়ানভূক্ত ভূমি ১১ খতিয়ানভূক্ত ভূমি দেখিয়ে নওশের আলীর নামে দলিল সম্পাদন করে নেয়। পরবর্তিতে ওই জমি ফেরত নেয়ার জন্য ৮০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে চাপ সৃষ্টি, ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে। তাদের এহেন প্রস্তাবে খলিল রাজি না হওয়ায় গত ২৬-২-২০২৩ইং তারিখে দুপুর ১২টার দিকে মোতাহারের নেতৃত্বে ৮/১০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল লাটিসোটা নিয়ে খলিলের বাড়িতে প্রবেশ করে অতর্কিতভাবে বাড়িঘর ভাংচুর শুরু করে। এ ঘটনায় খলিল বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করে। এর আগে খলিল বাদী হয়ে মোতাহার ও জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে ৩/৪ ধারায় পাবনা আদালতে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন।

সরজমিন ওই এলাকায় গেলে মোতাহারের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী বুলবুলি খাতুন জানান, আমার স্বামী নওশের আলীর মৃত্যু আগে আমার নামে জমি লিখে দেয়। আমার সন্তানরা ভাতকাপড় দেয়না, ছেলের বউরা নির্যাতন করে। আমি খলিলের বাড়ি এসে আশ্রয় নিয়েছি। কিন্তু এই ঘামের মোতাহার আমার কাছে ২/৩ বছর ধরে জমির দলিল চায় বলে যে আমি এখানে ঘর তুলবো এবং আমার কাছে টাকা চায়, না দিলে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দেয়।

আর এক ভুক্তভোগী মর্জিনা খাতুন জানান, মোতাহার মোবাইল ফোনে আমার প্রতিবন্ধী ছেলে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে একটি মেয়ের সাথে অবৈধ সম্পর্কের অপবাদ দিয়ে ২ লাখ টাকা (চাঁদা) দাবি করে আমার স্বামী মানষিক প্রতিবন্ধী (পাগল) আমরা টাকা না দেওয়ায় সেই মেয়েটির সাথে সারে ৩ লাখ টাকা দেনমোহরে জোড়পূর্বক বিয়ে দেন।

একই গ্রামের আব্দুল্লাহ শেখ জানান, মোতাহার বিভিন্ন সময় জনস্বাস্থ্যের মসজিদের নামের বরাদ্দকৃত টিউবয়েল নিয়ে এসে সেটা টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে। মোতাহার এ গ্রামের মাস্তান তাকে দেখে আমরা সবাই আতঙ্কে থাকি। প্রবাসীর স্ত্রী ভুক্তভোগী রুমা খাতুন জানান, আমার স্বামী সৌদিতে থাকে মোতাহার বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি দেখায় ও আমার কাছে চাঁদাবাজির হুমকি দিয়ে ৩ লাখ টাকা দাবি করে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোতাহার তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বিকার করে।

এ ব্যাপারে সাঁথিয়া থানার ওসি তদন্ত কমল কুমার দেবনাথ বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।