বঞ্চিত মেহনতী-শ্রমিক জনতাই এই ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটাবে- এবি পার্টি’

বুধবার, মে ১, ২০২৪

জাতির সংবাদ ডটকম।।

জনসমর্থনহীন এই সরকারের প্রধানতম নির্যাতনের শিকার শ্রমজীবী মানুষ, বঞ্চিত মেহনতী-শ্রমিক জনতাই এই ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটাবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি-এবি পার্টি।
আজ মহান মে দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে বিজয় নগরস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভা থেকে এ হুঁশিয়ারী জানানো হয়। আলোচনা সভায় বক্তারা গোটা পৃথিবীর শ্রমজীবী মানুষের প্রতি সম্মান জানিয়ে বলেন, ১৮৮৬ সালের ১ মে শ্রমিকরা তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করতে গিয়ে জীবন দিয়েছিলেন। সেই থেকে ১মে শ্রমিকদের সম্মানে এই দিনকে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও বাস্তবতা হচ্ছে আজও শ্রমিকরা তাদের আধিকার ফিরে পায়নি।

এবি পার্টির আহবায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস। বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির যুগ্ম আহবায়ক প্রফেসর ডাঃ মেজর অবঃ আব্দুল ওহাব মিনার, অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ ও সহকারী সদস্যসচিব, বিশিষ্ট শ্রমিকনেত্রী বেবি পাঠান প্রমূখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিমুল বিশ্বাস বলেন, বিবিএস এর হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রায় সাড়ে সাতকোটি মানুষ শ্রমজীবী। আর এই শ্রমজীবী মানুষদের নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। ভারতের সমর্থনে যে জগদ্দল পাথর আমাদের দেশের মানুষের ঘাড়ে চেপে বসেছে সেই জগদ্দল পাথর নামাতে হবে। তিনি বলেন, পৃথিবীর বহু শক্তি বাংলা দখল করে আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ধ্বংসের পায়তারা করেছে কিন্তু দিনশেষে আমরা লড়াই করে স্বাধীন হয়েছি। বিগত ৭ ই জানুয়ারীর প্রহসনের নির্বাচনেও যেভাবে আমাদের জনগণের অধিকার দখল করা হয়েছে, সেই দখলও আমরা আন্দোলন করে মুক্ত করবো ইনশাআল্লাহ। দেশের অর্থনীতি গড়ে তুলেছে দেশের সাড়ে সাতকোটি শ্রমজীবী মানুষ। আওয়ামী লুটেরা শ্রেনীর এই অর্থনীতিতে কোন ভুমিকা নেই। তিনি বলেন, কোন আন্দোলনে যখন, ছাত্র, যুবক আর শ্রমিকরা অংশ নেয় সেই আন্দোলন ব্যর্থ হয়না। তাই এই দখলদার সরকারের পতন আন্দোলনে এদেশের ছাত্র, যুব ও শ্রমিকরা নেমে আসবেন এবং এই ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটাবেন।

সভাপতির বক্তব্যে সোলায়মান চৌধুরী বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষই শ্রমিক। কারণ সবাই কাজ করে উপার্জন করেন। কিছু মানুষ আছে যাদের কাজ করে উপার্জন করতে হয়না, তারা জনগণের টাকা লুটপাট করে আরাম আয়েশে জীবন যাপন করছে। আজকের এই শ্রমিক দিবসে সেই সমস্ত লুটেরাদের প্রতি আমরা ঘৃনা জানাই। এই লুটেরারা শুধু সম্পদ আর টাকা পয়সা লুট করেই ক্ষান্ত হয়নি তারা এখন জনগণের ভোট আর ভাতের অধিকারও কেড়ে নিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা এই লুটেরা সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক আন্দোলন চালিয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ।

মেজর মিনার বলেন, বাংলাদেশে অধিকাংশ শ্রমিকদের এখনো শ্রমিক হিসেবেই পরিচয় দেয়া হয়না। দেশের কৃষি শ্রমিক, মৎস্য শ্রমিক, গৃহকর্মী এরা এখনো শ্রমিক পরিচয়ের কোন সুবিধা পায়না। এদেশের সেই সমস্ত শ্রমজীবী মানুষদের প্রতি আমাদের নজর দিতে হবে।

তাজুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর মে দিবস আসলেই একটি গতানুগতিক আলোচনা, মিছিল ইত্যাদি আমরা দেখতে পাই। কিন্তু বাস্তবে শ্রমিকদের কোন উন্নয়ন আমরা দেখতে পাই না। এবি পার্টি সকল শ্রমজীবী মানুষের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তাদের সুনির্দিষ্ট সমুহ চিহ্নিত করে সেই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করবে ইনশাআল্লাহ।

মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ১৩৮ বছর আগে আজকের এই দিনে শিকাগো শহরের শ্রমিকরা জীবন দিয়ে বিশ্বের সকল শ্রমিকদের জন্য তাদের শ্রমঘন্টার অধিকার নিশ্চিত করতে পেরেছিলেন, কিন্তু আজ এমন এক স্বৈরাচার আমাদের উপর চেপে বসেছে যে, অকাতরে রাজপথে জীবন দিয়েও আমরা আমাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে পারছিনা। তিনি বলেন; রাজনৈতিক নেতৃত্ব যদি কোন কারণে ব্যর্থ হয় তাহলে বঞ্চিত মেহনতী-শ্রমিক জনতাই এই ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটাবে ইনশা’আল্লাহ্।

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক বিএম নাজমুল হক, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সিনিয়র সহকারী সদস্যসচিব আব্দুল বাসেত মারজান, সহকারী সদস্যসচিব শাহ আব্দুর রহমান, এম আমজাদ খান, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহবায়ক আলতাফ হোসাইন, দক্ষিণের যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার ফারুক, গাজী নাসির, আব্দুল হালিম খোকন, উত্তরের সদস্যসচিব সেলিম খান, দক্ষিণের যুগ্ম সদস্যসচিব সফিউল বাসার, কেফায়েত হোসেন তানভীর, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, যুবপার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব শাহিনুর আক্তার শীলা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মিলু, রিপন মাহমুদ, শরণ চৌধুরী, আমেনা বেগম, রুনা হোসাইন, সুমাইয়া শারমিন ফারহানা সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।