বন্য প্রাণী সংরক্ষণে শিক্ষার্থীদের নিয়ে ছাত্রবলয় গঠিত হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা

রবিবার, জুলাই ২৭, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ঘোষণা দিয়েছেন, বৃক্ষমেলায় অংশগ্রহণকারী পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের তালিকা করে বন্য প্রাণী সংরক্ষণে তাদের সম্পৃক্ত করে ‘ছাত্রবলয়’ গঠন করা হবে।

আজ রবিবার (২৭ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বন ভবনে মাসব্যাপী জাতীয় বৃক্ষমেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘বৃক্ষমেলা শুধু গাছ বিক্রির স্থান নয়, এটি পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধির এক মহৎ উদ্যোগ। এই মেলায় যারা অংশগ্রহণ করেছেন, তারা প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসার শক্তিশালী বার্তা দিয়েছেন।’

উপদেষ্টা জানান, স্টল বরাদ্দে স্বচ্ছতা আনতে বিদ্যমান নীতিমালা পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে এবং আগামীতে আরো জবাবদিহিমূলক ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি আরো বলেন, ‘অনেকে বিপন্ন ও দুর্লভ প্রজাতির গাছ এনেছেন। কেউ কেউ বিদেশি গাছের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন এসবই মানুষ ও প্রকৃতির মধ্যে বাস্তব সংযোগ তৈরি করেছে।’

ভবিষ্যতের বৃক্ষমেলায় পরিবেশবান্ধব নার্সারিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের সঙ্গে সাংঘর্ষিক উপকরণ পরিহারের ওপর জোর দেন তিনি।

এ ছাড়া পরিচ্ছন্নতা, নান্দনিক ল্যান্ডস্কেপিং এবং পারিবারিক বিনোদনের পরিবেশ তৈরিতে সংশ্লিষ্টদের প্রশংসা করেন।

অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের গাছ চেনা, রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে এবং নির্বাচিত স্টল মালিক ও জাতীয় বৃক্ষরোপণ ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণে অবদান রাখা ব্যক্তিদের মাঝে পুরস্কার ও সনদপত্র বিতরণ করেন।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ, প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী ও উপপ্রধান বন সংরক্ষক রকিবুল হাসান।

উল্লেখ্য, গত ২৫ জুন থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত জাতীয় বৃক্ষমেলা ২০২৫-এ মোট ১১২টি স্টল অংশ নেয়।

এর মধ্যে সরকারি ৮টি, বেসরকারি ৮টি, সিঙ্গেল নার্সারি ৯২টি এবং ডাবল নার্সারি ১৮টি ছিল।মেলায় মোট ১৬ লাখ ৯১ হাজার চারশ তেইশটি চারা বিক্রি হয়েছে যার আর্থিক মূল্য ১৪ কোটি ৭৯ লাখ নয় হাজার চারশ চুয়াত্তর টাকা। বিক্রিত চারার মধ্যে ফলজ ছিল ৩ লাখ ৩৭ হাজার ছয়শ চল্লিশটি, বনজ ২ লাখ ৪৮ হাজার দুইশ চুয়াত্তরটি, ঔষধি ১ লাখ চৌদ্দ হাজার পাঁচশ পনেরোটি, মশলা ১ লাখ একশ উনপঞ্চাশটি, ক্যাকটাস ১ লাখ দুই হাজার ঊননব্বইটি, অর্কিড ৭৪ হাজার পাঁচশ একচল্লিশটি, শোভাবর্ধনকারী ৪ লাখ চুয়ান্ন হাজার পাঁচশ চুয়াত্তরটি, দেশীয় বিরল বা বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতি ৩৭ হাজার তিনশ একুশটি এবং অন্যান্য চারা ছিল ২ লাখ বাইশ হাজার বিশটি।