বর্তমান সরকারের আমলেই জুলাই হত্যাকাণ্ডের রায় হবে : আসিফ নজরুল

মঙ্গলবার, জুলাই ২৯, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার সুষ্ঠুভাবেই করা হবে। তিনি বলেন, “এই বিচার নিয়ে আপনাদের হতাশ হওয়ার কিছু নাই। আমাদের সরকারের আমলেই কাঙ্ক্ষিত রায় পাবেন।”

আজ মঙ্গলবার (২৯ জুলাই ২০২৫) বিচার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হওয়া হত্যাকাণ্ডের বিচার বিষয়ে এক আলোচনাসভা ও তথ্য প্রদর্শনীতে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

একজন আলোচকের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, আমি বিশ্বাস করি না, পরবর্তীকালে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি যেই ক্ষমতায় আসুক, তারা এই বিচারের শৈথিল্য বা গাফিলতি দেখাবে। কারণ তারা সবাই আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে নির্যাতিত। তারা শেখ হাসিনার সরকারের ফ্যাসিজম আমাদের চেয়ে কম দেখেনি।

তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, আমরা এমনভাবে এই বিচারের অকাট্য সাক্ষ্য-প্রমাণ রেখে যাব, কোনো সরকার চাইলেও বিচার থেকে সরতে পারবে না।

অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে আসিফ নজরুল বলেন, অনেক অভিযোগ শুনি, অনেক কিছু শুনি, খুব দুঃখ লাগে মাঝে মাঝে। কষ্ট লাগলেও শুনব, আবার নিজেও কাজ করব। কিন্তু একটা জিনিস বলতে চাই, আমি যেন আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতাটা করতে পারি।

তিনি বলেন, উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনে কোনো রকম গাফিলতি কোনো জায়গায় করিনি, কোনো রকম অন্যায় কোনো জায়গায় করিনি। জীবনে কোনোদিন এত পরিশ্রম করিনি। আর যাই করুন, এই বিচার নিয়ে আমাদের আন্তরিকতায় বিন্দুমাত্র সন্দেহ রাখবেন না। আমাদের সরকারের চেষ্টায় ব্যর্থতা নেই। চেষ্টার ক্ষেত্রে কোনো শৈথিল্য নেই।

তিনি আরও বলেন, আমি যদি শহীদের পিতা হতাম, আমারও প্রশ্ন থাকত। আপনাদের মতো সন্তান হারালে আমি আরও বেশি ইমোশনাল হয়ে যেতাম, আরও বেশি অ্যাগ্রেসিভলি সমালোচনা করতাম। এটা আমাদের মেনে নিতে হবে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে, আহত ও নিরস্ত্র মানুষকে গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছে উল্লেখ করে আইন উপদেষ্টা বলেন, শেখ হাসিনা এবং তার দোসররা যে অপরাধ বাংলাদেশে করেছে, আমার মনে হয় ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনীও এত জঘন্য অপরাধ করেনি। আপনারা বলতে পারেন, ২৫ মার্চ কালো রাতে হয়েছে। অবশ্যই ২৫ মার্চ কালো রাতে ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু অন্যদেশের বাহিনী করেছে।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে মরদেহ পুড়িয়ে ফেলেছে এমন কোনো ফুটেজ আমি দেখিনি। একজন গুলি খেয়েছে, তাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে তার বন্ধু, সেই অবস্থায় গুলি করেছে, এমন কোনো ফুটেজ বা কোনো বর্ণনা আমি কোনো মুক্তিযোদ্ধার মুখে শুনিনি। অন্যরকম নৃশংসতা থাকতে পারে, কিন্তু এমন নৃশংসতা কখনো শুনিনি।

এত বড় গণহত্যা চালিয়েও আওয়ামী লীগের বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নেই মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, একটা দল ১৫ বছর শুধু মিথ্যা আর নির্যাতন করে দেশ চালিয়েছে। এখনো তাদের মিথ্যাচার বিন্দুমাত্র থামেনি। এখনো নির্যাতনের ইচ্ছা বিন্দুমাত্র থামেনি। আপনারা যখন মহাখুনি শেখ হাসিনার অডিওগুলো শুনতে পান, দেখবেন এখনও তার নির্যাতন করার ইচ্ছা আছে। এরা কি, বিচারে কোনো রকম গাফিলতি থাকলে, সেটা উন্মোচন করার চেষ্টা করবে না? আমার তো অনেক দায়িত্ব। এই বিচারকে সমালোচনার ঊর্ধ্বে রাখতে হবে।