আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নির্যাতন এবং ভারতীয় পতাকার অবমাননার প্রতিবাদে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া রোগীদের চিকিৎসাসেবা না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের জেএন রায় হাসপাতাল। এবার একই পথে হাঁটলো দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরাার রাজধানী আগরতলার একটি হাসপাতাল।
এছাড়া ওই হাসপাতালে বাংলাদেশিদের জন্য হেল্প ডেস্কও বন্ধ করা হয়েছে। শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার রোগী চিকিৎসার জন্য ভারতে ভ্রমণ করে থাকেন। কলকাতার পাশাপাশি ত্রিপুরা ও দক্ষিণ ভারতের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা করাতে যান বাংলাদেশি রোগীরা। তবে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর উভয় দেশের সম্পর্কেও দেখা দিয়েছে শীতলতা।
এমন অবস্থায় বাংলাদেশের কোনও রোগীকে চিকিৎসাসেবা না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কলকাতার জেএন রায় হাসপাতাল। এবার সেই একই পথে হাঁটল ত্রিপুরার আইএলএস হাসপাতালও। আগরতলায় অবস্থিত আইএলএস হাসপাতালটি একটি মাল্টি-সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। শনিবার তারা এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।
হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, বাংলাদেশিদের চিকিৎসাসেবা না দেওয়ার দাবিতে স্থানীয়রা ওই হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ করেন। পরে আইএলএস হাসপাতাল বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা না করার ঘোষণা দেয়।
আইএলএস হাসপাতালের চিফ অপারেটিং অফিসার ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশিদের চিকিৎসা করানো বন্ধ করা নিয়ে স্থানীয়রা যে দাবি তুলেছেন তার সঙ্গে আমরা একমত। আখাউড়া চেকপোস্টে ও আইএলএস হাসপাতালে তাদের জন্য যে হেল্প ডেস্ক ছিল সেটিও এবার বন্ধ করা হলো।
এদিকে বাংলাদেশের রোগীদের চিকিৎসা না করার বিষয়ে হাসপাতালগুলোর সিদ্ধান্তের প্রতি একমত জানিয়েছেন ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির রাজ্যসভার সংসদ সদস্য শমীক ভট্টাচার্য। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশিদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া হবে না বলে হাসপাতালগুলো যে বার্তা দিয়েছে তাতে আমি পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি।
তার দাবি, গোটা ভারতের উচিত বাংলাদেশকে সমস্ত রকম পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করে দেওয়া।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার পতন ও তার পালিয়ে ভারতে চলে যাওয়ার পর থেকেই টানাপোড়েন চলছে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে। সম্প্রতি সাবেক ইসকন সদস্য এবং সম্মিলিত সনাতন জাগরণ মঞ্চের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের জেরে আরও তিক্ত হয়েছে প্রতিবেশী দু’দেশের সম্পর্ক।
পলাতক হাসিনা ইতোমধ্যেই গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন এবং তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করা হয়েছে।