জাতির সংবাদ ডটকম।।
গতকাল ২৫শে জানুয়ারি, শনিবার রাজধানীর বিজয়নগরস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রাফিউর রহমান ফাত্তাহ আহ্বায়ক ও শেখ মাহমুদুল হাসান আসিফ-কে সদস্য সচিব করে ৩৫সদস্য বিশিষ্ট ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা কমিটি ঘোষণা করা হয়।
কেন্দ্রীয় যুগ্ন আহ্বায়ক ফওজিয়া ফারিহা করবীর সঞ্চলনায়, এসময়ে সূচনা বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম নির্ঝর বলেন, ছাত্রপক্ষ সবসময়ই শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় ও সমস্যা সমাধানে তাদের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করবে। সেই লক্ষ্যে বাস্তবায়নে শিক্ষার্থীদেরকে সাথে নিয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ নতুন ইতিবাচক ছাত্ররাজনীতির উন্মেষ ঘটাতে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে বিশ্বাস করি। কোন দলের লেজুড়বৃত্তি কিংবা সহমত ভাইয়ের রাজনীতির বদলে ছাত্রপক্ষ’র সদস্যরা স্বনির্ভর ব্যাক্তিত্ব হিসেবে আগামীর জাতীয় রাজনৈতিক নেতৃত্ব হিসেবে গড়ে উঠবে।
কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মুহাম্মদ প্রিন্স বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের তিন মূলনীতি সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সমস্যার সমাধানের লড়াইয়ের ডাক দিয়ে প্রতিষ্ঠিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রপক্ষ। ২৪ গণ-অভ্যুত্থানের শহীদের রক্তের সাথে তামাশা করার হীন প্রচেষ্টা কেউ করলে শিক্ষার্থীদেরকে সাথে নিয়ে খুনী-দোসরদের সাথে তাদেরও বিচার করা হবে। ছাত্রপক্ষ’র রাজপথের বিপ্লবীরা বিচার সম্পন্ন ও শাস্তি নিশ্চিতের পূর্বে ঘরে ফিরে যাবেনা। এই সংগ্রামে ঢাকা মহানগর দক্ষিণকে অগ্রগামী ভূমিকায় দেখতে চাই।
সংগঠনের উপদেষ্টা ব্যারিষ্টার জুবায়ের আহমেদ ভুইঁয়া বলেন, দুই হাজারের অধিক শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের সামনে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানের সুযোগ এসেছে। আমরা যদি এবার ব্যর্থ হই শহীদের রক্ত বৃথা যাবে, তারা ও ইতিহাস আমাদের কোনোদিন ক্ষমা করবে না। শহীদদের নিকট দায়বদ্ধতা থেকে আমাদের সকলে মিলে একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে হবে। আমরা বরাবরই তোমাদের পাশে ছিলাম, আগামী দিনগুলোতেও থাকবো।
প্রধান উপদেষ্টা ব্যারিষ্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ১৯৭১ সালে শহীদের আত্মত্যাগ, সাড়ে সাত কোটি মানুষের অবর্ণনীয় কষ্ট, জীবন ও সম্পদের অপূরণীয় ক্ষতি আর দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ। স্বাধীনতার অর্ধ শতাব্দী পর ২৪সালে এসে এদেশে আবারও বৈষম্যের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে কারণ মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্খা পূরণ করে ব্যর্থ হয়েছে পরবর্তী শাসকগোষ্ঠী। ৭১সালে তৎকালীন স্বৈরাচারের মতো ২৪সালেও স্বৈরাচারী কায়দায় বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে অধিকারের দাবিকে নিস্তব্ধ করে দিতে চেয়েছিল শাসকগোষ্ঠী। এবারও তাদের নৃশংস গণহত্যার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে ছাত্র-জনতা। আমরা মুগ্ধ, আবু সাইদ, আকরামদের শহীদ এবং সাধারণ ভাবো কেউ মৃত্যুবরণ করলে মৃত বলি কেনো? কারণ, দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য জীবন দেওয়া গৌরবের। আগামী দিনগুলোতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও তাদের সমস্যার সমাধান, সার্বিকভাবে শিক্ষার্থীদের মুখপাত্রের ভূমিকা পালন করতে হবে তোমাদের।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নবনির্বাচিত আহ্বায়ক রাফিউর রহমান ফাত্তাহ বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষ হলো শিক্ষা, সাম্য ও অধিকার ভিত্তিক নতুন প্রজন্মের ছাত্র সংগঠন। এদেশের শিক্ষার্থীরা বারংবার রক্ত দিলেও তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় নি। দেশের আপামর জনতার সাথে শিক্ষার্থীরাও বঞ্চিত এবং শোষিত। আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে কোনো ধরনের বৈষম্য ও পরিবারতন্ত্র থাকবে না।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নবনির্বাচিত সদস্য সচিব শেখ মাহমুদুল হাসান আসিফ বলেন, স্বৈরাচারের নির্যাতন নিপীড়নের ফলে এদেশের ছাত্র সমাজ আজ ঐক্যবদ্ধ। পৃথিবীর কেনো শক্তি নেই আমাদের মাঝে বিভাজন তৈরি করে নতুন বাংলাদেশের পথচলা ক্ষতিগ্রস্ত করবে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সহ সারা দেশে আমাদের ছাত্রপক্ষ’কে ছড়িয়ে দিতে হবে।
আরো বক্তব্য রাখেন যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ আলিফ সানী, দপ্তর সম্পাদক সোলাইমান আল হাবিব, নারী বিষয়ক সম্পাদক মেহেরুন নেসা আনিকা। এসময়ে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহকারী সদস্য সচিব নুসরাত রহমান নিশাত, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হৃদয় আহমেদ সানী সহ বিভিন্ন শাখার নেতৃবৃন্দ।