প্রাচীনকাল থেকেই শক্তি বা ক্যালরির চমৎকার উৎস হিসেবে খাওয়া হচ্ছে শুকনো আঙুর বা কিশমিশ। স্বাস্থ্যগুণে এটি অতুলনীয়। কিশমিশে রয়েছে অত্যন্ত উপকারী কিছু ভিটামিন ও খনিজের ভাণ্ডার।
তাই দেহে পুষ্টির ঘাটতি দূর করার কাজে কিশমিশের জুড়ি মেলা ভার। এমনকি এতে মজুত থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ছোট-বড় রোগের ফাঁদ এড়িয়ে চলতেও আমাদের সাহায্য করে। তাই নিয়মিত কিশমিশ খাওয়া আবশ্যক।
আবার এই অতি উপকারী কিশমিশই আপনার ডায়াবেটিস এবং ওজন বৃদ্ধিসহ কয়েকটি বদ বিপদের কারণ হতে পারে! ভাবছেন কীভাবে?
আসলে একটি খাবার যতই পুষ্টিগুণে ভরপুর হোক না কেন, সেটি অবশ্যই মেপে খেতে হয়। অতিরিক্ত খেলেই হীতে বিপরীতে হয়, অর্থাৎ ক্ষতি করে। কিশমিশের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নয়। অনেকে আছেন প্রতিদিন মুঠো মুঠো কিশমিশ খান। বিপত্তিটা তখনই ঘটবে।
চলুন তবে আর দেরি না করে অতিরিক্ত কিশমিশ খাওয়ার ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে জেনে নিই।
পেটের সমস্যা বাড়তে পারে
কিশমিশে রয়েছে ফাইবারের ভাণ্ডার। এই উপাদান পেটের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তবে নিয়মিত অত্যধিক পরিমাণে কিশমিশ খেলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
কারণ, কিশমিশে থাকা ফাইবার অন্ত্রের সমস্ত পানি শুষে নিতে পারে। সে কারণে বদহজম থেকে শুরু করে ডিহাইড্রেশনসহ একাধিক গুরুতর সমস্যার খপ্পরে পড়তে পারেন। তাই সময় থাকতে এই বিষষে সাবধান হন।
কোষেরও হতে পারে ক্ষতি
কিশমিশ হলো পলিফেনল, বায়োফ্ল্যাভানয়েডস এবং ফাইটোনিউট্রিয়েন্টের মতো বেশকিছু উপকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টর আঁতুরঘর, যা আমাদের একাধিক রোগের ফাঁদ এড়িয়ে চলতে সাহায্য করে।
তবে প্রতিদিন একগাদা কিশমিশ খেলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ওভারডোজ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই কারণে ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে পারে দেহের অসংখ্য কোষ। তাই এবার থেকে মুঠো মুঠো কিশমিশ খাওয়ার আগে একবার ভাবুন।
উর্ধ্বমুখী হবে ওজন
কিশমিশের ক্যালোরি ভ্যালু অনেকটাই বেশি। তাই প্রতিদিন একগাদা কিশমিশ খেলে যে শরীরে বাড়তি ক্যালোরি প্রবেশ করবে, তা বলাই বাহুল্য! এই বাড়তি ক্যালোরির কারসাজিতেই স্বাভাবিকের গণ্ডি ছাড়িয়ে যাবে ওজন।
তাই সুস্থ-সবল জীবন কাটানোর ইচ্ছা থাকলে কম পরিমাণে কিশমিশ খাওয়ার চেষ্টা করুন। নইলে কিন্তু বিপদের শেষ থাকবে না।
বাড়বে সুগার লেভেল বা ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিশমিশ খুব একটা উপাদেয় ড্রাই ফ্রুট নয়। কারণ এই ড্রাই ফ্রুটের ক্যালোরি ভ্যালু অনেকটাই বেশি। তাই নিয়মিত একগাদা কিশমিশ খেলে যে সুগার বাড়বে, এটা সহজেই অনুমেয়।
সে কারণে ডায়াবেটিস রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনোমতেই এই ড্রাই ফ্রুট খাবেন না। এই নিয়মটা মেনে চললেই সুস্থ থাকতে পারবেন।
তাহলে কতটা খাবেন?
যেকোনো সুস্থ মানুষ দিনে ৫ থেকে ১০টা কিশমিশ খেতে পারেন। এর বেশি খেলেই বিপদ। একইভাবে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য দিনে ২ থেকে ৫টা কিশমিশ যথেষ্ট। তাহলেই আর সমস্যার ফাঁদে পড়তে হবে না।