বিক্ষোভ মিছিল করে সংসদকে এবি পার্টির লালকার্ড প্রদর্শন

মঙ্গলবার, জানুয়ারি ৩০, ২০২৪

 

জাতির সংবাদ ডটকম।।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদকে ‘প্রহসনের ফাইভ পার্সেন্ট সংসদ’ আখ্যা দিয়ে এবি পার্টি বলেছে আওয়ামীলীগ মুখে গণতন্ত্রের খই ফুটায় কিন্তু মনে মনে তারা পুরোদস্তুর স্বৈরাচার। আওয়ামীলীগ নেতাদের অন্তরে দেশের ৯৫ ভাগ মানুষের প্রতি হিংসা ও বিষ, ফলে তাদের স্বৈরাচারী কর্মকান্ড বাংলাদেশকে এক ভয়াবহ অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে হচ্ছে।
আজ দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনকে প্রত্যাখ্যান করে লালকার্ড প্রদর্শন ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি ‘এবি পার্টি’। বিকাল সাড়ে ৩ টায় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন বিজয়-৭১ চত্বরে বিক্ষোভ শুরুর পূর্বেকার সমাবেশ থেকে উপরোক্ত কথা বলেন এবি পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। মিছিলটি বিজয়নগর, নাইটিঙ্গেল, পল্টন সহ রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। বিক্ষোভকালে নেতা-কর্মীরা জাতীয় সংসদের অধিবেশনকে ‘প্রহসনের ফাইভ পার্সেন্ট সংসদ’ আখ্যা দিয়ে প্রতীকী লাল কার্ড প্রদর্শন করে।
দলের যুগ্ম আহবায়ক বিএম নাজমুল হকের সঞ্চালনায় মিছিল শুরুর প্রক্কালে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির আহবায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী , সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, যুবপার্টির আহবায়ক এবিএম খালিদ হাসান, মহানগর উত্তরের আহবায়ক আলতাফ হোসাইন প্রমূখ।

এএফএম সোলায়মান চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে জাল জালিয়াতি করে ডামি সংসদ গঠন করেছে আওয়ামীলীগ। সংবিধান লঙ্ঘন করে এই সংসদের সদস্যরা অবৈধভাবে শপথ নিয়েছে। আমরা ভোট চুরি করা এই সংসদকে লালকার্ড প্রদর্শন করে বয়কটের আহ্বান জানাচ্ছি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় এবি পার্টির এই সংগ্রাম চলছে, চলবে ইনশাআল্লাহ।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, আওয়ামীলীগ জন্মকালে ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ পরে সেকুলার সাজতে গিয়ে মুসলিম শব্দ বাদ দিয়ে সে হয়েছে আওয়ামীলীগ। মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও সে আদতে মনে মনে স্বৈরাচার। সেজন্য সে সুযোগ পেলেই বাকশালের রূপ ধারণ করে। বর্তমান দ্বাদশ সংসদকে ‘ফাইভ পার্সেন্ট জনপ্রত্যাখ্যাত সংসদ’ আখ্যা দিয়ে মঞ্জু বলেন, আমাদের এই প্রতীকী লাল কার্ড প্রদর্শন মূলত: দেশের পঁচানব্বই ভাগ মানুষের পক্ষ থেকে বেআইনী সংসদকে প্রত্যাখ্যানের আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ। আওয়ামীলীগ নেতারা মুখে সুন্দর সুন্দর কথা বলেন কিন্তু বাস্তবে ৯৫ ভাগ মানুষের প্রতি তাদের অন্তরজুড়ে আছে হিংসা ও বিষ। তাদের লুটপাট ও স্বৈরাচারী কর্মকান্ড বাংলাদেশকে এক ভয়াবহ অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম গুমের শিকার হয়েছিলেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার জহীর রায়হান। ‘ষ্টপ জেনেসাইড’ (গনহত্যা বন্ধ করুন), বার্থ অফ অ্যা নেশন (একটি জাতির জন্ম) নামে ইংরেজীতে ডকুমেন্টারী করে সারা দুনিয়াতে মুক্তযুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরী করেছিলেন তিনি। ১৯৭২ সালের ২৫ জানুয়ারি ঢাকা প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে কৃতি চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান ঘোষণা দেন, বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ডের পেছনে নীলনকশা উদ্ঘাটনসহ মুক্তিযুদ্ধের সময়ের অনেক গোপন ঘটনার নথিপত্র, প্রামাণ্য দলিল তার কাছে আছে, যা প্রকাশ করলে সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশের মন্ত্রীসভায় ঠাঁই নেয়া অনেক নেতার কুকীর্তি ফাঁস হয়ে পড়বে। আগামী ৩০ (১৯৭২ সালের) জানুয়ারি সন্ধ্যায় এই প্রেসক্লাবে ফিল্ম শো প্রমাণ করে দেবে কার কি চরিত্র ছিল?’ ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ এ বড় ভাই শহীদুল্লাহ কায়সারকে খুঁজতে গিয়ে অনেক থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসে। ওনার স্ত্রী অভিনেত্রী সুমিতা, শ্যালিকা অভিনেত্রী ববিতা, বোন, ছেলে সকলেই মনে করেন তৎকালীন সরকার এই গুমের সাথে জড়িত। এরকম একটা ঐতিহাসিক দিনে প্রথম গুম দিবসে ভোট ডাকাতরা সংসদের দখল নিয়েছেন, এটা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।

লালকার্ড মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন, এবি পার্টির সহকারী সদস্যসচিব শাহ আব্দুর রহমান, অধ্যাপক আবু হেলাল, শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, মাসুদ জমাদ্দার রানা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্যসচিব সফিউল বাসার, কেফায়েত হোসেন তানভীর, আহমেদ বারকাজ নাসির, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, যুবপার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব সুলতানা রাজিয়া, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সেলিম খান, এনামুল হক, মশিউর রহমান মিলু, খাইরুল ইসলাম, আমেনা বেগম, ফেরদৌসী আক্তার অপি, পল্টন থানা আহবায়ক আব্দুল কাদের মুন্সি, যাত্রাবাড়ী থানা সমন্বয়ক সিএম আরিফ সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।