জাতির সংবাদ ডটকম: গ্রামের সহজ সরল মানুষদের অতিরিক্ত লাভের প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিত মহানন্দা পল্লী উন্নয়ন সংস্থা নামের একটি ভুয়া এনজিও। এমনকি ঋণ দেওয়ার সময় এনজিওটি গ্রাহকদের থেকে নিয়ে রাখত ফাঁকা চেক। পরে মামলা দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আদায় করত ঋণের অতিরিক্ত টাকা।
গ্রাহকের প্রায় ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এই ভুয়া এনজিও ও প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ মাঠ কর্মী তিনজনকে আটক করেছে র্যাব-৫, সিপিসি-১ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্প।
সোমবার (২০ মার্চ) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ র্যাব ক্যাম্প থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
র্যাব জানায়, সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের কাউন্সিল বাজারস্থ মহানন্দা পল্লী উন্নয়ন সংস্থার অফিস রুম থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। এ সময় ভুয়া কাগজপত্র, সিল, বিভিন্ন ব্যাংকের ফাঁকা চেক জব্দ করে র্যাব।
আটককৃতরা হলেন- প্রতারক চক্রের মূলহোতা ও ভুয়া এনজিওর পরিচালক গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের কাশিয়াবাড়ি গ্রামের মৃত মাহাবুবুল আলমের ছেলে মো. ওয়াহিদুজ্জামান (৪২), মাঠকর্মী দুর্গাপুর গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে মো. শিমুল আলী (২৮), অফিস সহায়ক ঘাটনগর গ্রামের আনিরুল ইসলামের ছেলে মো. ফিরোজ আলী (২৪)।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, এই চক্রটি সংঘবদ্ধভাবে গ্রামের সহজ সরল মানুষের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য মহানন্দা পল্লী উন্নয়ন সংস্থা নামের একটি ভুয়া এনজিও প্রতিষ্ঠা করে। এই এনজিওতে বিভিন্ন গ্রাহককে অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে গরিব অসহায় লোকদের বিনিয়োগ করতে এবং টাকা ঋণ নেওয়ার জন্য উস্কানি দেয়। এমনকি ঋণ দেওয়ার বিপরীতে গ্রাহকদের থেকে ফাঁকা চেক নিয়ে পরে ব্ল্যাকমেইল করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করত তারা। পরে গ্রাহকের জমাকৃত লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিত।
র্যাব আরও জানায়, অসংখ্য ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে চাঁপাইনবাগঞ্জের র্যাবের গোয়েন্দা দল দীর্ঘদিন ধরে এ বিষয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে। সম্প্রতি গণমাধ্যমে এনওজিও-র বিষয়ে ব্যাপক লেখালেখি হলে র্যাব অভিযান পরিচালনা করে। এতে মহানন্দা পল্লী উন্নয়ন সংস্থার প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ তিনজনকে আটক করা হয়। মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি-এমআরএ’র অনুমোদন ছাড়াই তারা দীর্ঘদিন ধরে ক্ষুদ্র ঋণের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে, যা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি ও অপরাধ।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে গোমস্তাপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানায় র্যাব-৫ সিপিসি-১ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্প। এছাড়াও র্যাব নিয়মিত জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, মাদক, ভেজাল পণ্য, ছিনতাইকারীসহ হেরোইনের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করেছে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।