মনোহরগঞ্জে এতিমখানায় শিশু শিক্ষার্থী হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

সোমবার, আগস্ট ১৮, ২০২৫

মনোহরগঞ্জ কুমিল্লা প্রতিনিধি।। 

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে এতিমখানায় শিশু শিক্ষার্থী তাহমিদ হত্যার প্রতিবাদ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।

সোমবার বেলা ১১টায় উপজেলার হাসনাবাদে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন হাসনাবাদ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান, সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মুনাফ, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবদলের সদস্য সচিব ফরিদ উদ্দিন শিবলু, মাদরাসার মুহতামিম আবু ইউসুফ, তাহমিদের মামা মোঃ মামুন, আবদুল মজিদ ভূইয়া, বেলাল হোসেন বেলাল, সাবমির মাহমুদ শামীম। বক্তারা প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে বলেন তাহমিদ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের খুঁজে বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করুন। একটা শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করার চার মাস পরও খুনি ধরা পড়েনি এটা দুঃখজনক।

তাহমিদের মামা মামুন বলেন, তাহমিদের লাশ উদ্ধারের সময়েই বলেছি এটা হত্যাকাণ্ড কিন্তু কেউ আমার কথা বিশ্বাস করেনি। তিনি বলেন হত্যাকাণ্ডের সাড়ে তিনমাস পর ময়নাতদন্ত রিপোর্টে প্রমাণ হলো আমার ভাগিনাকে হত্যা করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন ময়নাতদন্ত রিপোর্টে তাহমিদকে হত্যা করা হয়েছে প্রমাণ হলেও রিপোর্ট আসার ২০ দিন পরও খুনিদের চিহ্নিত করতে পুলিশের কোনো তৎপরতা নেই। তাহলে কি তাহমিদের খুনিদের চিহ্নিত করা যাবেনা? যদি যায় তাহলে দ্রুত খুনিদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান।

এছাড়া তাহমিদের প্রকৃত খুনিদের খুঁজে বের করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান মানববন্ধনে অংশ নেয়া স্থানীয় জনতা। তারা হুশিয়ার করে বলেন তাহমিদের হত্যাকারীদের কেউ বাঁচানোর চেষ্টা করলে আমরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো। মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন আবদুল মান্নান মনু, আনোয়ার হোসেন রুবেলসহ হাসনাবাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন শেণিপেশার মানুষ।

জানা যায় গত ১৪ এপ্রিল সকালে উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের জিনারাগ অহিদুল আলম ইসলামীয় দারুল কোরআন ও এতিমখানা মাদরাসার ছাদ থেকে নুরানি বিভাগের তাহমিদ নামের (৯) এক শিশু শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। ওইদিনই তাহমিদের মামা মামুন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ময়নাতদন্তের সাড়ে তিন মাস পর রোববার ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়া যায়। রিপোর্টে শিশু তাহমিদকে স্বাসরোধ করে হত্যার আলামত পাওয়া যায়।

এব্যাপারে মনোহরগঞ্জ থানার ওসি বিপুল চন্দ্র দে বলেন, শিশু তাহমিদের লাশ উদ্ধারের পর মাদরাসা শিক্ষক শাহারাস্তি উপজেলার ছোটতুলা গ্রামের হাফেজ আবদুর রহমানের ছেলে মোঃ রেদোয়ান (৩০)কে সন্দেহজনকভাবে আটক করে দুইবার রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করি, দুইবারেই রেদোয়ান হত্যার কথা অস্বীকার করে, আটককৃত শিক্ষক রেদোয়ান বর্তমানে জামিনে রয়েছে।

তিনি বলেন আমরা চেষ্টা করছি প্রকৃত খুনিদের বের করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসার জন্য।
তাহমিদ নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার বানসা তরফদার বাড়ির মাইন উদ্দিনের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় ১৪ এপ্রিল সকাল বেলায় তাহমিদ ক্লাসে অনুপস্থিত থাকায় ছাত্ররা তাকে খুঁজতে গিয়ে ছাদে লাশ পড়ে থাকতে দেখে। পরে পুলিশকে জানালে লাকসাম সার্কেল অফিসার সুমেন মজুমদার মনোহরগঞ্জ থানার এসআই প্রবীণসহ পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।