মানুষ খুনের পরামর্শদাতারা এখনো গণমাধ্যমে কতৃত্ব করছে : জাহিদ

সোমবার, জুন ১৬, ২০২৫

জাতির সংবাদ ডটকম।।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, মানুষ খুনের পরামর্শদাতারা এখনো গণমাধ্যমে কতৃত্ব করছে। যারা মানুষ মারার পরামর্শ দেয় তারা কীভাবে সাংবাদিক হয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও আওয়ামী লীগ একসঙ্গে চলে না। কারন তারা যতবারই রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়েছে মত প্রকাশের স্বাধীনতা, গণতন্তকে হরন করেছে।

গতকাল সোমবার দুপুরে সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) আয়োজিত এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম।

আলোচনায় জাহিদ হোসেন বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় কিছু সাংবাদিক মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করে না, ব্যক্তিগত ভাগ্য উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করেছে। এ কারণে কারো কারো ব্যাংক অ্যাকাউন্টে শত কোটি টাকা লেনদেন হয়। আবার দেশের বাইরে অনেকে বাড়ি করেছেন।

জনগণের প্রতি অন্তবর্তীকালীন সরকারের দায়বদ্ধতা নেই বলে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা হলো গণতন্ত্র বিকাশের অন্যতম একটি উপাদান। মতমতের স্বাধীনতা চাইলে সাংবাদিকদের সরাসরি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলতে হবে।

সভায় বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান গণমাধ্যমের প্রতি যে নিপীড়ন চালিয়েছেন সেটা দুনিয়ার ইতিহাসে আর কোথাও হয়নি। আমরা চাই একটি মানবিক দেশ যেখানে কোনো গুম, খুন, হত্যা, মামলা নির্যাতন থাকবে না। কাদের গনি বলেন, ৫০ বছর পরও কেন আমরা সংবাদ পত্রের কালো দিবস নিয়ে আলোচনা করি? কারণ, সংবাদপত্রের ইতিহাসে এমন দিন আর কখনো আসেনি।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ বলেন, বাকশালের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকেও শেখ মুজিব বিলীন করে দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগকে মুক্ত করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। মিডিয়াকে অস্থিতিশীল করার জন্য দেশে এবং দেশের বাইরে চক্রান্ত চালানো হচ্ছে। সে কারণে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। মিডিয়াকে ফ্যাসিস্ট মুক্ত হয় সেজন্য আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, ৭৫ সালে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তের আলোকে সংবাদপত্রের গলা চেপে ধরা হয়। বিগত ১৬ বছর একই কায়দায় সংবাদপত্রের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে প্রাপ্ত নতুন বাংলাদেশের গণমাধ্যম এখনো ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়নি । বিভিন্ন গণমাধ্যম এখনো ফ্যাসিবাদের বয়ান প্রচার করে তাদের পুনর্বাসিত করার স্বপ্নে বিভোর। তাই গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রন নয়, গণমাধ্যমকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করে সাংবাদিকদের সত্যিকারের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে বর্তমান মরকারকে যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার পর যখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গুম, খুন, ব্যাংক লুটের ঘটনা ঘটাচ্ছিল তখন তা যাতে প্রকাশিত হতে না পারে সে জন্য সব পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলমের পরিচালনায় এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহিন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, নিউ নেশনের সাবেক সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি খায়রুল বাশার, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি ও ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম মহসিন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহকারি মহাসচিব বাসির জামাল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি খন্দকার হাসনাত করিম পিন্টু, আব্দুল আওয়াল ঠাকুর, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি রাশেদুল হক ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খান।