■ নুরুল আলম,মিরসরাইঃ
আজ একযুগ পূর্ন হয়েছে মিরসরাই উপজেলার আবুতোরাব ট্রাজেড়ির। শোকের আবরণে নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে নিহত ৪৪ জনের স্মৃতি আবেগ ও অন্তিমে চোখের অশ্রুতে স্বরণ করবে স্বজনরা। স্মৃতির জার্নালে ভেসে ওঠবে কারও ভাই, কারও সন্তান, কারও বন্ধু-স্বজন, সহপাঠী কিংবা প্রিয় ছাত্রদের অকাল নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার দৃশ্যপট। এখনো সেই দুঃসহ স্মৃতি বয়ে বেড়ান নিহতদের স্বজনরা। এখনো দুর্ঘটনাস্থলে নির্মিত আবেগ ও অন্তিমের পাশ দিয়ে চলাচলের পথে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে থমকে যান স্বজনরা ।
২০১১ সালের ১১ জুলাই সোমবার। একটি সড়ক দুর্ঘটনা শোকবিহ্বল করে তুলছিল সমগ্র জাতিকে। সেদিন মিরসরাই উপজেলা সদরের স্টেডিয়াম থেকে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল খেলা দেখে বাড়ি ফেরার পথে বড়তাকিয়া আবুতোরাব সড়কের সৈদালী এলাকায় চালকের অসতর্কতায় প্রায় ৮০ জন শিক্ষার্থীকে বহনকারী একটি মিনি ট্রাক উল্টে পার্শ্ববর্তী ডোবায় পড়ে যায়। এই ঘটনায় আবুতোরাব উচ্চ বিদ্যালয়, আবুতোরাব কলেজ, আবুতোরাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩৮ জন শিক্ষার্থী ও একজন এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে নিহত হন। পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরও ছয়জন। তাদের মধ্যে ছিল ৪২ জন শিক্ষার্থী, দুই স্থানীয় কিশোর এবং একজন অভিভাবক। ৪৫টি তাজা প্রাণ মুহুর্তেই স্মৃতি হয়ে মিলিয়ে যায় সেদিনের সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনায়। লাশের মিছিলে ভারী হয়ে ওঠে গ্রামের পর গ্রাম। শোকের জনপদে পরিণত হয়েছিল মায়ানী, আবুতোরাব, মঘাদিয়াসহ পার্শ্ববর্তী সাতটি গ্রাম। আজও সেই স্মৃতিসৌধ ‘অন্তিম’-এর পাশে এলেই গা শিউরে ওঠে স্বজন- সহপাঠী কিংবা পথচারীদের।
দিনটিকে ঘিরে কর্মসূচি : পিতার কাঁধে পুত্রের লাশ সেই হৃদয়বিদারক ঘটনার পর প্রতি বছর এই দিনটি এলে আবুতোরাব এলাকা ঘিরে তৈরি এক শোকাভিভূত দৃশ্য। একযুগ পরও এলাকার মানুষের কাছে একটুও কমেনি আবেগ। একযুগ পূর্তিতে এই দিনটি স্মরণ করে নেওয়া হয়েছে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি। কর্মসূচিতে থাকছে আলোচনা সভা, স্মৃতি বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, অন্য ধর্মাবলম্বীদের বিশেষ প্রার্থনা।
আবুতোরাব উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আবুল হোসেন বাবুল বলেন, ‘সেদিনের ভয়াল স্মৃতি মনে হলে এখনো শিহরন তৈরি হয় । নিহতদের জন্য সকালে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। তাদের স্মরণে আবেগ ও দুর্ঘটনাস্থল অন্তিমে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। এরপর স্কুল প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
