মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
মিরসরাই উপজেলা ছাত্রদল নেত্রী নাদিয়া নুসরাত কে চট্টগ্রামে তারুণ্যের সমাবেশে থেকে বাড়ি ফেরার পথে রাতের অন্ধকারে তুলে নিয়ে দূর্বৃত্তরা নির্যাতন চালানোর পর জোরারগঞ্জ থানার পুলিশের হাতে তুলে দেন। নির্যাতনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে পুলিশ উল্টো মিথ্যা মামলায় চালান করে নাদিয়া নুসরাত কে। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি, ছাত্রদল সহ বিভিন্ন সংগঠন।
জানাগেছে, গত ১৪ জুন বুধবার, চট্টগ্রাম কাজীর দেউরী চত্বরে বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে তারুণ্যের মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে সিএনজি যোগে বাড়ি ফেরার পথে মিরসরাই উপজেলা ছাত্রদল নেত্রী নাদিয়া নুসরাত”কে মিরসরাই ইছাখালী শাহাজী বাজার এলাকা থেকে রাত ৯ টার দিকে অজ্ঞাত স্থানে তুলে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে প্রায় ৩/৪ ঘন্টা পর জোরারগঞ্জ থানায় সোপার্দ করে। পরদিন জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ বিস্ফোরক আইনে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সাংসদ থেকে নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেন। ১৮ জুন সকালে নির্যাতনের সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবিতে চট্টগ্রাম কাজীর দেউরী নসিমন ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগরের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। মিরসরাই উপজেলা সদরে সকালে বিক্ষোভ মিছিল করে চট্টগ্রাম উত্তরজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান সমর্থিত উপজেলা ছাত্রদল, যুবদল। সকালে নাদিয়া নুসরাতের বাড়িতে গিয়ে তার মাকে শান্তনা জানিয়ে বিচার আদায়ের প্রতিশ্রুতি জানান চট্টগ্রাম উত্তরজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, মিরসরাই উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব গাজী নিজাম উদ্দিন, বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপির আহবায়ক দিদারুল আলম মিয়াজি। তারা এ ঘটনায় জোরারগঞ্জ পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, কিভাবে একজন পুলিশ অফিসার রাতের অন্ধকারে তুলে নিয়ে একজন নারীকে নির্যাতনের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিয়ে বিস্ফোরক মামলা দিয়ে একজন নিরীহ তরুণীকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। আমরা এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে উক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দেশের আইনজীবী সমাজ, নারী সমাজ ও সুশীল সমাজের প্রতি জোরালো আবেদন জানাই। এছাড়া বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ এ জঘন্য অপরাধের বিচার দাবি করে প্রধান বিচারপ্রতির হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে চট্টগ্রামের ডিআইজিকে ঘটনার ফুটেজ তদন্ত করে জোরারগঞ্জ পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম চট্টগ্রামের আহ্বায়ক সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি ও সদস্য সচিব ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালী এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, বাংলাদেশ মানবাধিকার সংস্থা কে এ ব্যাপারে জরুরিভিত্তিতে তদন্ত করে জড়িতদের খুঁজে বের করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ও জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন ।
চট্টগ্রাম উত্তরজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান জানান, ছাত্রদল নেত্রী নাদিয়া নুসরাত এর উপর হামলা ও নির্যাতনের সাথে জড়িত আওয়ামী সন্ত্রাসীদের প্রেফতার এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ নিঃশর্ত মুক্তি দাবি জানাই। এই ঘটনায় পুলিশের ন্যাক্কারজনক ভুমিকার তীব্র নিন্দা জানাই।
জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদ হোসেন জানান, নুসরাতের বাড়ি মিঠানালা গ্রামে। তাকে রাত ১১ টায় কাটাছড়া শাহজী বাজার দুজন ছাত্রদল কর্মী সহ দেখে স্থানীয় লোকজন জিজ্ঞাসাবাদ করে আটকে রাখে। পরে পুলিশ গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সে ছাত্রদল নেত্রী পরিচয় দিলে। তার বিরুদ্ধে বারইয়ারহাট বাজারে একটি রাজনৈতিক মামলার তথ্য প্রমান পাওয়া যায়। সে মামলায় তাকে চালান দেওয়া হয়েছে।