আরমান বাদল
দাম কমে কিছুদিন স্থিতিশীল থাকার পর ফের ডিমের দাম নিয়ে ‘কারসাজি’ চলছে। তদারকি সংস্থার নজরদারি না থাকায় বাড়ানো হচ্ছে পণ্যটির দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি ডজন ডিমে ৬ টাকা বেড়ে খুচরা বাজারে ১৫৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সঙ্গে বাড়ছে পাম তেলের দামও। প্রতি সপ্তাহেই পণ্যটির দাম যেন লাগামহীন।এ ছাড়া রোজাকে কেন্দ্র করে গত মাস থেকেই ছোলার দাম বাড়ানো হচ্ছে। সর্বশেষ সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ৫ টাকা বেড়ে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পণ্যটি।ডিমের খাবার
বৃহস্পতিবার রাজধানীর খুচরা বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
খুচরা বিক্রেতারা জানায়, বৃহস্পতিবার প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৪-১৫৬ টাকা। যা সাত দিন আগেও ১৩৫-১৫০ টাকা ছিল। আর গত বছর একই সময় এই ডিম ডজন প্রতি ১১৪-১২৬ টাকায় বিক্রি হয়।
মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে নয়াবাজারের ডিম বিক্রেতা আলাউদ্দিন মিয়া জাতির সংবাদকে বলেন পাইকারি আড়তের ব্যবসায়ীরা কিছুদিন পর পর ডিম নিয়ে কারসাজি করে। তদারকি সংস্থার নজরদারি না থাকলে দাম বাড়িয়ে দিয়ে অতি মুনাফা করে পাইকাররা। আবার নজরদারি শুরু হলে দাম কমায়। গত এক বছর ধরে তারা একই কাজ করছে। এতে এই পুরোটা সময় ধরে ডিম ক্রেতারা বাড়তি দরে কিনেছে।ডিমের খাবার
এদিকে খুচরা বাজারে প্রতি লিটার খোলা পাম তেল বিক্রি হচ্ছে ১৫৮-১৬০ টাকা। যা সাত দিন আগে বিক্রি হয়েছে ১৫৭-১৫৯ টাকা। এক মাস আগে এই তেল বিক্রি হয়েছে ১৫৪-১৫৫ টাকায়। আর গত বছর ঠিক একই সময় বিক্রি হয়েছে লিটার প্রতি ১২৫-১৩০ টাকা। পাশাপাশি প্রতি লিটার পাম তেল সুপার বিক্রি হচ্ছে ১৬২-১৬৩ টাকা। যা সাত দিন আগে বিক্রি হয়েছে ১৬০-১৬১ টাকা। এক মাস আগে ১৫৬-১৫৭ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর গত বছর ঠিক একই সময় বিক্রি হয়েছে লিটার প্রতি ১৩৫-১৪০ টাকা।
রায়সাহেব বাজারে পণ্য কিনতে আসা মো. খালেক জাতির সংবাদকে বলেন বাজারে প্রতি সপ্তাহে কিছু না কিছু পণ্যের দাম বাড়ে। বিক্রেতারা ইচ্ছে করে দাম বাড়ায়। ক্রেতাকে জিম্মি করে টাকা লুটে নেয়। তিনি বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে যারা বাজ করছে তারা ব্যর্থ। তারা লোক দেখানো কাজ করে। তারা ব্যবসায়ীদের ভয় পায়। তা না হলে এতদিনে পণ্যের দাম নিয়ে যারা কারসাজি করছে তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হতো।
অন্যদিকে রোজাকে ঘিরে ছোলার দাম নিয়েও অস্থিরতা চলছে। এই পণ্যটির দাম বিক্রেতারা এক প্রকার নিরবেই বাড়িয়ে যাচ্ছে। তবুও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে কোনো প্রকার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। খুচরা বিক্রেতারা জানায়, প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা। যা সাত দিন আগেও ১৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর গত বছর ঠিক একই সময় প্রতি কেজি ছোলা খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছে ৮৫-৯০ টাকায়।
এদিকে চালের খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৮০ টাকা। মাঝারি আকারের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮-৬৩ টাকা। যা সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ২ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকা।
কাওরান বাজারের আল্লাহর দান রাইস এজেন্সির মালিক সিদ্দিকুর রহমান জাতির সংবাদকে বলেন, আমন ধানের চাল বাজারে আসলেও মিলাররা চালের দাম কমাচ্ছে না। বাড়তি দামে মিল থেকে চাল বিক্রি করায় পাইকারি বাজারে চালের দাম কমেনি। এজন্য খুচরা বাজারেও বিক্রি হচ্ছে চড়া মূল্যে।
বাজারে প্রতি কেজি খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা। প্যাকেটজাত প্রতি কেজি আটা বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা। প্রতি কেজি খোলা ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। প্যাকেটজাত ময়দা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা। বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা। দুই লিটারের বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ টাকা। পাঁচ লিটারের বোতলজাত বিক্রি হচ্ছে ৮১৮ টাকা। খোলা সয়াবিন প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৬৮-১৭০ টাকা।