
মো: গোলাম কিবরিয়া, রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি
রাজশাহীতে জুলাই আন্দোলনে হামলার ঘটনায় দায়ের করা দুটি হত্যাসহ মোট ৯টি মামলার অভিযোগপত্র (চার্জসীট) দাখিল করেছে পুলিশ। মামলাগুলো তদন্ত করেছে রাজশাহী নগর পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। এসব মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন মোট ৫২৯ জন।
গেল কয়েকদিনে মামলাগুলোর অভিযোগপত্র দাখিল হয়েছে বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের আদালত পরিদর্শক আবদুর রফিক। তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন ধরেই একটা-দুটো করে মামলার চার্জশিট পাচ্ছি। গত তিনদিনে মোট ৯টি মামলার চার্জশিট এসেছে। সংশ্লিষ্ট আদালতে সেগুলো দাখিল করা হয়েছে।
জুলাই আন্দোলনে রাজশাহীতে দুজন শহীদ হন। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া দুটি হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, রাজশাহীর সাবেক সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনসহ ২৪৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া অন্য সাতটি মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন আরও ২৮৫ জন। সবমিলিয়ে অভিযুক্ত হয়েছেন ৫২৯ জন।
আরএমপির মুখপাত্র গাজিউর রহমান জানান, শহীদ সাকিব আনজুম হত্যা মামলায় ১১৭ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আর আলী রায়হান হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন ১২৭ জন। সবমিলিয়ে দুই হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন ২৪৪ জন। অন্য ৭ মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন ২৮৫ জন। তদন্ত শেষে মোট ৯টি মামলায় ৫২৯ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘মামলাগুলো তদন্তে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করেছি। ৯টি মামলার প্রত্যেকটির অভিযোগ খতিয়ে দেখা হয়েছে এবং প্রত্যক্ষদর্শী, সিসিটিভি ফুটেজ, ডিজিটাল প্রমাণসহ বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। দীর্ঘ তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
তিনি জানান, হত্যা ছাড়াও হামলা, ভাঙচুর, বিস্ফোরক ও অস্ত্র আইনে আসামিদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে, তাদেরকেই অভিযুক্ত করা হয়েছে।
গাজিউর রহমান আরও জানান, গত বছরের ৫ আগস্ট রাজশাহী মহানগরীর কল্পনা হল মোড়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের তাড়া খেয়ে শাহমখদুম কলেজের পাশের একটি বাড়ীতে আশ্রয় নেয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সাকিব আনজুম। সেখানেই তাকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় তার পিতা মাইনুল ইসলাম বাদি হয়ে গত বছরের ২৩ আগস্ট বোয়ালিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার চার্জশীটে শেখ হাসিনা, ওবাইদুল কাদের ও খায়রুজ্জামান লিটনসহ ১১৭ জনকে আসামি করা হয়েছে ।
অপর দিকে আলী রায়হান কল্পনার মোড়ে ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুত্বর আহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮ আগস্ট মারা যান। এ ঘটনায় ১৯ আগস্ট রায়হান আলীর ছোট ভাই রানা ইসলাম বাদী হয়ে বোয়ালিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলাতেও শেখ হাসিনা, ওবাইদুল কাদের ও খায়রুজ্জামান লিটনসহ ১২৭ জনকে আসামি করা ।