রূপগঞ্জে পৌর কাউন্সিলরের কার্যালয়, বসতবাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ আহত-৫ 

বুধবার, আগস্ট ১৪, ২০২৪

জাতির সংবাদ ডটকম ।।

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের তারাবো পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাহবুবুর রহমান মোল্লা জাকারিয়ার কার্যালয়, বসতবাড়ি ও শিল্পকারখানায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট তাণ্ডব করেছে দুর্বৃত্তরা ।

 

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের তোপের মুখে পড়ে গত ৫ আগস্ট, ২০২৪ আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নব্য আওয়ামী লীগার তারাবো পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের বরপা এলাকার শওকত আলীর ছেলে আব্দুর রউফ মিয়া ও মামুন মিয়া এবং বোরহান মোল্লার ছেলে স্বপন মোল্লার উস্কানিতে এ ভয়াবহ ঘটনা ঘটে।

 

 

এসময় হামলায় অন্তত ৫ জন আহত হন ও তাদেরকে উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় প্রায় দেড় কোটি টাকার সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির দাবি ভুক্তভোগী জাকারিয়া মোল্লার।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মানবিক ও জনসেবামূলক কাজ করতেন জাকারিয়া মোল্লা। তাঁর পিতা- মরহুম মোস্তাফিজুর রহমান মোল্লাও ছিলেন একজন দানবীর সমাজসেবক। এই পরিবারের হাত ধরে এলাকায় অসংখ্য মসজিদ, মাদ্রাসা, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সেবামূলক সংগঠন নির্মাণ হয়েছে।

 

এই পরিবারটি সবসময়ই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপোষহীন ছিলো এবং তাঁরা ন্যায়বিচার করতেন। জাকারিয়া মোল্লা ও তাঁর পরিবার কখনো অন্যায়কারীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়নি। যাঁর কারণে, একটি সুযোগসন্ধানী কুচক্রী মহলের উস্কানিতে হিংসাত্মক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় জাকারিয়া মোল্লার কাউন্সিল কার্যালয়সহ তাঁর বসতবাড়ি ও শিল্পকারখানায়।

 

 

এসময় হামলাকারীরা একটি মিল ভাঙচুর ও লুটপাট করে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়, একইসঙ্গে একটি ট্রাক পুড়িয়ে বিক্ষত করে। আব্দুর রউফ মিয়া, মামুন মিয়া ও স্বপন মোল্লার জমি দখল, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে বরাবর সোচ্চার ভূমিকা পালন করাই যেনো কাল হলো জাকারিয়া মোল্লার।

 

জানা যায়, গত ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে স্থানীয় এমপি গোলাম দস্তগীর গাজীর হাত ধরে বিএনপি থেকে ভোল পাল্টে আওয়ামী লীগার বনে যাওয়া- আব্দুর রউফ মিয়া, মামুন মিয়া ও স্বপন মোল্লা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় একটি অপরাধ সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন।

 

জমি দখল, চাঁদাবাজি, লুটপাট, ফিটিংবাজি, বিচার বাণিজ্য, মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরিচালনা করতেন তাঁরা। এসব অপকর্মকে কখনো সায় দেননি তারাবো পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাহবুবুর রহমান মোল্লা জাকারিয়া।

 

 

এর জেরেই সুযোগসন্ধানে থাকা আব্দুর রউফ মিয়া, মামুন মিয়া ও স্বপন মোল্লা উস্কানি দিয়ে নব্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কতিপয় কর্মীদের কাজে লাগিয়ে এ বর্বরোচিত হামলা চালায়। একইসঙ্গে কাউন্সিলরের কার্যালয়ে ঢুকে নগদ ৮ লাখ টাকা লুটসহ বসতবাড়ি ও শিল্পকারখানায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে হামলাকারীরা।

 

এ ঘটনায় আরও জড়িত ছিলেন; ১. বাবুল শিকদার, পিতা- মৃত. নূর মোহাম্মদ, ২. ইলিয়াস শিকদার, পিতা- বাবুল শিকদার, ৩. সেলিম ভূঁইয়া, পিতা- হাসমত আলী ভূঁইয়া, ৪. নাদিম, পিতা- সালাউদ্দিন, ৫. শুভ মীর, পিতা- আলমগীর মীর, ৬. কাদির, পিতা- মৃত. আব্দুল আজিজ তুফান, ৭. সেলিম শিকদার, পিতা- রুহুল আমিন, ৮. শাহ জালাল, পিতা- গিয়াসউদ্দিন, ৯. শফিকুল ইসলাম, পিতা- নূর ইসলাম, ১০. রুবেল, পিতা- আব্দুল লতিফ, ১১. মহসিন, পিতা- ইয়াকুব এবং আরও অজ্ঞাতনামা ৫০-৬০ জন।

 

আজীবন গণমানুষের কল্যাণে কাজ করার পরেও নব্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একশ্রেণীর অসৎ নেতাকর্মীদের আক্রোশের শিকার হতে হলো একজন সৎ, নিষ্ঠাবান ও ন্যায়পরায়ণ সমাজসেবক এবং জনপ্রতিনিধির।