লিঙ্গভিত্তিক বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রতিরোধে নেটওয়ার্কিং সভা

শুক্রবার, মার্চ ২৮, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: ডিজিটাল ও নাগরিক পরিসরে যেন শুধুমাত্র সংখ্যাগরিষ্ঠদের দ্বারা শাসিত না হয়, বরং ‘কাউকে পেছনে না ফেলার’ নীতির আলোকে এটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকা উচিত। অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ গড়ে তোলার এবং লিঙ্গভিত্তিক বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়ে এক নেটওয়ার্কিং সভায় বক্তারা একথা বলেন।

বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) রাজধানীর ওয়াইডব্লিউসিএ বাংলাদেশ ট্রেনিং সেন্টারে অনুষ্ঠিত এক নেটওয়ার্কিং সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ভয়েসেস ফর ইন্টারেক্টিভ চয়েস অ্যান্ড এম্পাওয়ারমেন্ট (ভয়েস) আয়োজিত এই সভায় বিভিন্ন নাগরিক সমাজ সংস্থার প্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন।

আলোচনায় বাংলাদেশের বিভিন্ন শাসনামলে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের প্রান্তিককরণের বিষয়টি তুলে ধরা হয়। বক্তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি শৈশব থেকে সামাজিকভাবে বঞ্চিত গোষ্ঠীর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

অনুষ্ঠানে মানবাধিকার সংগঠন স্পার্ক-এর জেন্ডার লিড ডালিয়া চাকমা, বাংলা ট্রিবিউনের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক উদিসা ইসলাম, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক শারমিন উর নাহার এবং নাগরিক উদ্যোগ-এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক নাদীরা পারভীনসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং বিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও নাগরিক দায়িত্ব সংক্রান্ত পাঠ সংযোজনের আহ্বান জানান। ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ বলেন, সাংবাদিক, এনজিও, সিএসও, ডিজিটাল অধিকার কর্মী এবং মানবাধিকার রক্ষাকারীদের একত্রিত হতে হবে, তথ্য আদান প্রদান করতে হবে, সফল কৌশল তুলে ধরতে হবে এবং ডিজইনফরমেশন প্রতিরোধ ও বাকস্বাধীনতা রক্ষা করার চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করতে হবে।

ভয়েসের প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রমিতি প্রভা চৌধুরী সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা এবং জেন্ডার ডিজইনফরমেশনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় ও অরাষ্ট্রীয় উভয় পক্ষ থেকে বাকস্বাধীনতা হুমকির মুখে, তা রক্ষা করতে একটি ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস প্রয়োজন। বিভিন্ন অংশীদাররা একত্রিত হলে অনলাইনে এবং অফলাইনে বাকস্বাধীনতা এবং জেন্ডার সমতা রক্ষা করতে সক্ষম হবেন।

বক্তারা আরও উল্লেখ করেন, বর্তমানে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী সমাজে বিভেদ তৈরি করার চেষ্টা করছে। এটি মোকাবিলা করতে শিক্ষাব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা ও “কাউকে ক্ষতি না করার” নীতির শিক্ষা প্রয়োজন। অংশগ্রহণকারীরা বিদ্যালয়ভিত্তিক সচেতনতা কর্মসূচি গ্রহণের আহ্বান জানান, যা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন, লিঙ্গভিত্তিক বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রতিরোধ এবং সবার জন্য নিরাপদ ডিজিটাল ও নাগরিক পরিসর নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।