স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর কদমতলী থানাধীন শ্যামপুর শিল্পাঞ্চলের ২ নং সড়কে কহিনুর (২৫) হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার ও শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার পরিবার।
রবিবার দুপুর ১২ টায় জুরাইনে শ্যামপুর থানা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কহিনুরের বাবা মোঃ দাদন মিয়া অভিযোগ করেন, আমার মেয়ে কহিনুরের সাথে প্রায় আড়াই বছর পূর্বে পারিবারিক ভাবে মোঃ জাহাঙ্গীরের পুত্র মোঃ রমজান আলী (৩০) বিয়ে হয় এবং তাদের পরিবারে মাহাবিল নামে প্রায় দের বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, কোহিনুরের সাথে শ্বশুরবাড়ির লোকদের পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। ২২ শে জানুয়ারি রাতে কলহের এক পর্যায়ে কোহিনুর কে তারা শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে।
এ ঘটনার পর কহিনুরের বাবা কোহিনুরের শ্বশুর মোঃ জাহাঙ্গীর (৬০) কে প্রধান আসামি করে ছয় জনের নামে কদমতলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। যাহার মামলা নং ৩২/২০২৩
মামলার অন্য আসামিরা হলেন: ২. মোসাঃ পারভীন বেগম (৫১) পিতা- মৃত্যু মোবারক, স্বামী জাহাঙ্গীর ৩. মোঃ কাউসার (৪০) পিতা মোঃ জাহাঙ্গীর, মাতা- পারভীন ৪. ফাতেমা বেগম (২৮) পিতা-মোঃ জাহাঙ্গীর, মাতা পারভীন, স্বামী-রোকন ৫. রোমানা (২৪) পিতা-মোঃ জাহাঙ্গীর, মাতা পারভীন, স্বামী-মোঃ মিজান ৬. মোসাঃ সোমা (১৮) পিতা- মোঃ জাহাঙ্গীর, মাতা-পারভীন। সর্বসাং বাড়ি নং ১০, রোড নং ০২, শ্যামপুর বালুর মাঠ, থানা কদমতলী, ঢাকা-১২০৪।
মৃত কহিনুরের বাবা সাংবাদিকদের জানান, আমার মেয়ের জামাই মোঃ রমজান আলী এ বছরের ৯ জানুয়ারী কর্মস্থল মালয়েশিয়া চলে যায়। এরপর থেকেই পারিবারিক কলহের জের ধরে সামান্য ঘটনায় ই কহিনুর কে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায় তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
তিনি আরো বলেন, গত ২২ জানুয়ারী জমিরউদ্দিন নামে এক ব্যক্তি আমাকে ফোন করে বলেন, আপনার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে, তাকে হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে। আপনি দ্রুত ঢাকায় চলে আসেন বলে ফোন রেখে দেন। তখনই আমি মেয়ের শশুর-শাশুড়ীকে ফোন দিলে তারা কল রিসিভ করেননি।
অল্প কিছুক্ষণ পরেই জমিরউদ্দিন আরো একবার ফোন দিয়ে বলেন আপনার মেয়ে মারা গেছে। এ কথা শুনে প্রায় পাগলপারা হয়ে
তাৎক্ষণিক ভাবে আমি ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা হই।
২৩ জানুয়ারী সকাল নাগাত আমি মিটফোর্ড হাসপাতালে এসে মেয়েকে আমি পাগলের মতো খুজতে থাকি। এমতাবস্থায় হাসপাতালের বারান্দায় আমার মেয়ের লাশ খুঁজে পাওয়া যায় কিন্তু লাশের পাশে আমার মেয়ের শশুর বাড়ির কাউকেই দেখতে পাননি।
মৃত কহিনুরের বাবা দাদন মিয়া আরও বলেন, আসামী ও হত্যাকারীদের বাঁচানোর জন্য ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও কদমতলী স্টীল মিলের সত্তা অধিকারী শিল্পপতি ও মোঃ সিরাজুল ইসলাম (সিরাজ) সাহেব জোরালো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং তার ছত্রছায়ায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে হত্যাকারীরা। যে কারণে পুলিশও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
পরবর্তীতে আমি ঘটনাস্থলে যেয়ে আমার মেয়ের ফ্ল্যাটের সাবলেট ভাড়াটিয়া নাসিমা বেগম ও তার স্বামী আলমগীর হোসেন এবং ভবনের তৃতীয় তলার বাসিন্দা আতাউর রহমান খোকনের নিকট ঘটনা বিষয়ে বিস্তারিত শুনিয়া আমাদের পরিবারের আত্মীয় স্বজনদের সাথে আলোচনা করে কদমতলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করি।
কহিনুরের বাবা মোঃ দাদন মিয়া সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমি জোর দিয়ে বলছি কহিনুর কে ওর শশুর বাড়ির লোকেরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে এবং তখন আমার মেয়ে ছয় মাসের অন্তঃসত্তা ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার আকুল আবেদন কহিনুরের হত্যাকারীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাই আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি প্রধান করা হোক।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মৃত হত্যাকাণ্ডের শিকার কহিনুরের বাবা মোঃ দাদন মিয়া, বড় ভাই নূর মোহাম্মদ স্বপন, বড় বোনের স্বামী মোহাম্মদ রুবেল ও ছোট বোনের স্বামী মোঃ মফিজুল।