জাতির সংবাদ ডটকম।।
দেশের শ্রমজীবী মানুষের জন্য আলাদা করে শ্রমিক বাজেট প্রণয়ন করার পরামর্শ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও শ্রমিক নেতা শাজাহান খান। এ সময় সুনির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অধীনে শ্রমিকদের বাজেট না দেওয়ারও দাবি জানান সাবেক এ মন্ত্রী।
শাজাহান খান বলেন, শ্রমিকদের বাজেট যেন একটা সুনির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অধীনে না হয়। পাশাপাশি শ্রমিকদের কাজকে সমন্বয় করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্মের কথা বলা হচ্ছিল, তা বাস্তবায়নের সময় এখন এসেছে। শ্রমিকদের জন্য যে মন্ত্রণালয়গুলো কাজ করে, তারা এই একটি প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে আলাপ বা সমন্বয় করে কাজ করবে। ট্রেড ইউনিয়নের পক্ষে কথা বলার কারণে অনেক সময় আক্রোশে পড়তে হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালে যখন ব্যাপক আকারে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিগুলোতে জ্বালাও-পোড়াও হচ্ছিল, তখন প্রধানমন্ত্রী আমার ওপর দায়িত্ব দিয়েছিলেন এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে শ্রমিক এবং মালিকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য। তখন মালিকদের সমস্যা ছিল, তারা বলেছিল ট্রেড ইউনিয়নের কারণে সমস্যা হচ্ছে। ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা গিয়ে নাকি গার্মেন্টস বন্ধ করাসহ আরও অনেক কিছু করে। আর শ্রমিকদের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়েছিল, মালিকরা তাদের জুট ব্যবসাসহ শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণ করতে কিছু গুন্ডাবাহিনী পালত। এগুলো বন্ধ করে শ্রমিক এবং মালিকদের মধ্যে একটা সুসম্পর্ক করা যায়। তবে প্রকৃত ট্রেড ইউনিয়ন যারা করে তারা কখনোই শিল্পের ক্ষতি চায় না। শ্রমিক ও মালিক দুই সত্তাকে রক্ষা করে চলতে পারলে শিল্পের সম্ভাবনা বাড়বে।
শাজাহান খান বলেন, শুধু গার্মেন্টস শিল্প নয়; প্রতিটি শিল্পই মালিক এবং শ্রমিক- এই দুই সত্তাকে রক্ষা করে চলতে হবে। গার্মেন্টস মালিকরা বলছে, অনেক শিল্প বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তবে যে শিল্পের মালিক শিল্প পরিচালনা করতে স্বচ্ছতা রক্ষা করে না, ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে সেই টাকা অন্য জায়গায় খাটায়। পাশাপাশি শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য যেমন বিভিন্ন সভা-সেমিনার হয়ে থাকে কিন্তু মালিকদের ক্ষেত্রে এরকম কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না, যেহেতু সব মালিক এক নয়। তাই মালিকদের সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়োজন আছে। মালিকদের সচেতন করার মাধ্যমে বর্তমানে যেসব সমস্যাগুলো হচ্ছে এগুলো পরবর্তীতে না হওয়ার সম্ভাবনা কম।
গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা বলেন, আসছে বাজেটে শ্রমিকদের জন্য আলাদা করে শ্রমিক বাজেট খাত তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি নির্বাচনের প্রতিশ্রুতিতে আওয়ামী লীগ সরকার শ্রমিকদের কল্যাণে যে প্রস্তাবগুলো করেছে, তা যেন এবারের বাজেটে বাস্তবায়ন করা হয়। শ্রম মন্ত্রণালয়, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বাজেট বরাদ্দ যেন না কমানো হয়।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাইলের সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিজিএমইএ সভাপতি এসএম মান্নান কচি, বিকেএমইএ নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিজিএমইএ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো নাসির উদ্দিন, সিপিডি গবেষণা পরিচালক ড. গোলাম মোয়াজ্জেম, বিলস নির্বাহী পরিচালক সুলতান উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।